Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
ভোটের এক মাস আগেই হাওয়া গরম

তৃণমূল, বিজেপি সংঘাতে উত্তেজনা

২০১৬ পর্যন্ত এই এলাকাগুলিতে তৃণমূলের একচ্ছত্র আধিপত্য থাকলেও গত বছর পঞ্চায়েত ভোটে মাথা তুলেছে বিজেপি।

 জখম তৃণমূল কর্মী। নিজস্ব চিত্র

জখম তৃণমূল কর্মী। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা 
গড়বেতা ও গোয়ালতোড় শেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০১৯ ০০:০১
Share: Save:

ভোটের বাকি একমাস। তার আগেই তৃণমূল-বিজেপির অশান্তি ঘিরে উত্তেজনা ছড়াল গড়বেতা ও গোয়ালতোড়ে। বুধবার রাতে ও বৃহস্পতিবার সকালে দফায় দফায় গোলমাল চলে। কোথাও তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের মারধরে অভিযুক্ত গেরুয়া শিবির, কোথাও বিজেপির মিছিলে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে শাসকদলের বিরুদ্ধে।

যে যে এলাকায় গোলমাল হয়েছে, তার সবটাই গড়বেতা বিধানসভা ও ঝাড়গ্রাম এলাকার মধ্যে পড়ে। ২০১৬ পর্যন্ত এই এলাকাগুলিতে তৃণমূলের একচ্ছত্র আধিপত্য থাকলেও গত বছর পঞ্চায়েত ভোটে মাথা তুলেছে বিজেপি। বিশেষ করে গোয়ালতোড়ে একাধিক গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতিতেও পদ্ম ফুটেছে।

বৃহস্পতিবার গড়বেতায় গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান-সহ তৃণমূলের ৫ নেতা-কর্মীকে মারধরের অভিযোগ ওঠে বিজেপির বিরুদ্ধে। তৃণমূলের অভিযোগ, উপরদলদলি গ্রামে এ দিন সকাল ৯ টা নাগাদ বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা তৃণমূলের ৪ জনকে ঘিরে ধরে লাঠি, রড দিয়ে ব্যাপক মারধর করে। আক্রান্ত হন তৃণমূলের শ্যামনগর পঞ্চায়েতের প্রধান দেবদুলাল মণ্ডল, দলের শ্যামনগর অঞ্চল সভাপতি সুনীল ঘোষ, অঞ্চলের কার্যকরী সভাপতি তারকনাথ ভুঁইয়া ও তৃণমূল নেতা জহুর আলি শেখ। দলের কর্মীরাই জখমদের গড়বেতা গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করান। বুধবার রাতে আবার সন্ধিপুর অঞ্চলের বাছুয়া গ্রামের তৃণমূল কর্মী তরুণ রায়কে বিজেপি কর্মীরা রড, লাঠি দিয়ে মারধর করে বলে অভিযোগ। তাঁর মাথায় আঘাত লাগে। তাঁকে গড়বেতা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

তৃণমূলের গড়বেতা ১ ব্লক সভাপতি সেবাব্রত ঘোষের অভিযোগ, ‘‘বুধবার বিকেলে সন্ধিপুরে সভা করে বিজেপি। যেখানে সভা করার অনুমোদন ছিল, তার বদলে বিজেপি অন্যত্র সভা করায় আমরা অভিযোগ করি। এরপরই আমাদের কর্মী তরুণ ঘোষকে বিজেপির কর্মীরা মারধর করে।’’ এ দিন সকালে শ্যামনগর অঞ্চলের প্রধান, অঞ্চল সভাপতি-সহ ৪ জনকে বেধড়ক মারধর করে বলেও অভিযোগ তাঁর। বিজেপির জেলা সম্পাদক মদন রুইদাসের অবশ্য দাবি, ‘‘এর সঙ্গে বিজেপির সম্পর্ক নেই। গ্রামের মানুষকে হুমকি দিতে গেলে মহিলারাই প্রতিরোধ করেছেন।’’

গোলমালের খবর পেয়ে এলাকায় পৌঁছয় বিশাল পুলিশবাহিনী। আসেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শচীন মক্কর। সন্ধিপুরের ঘটনায় বুধবার রাতেই গ্রেফতার করা হয়েছে ৩ জনকে। আর এ দিন সকালের ঘটনায় একজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ। ধৃতেরা প্রত্যেকেই বিজেপি কর্মী বলে জেলা সম্পাদক জানান।

গোয়ালতোড়ের জগারডাঙায় আবার বিজেপির মিছিলে হামলার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। স্থানীয় মদনাপুরে বুধবার সন্ধ্যার এই ঘটনায় বিজেপির ৪ জন কর্মী জখম হন। তাঁদের রাতেই গোয়ালতোড়ের কেওয়াকোল গ্রামীণ হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামলায়। বিজেপির গোয়ালতোড় উত্তর মণ্ডলের সভাপতি উজ্জ্বল হাটুইয়ের অভিযোগ, ‘‘মদনাপুরে ঢোকার মুখে বোমা ফাটায় তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা। তারপর ইট-পাথর ছুড়ে হামলা হয়।’’ এতে মণ্ডলের যুবমোর্চার সাধারণ সম্পাদক তাপস লোহার, কালী লোহার-সহ দলের ৪ জন জখম হন। অভিযোগ উড়িয়ে তৃণমূলের গোয়ালতোড় ব্লক সভাপতি ভাস্কর চক্রবর্তী বলেন, ‘‘গ্রামে পবিত্রস্থানের সামনে তারস্বরে মাইক বাজিয়ে মিছিল করায় আপত্তি জানিয়েছিলেন বাসিন্দারা। এটা সম্পূর্ণ গ্রাম্য বিবাদ।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE