মিশন নির্মল বাংলা-সহ একাধিক প্রকল্পে জেলায় কাজের অগ্রগতি আশানুরূপ নয়। পরিস্থিতি বদলাতে ছুটির দিনেও ব্লক পরিদর্শন শুরু করলেন প্রশাসনিক আধিকারিকেরা। শনিবার জেলার সবক’টি ব্লকে পরিদর্শন হয়েছে। জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনার নির্দেশেই এই পরিদর্শন।
জেলা প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, চলতি মাসের আরও এক শনিবার ব্লক পরিদর্শন হবে। কোন আধিকারিক কোন ব্লকে যাবেন, তাও ঠিক হয়েছে। সেই মতো এ দিন সবংয়ে যান খড়্গপুরের মহকুমাশাসক সঞ্জয় ভট্টাচার্য, গোপীবল্লভপুর-১এ যান ঝাড়গ্রামের মহকুমাশাসক নকুলচন্দ্র মাহাতো, চন্দ্রকোনা-২এ যান ঘাটালের মহকুমাশাসক পিনাকীরঞ্জন প্রধান, গড়বেতা-১এ যান মেদিনীপুরের মহকুমাশাসক দীননারায়ণ ঘোষ প্রমুখ।
জেলা প্রশাসনের এক সূত্রের দাবি, শুধু মিশন নির্মল বাংলা নয়, ব্লকে গিয়ে আধিকারিকেরা সমস্ত সরকারি প্রকল্পের কাজই খতিয়ে দেখছেন। একই বক্তব্য জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনার। তাঁর কথায়, “সমস্ত প্রকল্পের কাজই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” শনিবার অনান্য ব্লকেও জেলা থেকে একজন আধিকারিক গিয়েছেন। জেলা প্রশাসনের এক কর্তার দাবি, “এ রকম পরিদর্শন হলে কাজের গতি বাড়ে। কাজ এগোনোর ক্ষেত্রে স্থানীয়স্তরে কিছু সমস্যা থাকলে তারও সমাধান হয়।” জেলা থেকে যাওয়া আধিকারিকদের সঙ্গে ছিলেন সংশ্লিষ্ট ব্লকের বিডিও, সংশ্লিষ্ট গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান প্রমুখ।
মিশন নির্মল বাংলায় জেলায় কাজের অগ্রগতি আশানুরূপ নয়। ২০১৪ সালের অক্টোবরে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। ২০১২ সালের সমীক্ষা অনুযায়ী, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় মোট পরিবারের সংখ্যা ১১ লক্ষ ৪৬ হাজার ৬২২। এরমধ্যে শৌচাগারহীন পরিবারের সংখ্যা ৫ লক্ষ ৬১ হাজার ৮০৫! শুরুতে কয়েকটি করে গ্রাম পঞ্চায়েত ধরে শৌচাগার নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ২০১৪-১৫ আর্থিক বছরে ৬০টি গ্রাম পঞ্চায়েতকে বাছাই করা হয়। ৬০টি গ্রাম পঞ্চায়েতে শৌচাগার নির্মাণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯০৫২৩। ওই বছরে শৌচাগার নির্মাণ করা গিয়েছে মাত্র ২৪ হাজার ৪৪৩। পরের বছর অর্থাৎ ২০১৫-১৬ আর্থিক বছরে ৯৫টি গ্রাম পঞ্চায়েতে ১ লক্ষ ১৩ হাজার শৌচাগার নির্মাণের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়। ওই বছরে শৌচাগার ৭১ হাজার ৬২৩ নির্মাণ হয়। এই প্রকল্পের কাজ শেষ করতে হবে ২০১৯ সালের অক্টোবরের মধ্যে।
জেলা প্রশাসনের এক কর্তার অবশ্য দাবি, “গত তিন-চার মাসে প্রকল্পের কাজে গতি এসেছে। কমবেশি সর্বত্র কাজ ভাল ভাবে এগোচ্ছে!” কাজে গতি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রকল্পে নানা দুর্নীতির অভিযোগও উঠতে শুরু করে। অভিযোগ, সরকারি নির্দেশ অমান্য করেই নিম্নমানের ইট, সিমেন্ট ব্যবহার হচ্ছে শৌচাগার নির্মাণের ক্ষেত্রে। এমনকী পরিমাণেও কম দেওয়া হচ্ছে। ফলে সামান্য ঝড় বৃষ্টিতে তা ভেঙে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
মাস কয়েক আগে কড়সাতে এমনই একটি নির্মীয়মাণ শৌচাগার ভেঙে পড়ার ঘটনা ঘটে। জেলা প্রশাসনের এক সূত্রের দাবি, ব্লক পরিদর্শনে গিয়ে কাজের মানও দেখছেন আধিকারিকেরা। কোথাও কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতি নজরে এলেই ব্যাখ্যা তলব করছেন। জেলা থেকেও এ দিকে কড়া নজর রাখা হচ্ছে। জেলা প্রশাসনের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, “প্রকল্পে নিম্মমানের কাজ হচ্ছে বলে শুনিনি! অভিযোগই পাইনি! অভিযোগ এলেই উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” তাঁর আশ্বাস, “শৌচাগার নির্মাণের কাজ খতিয়ে দেখতে প্রয়োজনে আরও বেশি পরিদর্শন হবে!”
নালিশ। পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় গত দু’বছরে সরকারের বরাদ্দকৃত প্রকল্পগুলি রূপায়ণে ব্যর্থ হয়েছেন জেলার মৎস্য অধিকর্তা (নোনা জল)। কাঁথির সহ মৎস্য অধিকর্তা (নোনা জল) সোমনাথ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে জানিয়ে মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহের কাছে এমনই অভিযোগ জানিয়েছেন জেলা সভাধিপতি মধুরিমা মণ্ডল। মধুরিমাদেবীর অভিযোগ, ‘‘সোমনাথবাবুর কাজে জেলার মৎস্যচাষিদের অনেক ক্ষতি হয়ে গিয়েছে। দু’বছরে জেলায় মৎস্য দফতর ও রাজ্য সরকারের নোনাজলে বিভিন্ন বরাদ্দকৃত উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলি রূপায়ণে ব্যর্থ হয়েছেন।’’ জেতবে এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি সোমনাথবাবু।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy