প্রতিবাদ: ইন্দায় পথ অবরোধ খড়্গপুর কলেজের ছাত্রছাত্রীদের। বৃহস্পতিবার। ছবি: দেবরাজ ঘোষ
কলেজের মানোন্নয়ন না করে কেন অতিরিক্ত ফি নেওয়া হচ্ছে, এই প্রশ্ন তুলে পথ অবরোধে শামিল হলেন পড়ুয়ারা।
তৃতীয় সেমেস্টারে বর্ধিত ফি প্রত্যাহারের দাবিতে বুধবার থেকে আন্দোলন শুরু করেছিলেন খড়্গপুর কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়াদের একাংশ। সুরাহা না মিললেও হঠাৎ করে সংগঠিত অবস্থান-ঘেরাও কর্মসূচি রাতে সাময়িক সময়ের জন্য প্রত্যাহার করে নেন তাঁরা। কলেজ কর্তৃপক্ষের দাবি, ভর্তির সময়ে অ্যাকাডেমিক যাবতীয় ফি জমা নেওয়ায় প্রথম বছরের দু’টি সেমেস্টারে তা যুক্ত হয়নি। কিন্তু দ্বিতীয় বর্ষে অ্যাকাডেমিক ফি-র সঙ্গে জুড়েছে তৃতীয় সেমেস্টারের পরীক্ষার ফি। এ জন্য ফি অতিরিক্ত বলে মনে করছে পড়ুয়ারা। যদিও পড়ুয়ারা এই যুক্তি মানতে নারাজ। তাঁদের প্রশ্ন, কলেজের মান্নোন্নয়ন না করে অতিরিক্ত ফি নেওয়া হচ্ছে কেন? বৃহস্পতিবার এ দাবিতে কলেজের অফিসঘরে তালা ঝুলিয়ে দেন পড়ুয়ারা। এর পরেই কলেজের কর্মীদের সঙ্গে ওই পড়ুয়াদের ধুন্ধুমার বেধে যায়। প্রতিবাদে খড়্গপুর কলেজের বাইরে ইন্দায় ওড়িশা ট্রাঙ্ক রোড অবরোধ করেন পড়ুয়ারা। দীর্ঘক্ষণ পথ অবরোধে দেখা যায় যানজট। ঘটনার খবর পেয়ে পৌঁছয় পুলিশ। সমস্যার সমাধানের আশ্বাসে পুলিশি হস্তক্ষেপে সাময়িক সময়ের জন্য অবরোধ প্রত্যাহার করে নেন পড়ুয়ারা। তবে দাবি পূরণ না হলে, ফের আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা। ফি বৃদ্ধি নিয়ে এই আন্দোলনকে সমর্থন করেছে এসএফআই।
গত বছর থেকে বিজ্ঞানের প্রতিটি বিষয়ের সাম্মানিক স্নাতকস্তরে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকা কলেজগুলিতে চালু হয় সেমেস্টার ব্যবস্থা। সেই অনুযায়ী খড়্গপুর কলেজেও এই ব্যবস্থায় প্রথম ও দ্বিতীয় সেমেস্টারে পরীক্ষা দিয়েছেন পড়ুয়ারা। এ বার তৃতীয় সেমেস্টারের পরীক্ষার ফি বাবদ বিভিন্ন বিষয়ে অতিরিক্ত টাকা দাবি করে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে কলেজে। তা নিয়েই তৈরি হয়েছে জটিলতা। পড়ুয়াদের অভিযোগ, ন্যাক ফি, প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন ফি, ল্যাবরেটরি ফি-সহ নানা খাতে টাকা নেওয়া হচ্ছে। পদার্থবিদ্যা বিভাগের শুভদীপ পাল, রসায়ন বিভাগের দিবাকর ঘড়াই বলেন, “আমাদের আন্দোলনের পরে পরীক্ষার ফি-র টাকা নানাভাবে ভেঙে কলেজ দেখাচ্ছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, যে কলেজের নতুন করে কোনও উন্নয়ন হচ্ছে না। ল্যাবরেটরিতে নতুন সরঞ্জাম নেই। ন্যাক আসছে পাঁচবছরে একবার তার জন্য কেন টাকা নিচ্ছে কলেজ?” যে সমস্ত পড়ুয়ার পাঠ্যক্রমে ল্যাবরেটরি নেই তাঁর থেকেও কেন ওই খাতে টাকা নেওয়া হচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। তৃতীয় সেমেস্টারের অর্থনীতি বিভাগের এক ছাত্রী বলেন, “আমাদের তো নন-ল্যাব বিষয়। এমনকি, আমাদের পাশ বিষয়ে ভূগোল থাকলেও সেটিরও এখনও পর্যন্ত ল্যাবরেটরি নেই। অথচ আমাদের থেকে প্রতি মাসে ১৫০ টাকা ল্যাবরেটরি ফি নেওয়া হচ্ছে।” এ বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ বিদ্যুৎকুমার সামন্ত বলেন, “পরিচালন সমিতির সিদ্ধান্ত ক্রমে ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। তাই কমানো সম্ভব নয়। তবে যাঁদের ল্যাবরেটরি নেই তাঁদের থেকে তো ওই টাকা নেওয়া হবে না বলেই জানিয়েছি আমরা। তার পরেও ওঁরা আমাদের অফিসঘরে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছিল। এটা ঠিক নয়।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy