Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

ভোটের কাজে আপত্তি, সরব অধ্যাপকেরা  

ভোটের কাজের প্রশিক্ষণে না-আসায় দু’দফায় শো-কজ করা হয়েছিল জেলার প্রায় ২৭০ জন ভোটকর্মীকে। এই সংখ্যক ভোটকর্মীকে রবিবার জেলায় এক প্রশাসনিক বোর্ডের সামনে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০১৯ ০১:১১
Share: Save:

জেলার কালেক্টরেটে এসে সরব হলেন বেশ কয়েকজন অধ্যাপক। তাঁদের দাবি, লোকসভা ভোটে পদমর্যাদা অনুযায়ী ডিউটি দেওয়া হয়নি। তুলনায় নিম্নস্তরের কর্মীদের অধীনে তাঁদের কাজ দেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসন অবশ্য এই দাবি মানতে নারাজ।

ভোটের কাজের প্রশিক্ষণে না-আসায় দু’দফায় শো-কজ করা হয়েছিল জেলার প্রায় ২৭০ জন ভোটকর্মীকে। এই সংখ্যক ভোটকর্মীকে রবিবার জেলায় এক প্রশাসনিক বোর্ডের সামনে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সূত্রের খবর, তাঁদের অনেকেই কলেজের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর। নির্দেশ পেয়ে এ দিন মেদিনীপুরে কালেক্টরেটে প্রশাসনিক বোর্ডের সামনে হাজির হয়েছিলেন ওই অধ্যাপকেরাও। বোর্ডে ছিলেন অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও ভূমি সংস্কার) উত্তম অধিকারী, অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) অরুন্ধতী ভৌমিক, জেলার পোর্লিং পার্সোনাল সেলের ওসি বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য প্রমুখ। সূত্রের খবর, বোর্ডের সামনেই কয়েকজন অধ্যাপক তাঁদের ডিউটি দেওয়া নিয়ে সরব হন।

অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও ভূমি সংস্কার) উত্তম অধিকারী মানছেন, ‘‘কয়েকজন এসে তাঁদের আপত্তির কথা জানিয়েছেন। আমরা সবদিক বুঝিয়ে বলেছি।’’ জেলা প্রশাসনের অন্য এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘নিয়ম অনুসারে ভোটকর্মীর পদে পদমর্যাদার ক্রম অবশ্যই মানা হয়। এ বারও হয়েছে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘ভোটটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তা পরিচালনা করার জন্য কর্মীর প্রয়োজন পড়ে।’’ অধ্যাপকদের একাংশের বক্তব্য, পদমর্যাদার চেয়ে যাতে কম গুরুত্বপূর্ণ পদে ভোটের ডিউটি দেওয়া না- হয়, তার ব্যবস্থা করতে হবে।

আগেই ‘গ্রুপ এ’ শিক্ষকদের ভোটের কাজে ব্যবহার করা যাবে না বলে দাবি তুলেছিলেন রাজ্যের অধ্যাপকদের একাংশ। ভোটপর্ব এগিয়ে আসতে তা নিয়ে সুরও চড়ান তাঁরা। তাঁদের বক্তব্য, পদমর্যাদার নীচের দিকে থাকা ব্যক্তি ভোটকর্মী হিসেবে বেশি পদমর্যাদার দায়িত্ব পেতে পারেন না। অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসরদের প্রায় সকলকেই প্রিসাইডিং অফিসার করা হয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, যাঁরা সেক্টর অথবা মাইক্রো অবর্জারভার হয়েছেন তাঁদের অনেকেরই পদমর্যাদা অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসরদের চেয়ে কম। তবে কমিশন সূত্রের মতে, প্রিসাইডিং অফিসার একটি ‘স্ট্যাটিউটরি’ পদ। সেক্টর অফিসারের মতো পদ ‘ম্যানেজেরিয়াল’ পদ। তাই দু’টিকে গুলিয়ে ফেলা ঠিক নয়। কোনও বুথে পুনরায় নির্বাচন হবে কি না, সে ক্ষেত্রে সর্বাধিক গুরুত্ব পায় প্রিসাইডিং অফিসারের রিপোর্টই।

গোয়ালতোড় কলেজের ১১ জন অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসরকে ভোটের কাজে নেওয়া হয়েছে। এঁদের মধ্যে একজন অরূপরতন চক্রবর্তী। অরূপরতন কলেজের ইংরেজি বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর। এ দিন মেদিনীপুরে প্রশাসনিক বোর্ডের সামনে হাজির হয়েছিলেন তিনিও। অরূপরতন বলেন, ‘‘শো- কজের উত্তর দিয়েছি। কেন প্রশিক্ষণে আসতে পারিনি তা জানিয়েছি।’’ ওই ১১ জন অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসরকে যাতে ভোটের কাজে না- নেওয়া হয়, সে ব্যাপারে কলেজের টিচার্স কাউন্সিলের পক্ষ থেকেও জেলা প্রশাসনের কাছে আর্জি জানানো হয়েছিল বলে কলেজেরই এক সূত্রে খবর। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক অবশ্য বলেন, ‘‘সব আর্জিতে সাড়া দেওয়া যায় না। আমরা কলেজের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসরদের ভোটের কাজে নিইনি। তবে অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসরদের নিয়েছি।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE