সপরিবার: সিমেন্ট কারখানার উদ্বোধনে মা-স্ত্রী-পুত্র-পুত্রবধূর সঙ্গে হাজির সজ্জন জিন্দল। মধ্যমণি মুখ্যমন্ত্রী। সোমবার শালবনিতে। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল
জিন্দলদের ছোঁয়ায় ভোল বদলাবে সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল— এখন সেই আশাতেই শালবনি। সিমেন্ট কারখানা উদ্বোধনের এক দিন আগেই সজ্জন জিন্দলের পুত্র পার্থ জিন্দল জানিয়ে দিয়েছেন, শালবনির সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল পরিচালনার দায়িত্ব নেবে জিন্দল গোষ্ঠী। আর তাতেই আশায় বুক বাঁধছে শালবনি। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তাও মানছেন, “জিন্দলদের মতো শিল্পগোষ্ঠী হাসপাতালের দায়িত্ব নিলে নিশ্চিত ভাবে হাসপাতালের পরিকাঠামো আরও ঢেলে সাজবে। আরও পরিষেবা মিলবে।”
শালবনি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের দায়িত্বভার যে জিন্দলদের হাতে যাচ্ছে, সোমবার তা জানিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। জিন্দলদের সিমেন্ট কারখানার উদ্বোধন মঞ্চে মমতা বলেন, “শালবনি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল জিন্দল গোষ্ঠীই চালাবে। এখানে আরও ভাল স্বাস্থ্য পরিষেবা দেবে ওরা। আমি খুব খুশি।’’ জিন্দল গোষ্ঠীর কর্ণধার সজ্জন জিন্দলও বলেন, “শালবনিতে খুব ভাল সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল তৈরি হয়েছে। ওই হাসপাতাল এ বার আমরা চালাব। ভাল ডাক্তার-নার্স আনব। নিশ্চিত ভাবেই স্বাস্থ্য পরিষেবা ক্ষেত্রে শালবনি আরও এগোবে।”
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় একাধিক সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল গড়ে উঠেছে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই শুধু ঝাঁ চকচকে ভবনটাই রয়েছে। পরিকাঠামো কিংবা পরিষেবা সেই তিমিরে। শালবনির সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালও এর ব্যতিক্রম নয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই রোগীকে ‘রেফার’ করা হয় মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। শালবনির হাসপাতালে না রয়েছে ব্লাড ব্যাঙ্ক, না রয়েছে বার্ন ইউনিট। গত জুনে সর্পদষ্ট বছর বারোর এক কিশোরকে এই হাসপাতালে আনা হয়েছিল। চিকিৎসকেরা বুঝেছিলেন, ভেন্টিলেশন ছাড়া একে বাঁচানো সম্ভব নয়। কিন্তু শালবনিতে ভেন্টিলেশন কোথায়! সুপার স্পেশ্যালিটিতে ভেন্টিলেশন নেই, এটা রোগীর পরিজনেদের কাছেও বিস্ময়কর ঠেকেছিল! মেদিনীপুর মেডিক্যালে সিসিইউ-তে ভেন্টিলেশন রয়েছে। কিন্তু সেখানে একটি শয্যাও খালি নেই। শেষে কিশোরের প্রাণ বাঁচাতে শালবনি হাসপাতালেই ‘ম্যানুয়াল ভেন্টিলেশন’ তৈরি করা হয়। ধীরে ধীরে তাতে সাড়া দেয় ওই কিশোর। শালবনি হাসপাতালের এক চিকিত্সক মানছেন, “এখানে ভেন্টিলেশন তো দূর, পোর্টেবল ভেন্টিলেটরও নেই। পরিকাঠামোর অভাবে বেশ কিছু অত্যাধুনিক সরঞ্জাম অব্যবহৃত হয়ে পড়ে রয়েছে।’’
এমন পরিস্থিতিতে রোগীর পরিজনেদের আশা, জিন্দলরা দায়িত্ব নিলে এই সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের ভোল অনেকটাই বদলাবে। অনেকটা শহরের বড় বেসরকারি হাসপাতালের মতো হতে পারে। নতুন আরও কিছু সরঞ্জাম আসতে পারে। বেশ কিছু পরিকাঠামো গড়ে উঠতে পারে। তখন ঠিকমতো মিলবে। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তারও মত, “জিন্দলরা দায়িত্ব নিলে হয়তো আরও বেশ কিছু পরিকাঠামো গড়ে উঠবে। আক্ষরিক অর্থেই সুপার স্পেশ্যালিটি হবে শালবনি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy