দুর্গাচকে রাস্তা দখল করে দাঁড়িয়ে লরি।
হলদিয়া মহকুমা জুড়ে বেআইনি পার্কিংয়ের জেরে সমস্যায় সাধারণ মানুষ থেকে পুলিশ প্রশাসন। বারবার সতর্ক করা হলেও নির্বিকার গাড়ি চালকরা। ফলে মিটছে না সমস্যা। এর ফলে রাস্তায় জায়গা যেমন কমে যাচ্ছে তেমনই বাড়ছে পথ দুর্ঘটনা।
পুলিশ সূত্রে খবর, বেআইনিভাবে গাড়ি পার্কিং করলে ধরা হচ্ছে। কিন্তু তাতেও লাভ হচ্ছে না। প্রথমবার সতর্ক করা এবং তা না শুনলে গাড়ি আটক পর্যন্ত করা হচ্ছে। তারপরও বেআইনি গাড়ি পার্কিংয়ের সংখ্যা কমানো যায়নি। যত্রতত্র গাড়ি রেখে দিচ্ছেন অনেকেই। স্বাভাবিকভাবেই রাস্তায় চলাফেরার ক্ষেত্রে অসুবিধা হচ্ছে।
কিন্তু বেআইনি গাড়ি পার্কিংয়ের ক্ষেত্রে আইনটা কী?
মোটর ভেহিকেলস এর আইন অনুযায়ী বেআইনিভাবে গাড়ি পার্কিং করলে ১০০ টাকা জরিমানা করা যায়। ফলে এই টাকা জরিমানা দিয়েই দায় এড়াচ্ছেন গাড়ি চালকরা। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, কোনও কড়া শাস্তি না দিলে এই বেআইনি ব্যবস্থার হাল কিছুতেই ফেরানো সম্ভব নয়।
মাখনবাবুর বাজার মোড়ের বেহাল পার্কিং ব্যবস্থা।
ছবি: আরিফ ইকবাল খান।
হলদিয়া মহকুমা জুড়ে বেআইনি গাড়ি পার্কিংয়ের ছবিটা খুব একটা সন্তোষজনক নয়। ব্রজলালচক হাই রোড অর্থাৎ ৪১ নম্বর জাতীয় সড়কের যেখানে সেখানে বেআইনিভাবে গাড়ি পার্কিং করতে দেখা যায় অনেককেই। বি সি রায় হাসপাতালের সামনে বেআইনিভাবে গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকায় রোগী নিয়ে যাতায়াত করতে সমস্যা হয় রোগীর পরিজনদের। হলদিয়া পুরসভার আশেপাশে এবং সিটি সেন্টার এলাকায় বেআইনিভাবে গাড়ি পার্কিং করা থাকে। মঞ্জুশ্রী মোড়ের অবস্থাও একই। এখানেও বেআইনি গাড়ি পার্কিং রোজকার ঘটনা। দুর্গাচক, রানিচক, মাখনবাবুর বাজার, হলদিয়া টাউনশিপ এলাকায় বেআইনি গাড়ি পার্কিংয়ের ছবিটা একই। চৈতন্যপুর, সুতাহাটা এবং মহিষাদলের বিস্তীর্ণ এলাকায় বেআইনি গাড়ি পার্কিংয়ে বিপদ বাড়ছে সাধারণ মানুষের।
মঞ্জুশ্রীর বাসিন্দা দিব্যেন্দু ঘোষ বলেন, “এখানে বেআইনি গাড়ি পার্কিং নিত্যদিনের সমস্যা। নিজের বাড়িতে ঢুকতে গিয়ে দেখি, কে একজন গেটের মুখে গাড়ি দাঁড় করিয়ে চলে গিয়েছেন।” ব্রজলালচকের বাসিন্দা শিক্ষক মিহির দাস বলেন, “হাইরোডে বাস ধরতে খুব অসুবিধা হয়। কারণ আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে গাড়ি রাখা থাকে। ফলে যাত্রী ওঠানামায় প্রচণ্ড ঝুঁকি থেকে যায়।” বিসি রায় হাসপাতালে বৃদ্ধা বাবাকে নিয়ে এসেছিলেন ব্যবসায়ী সৌমেন মান্না। তাঁর তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা শোনান তিনি। তাঁর বক্তব্য, “চিকিৎসার জন্য বাবাকে নিয়ে হাসপাতালে এসে কী করে ভেতরে ঢুকব বুঝতে পারছিলাম না। মূল গেটের সামনে এই পরিবেশ থাকলে রোগীরা ঢুকবে কী করে?’’
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, “হলদিয়ায় এই সমস্যা রয়েছে। সমস্যাটি নিয়ে আমরাও উদ্বিগ্ন। কয়েকদিন আগে আমরা বৈঠকও করেছি। কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ বার সেগুলি কার্যকরী করা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy