অবক্ষয়: নিজের শিল্পকর্মের সঙ্গে দীপেন্দ্রকুমার দাশ। নিজস্ব চিত্র
মেলা চলছে। ইতিউতি ঘুরছেন মেলা দেখতে আসা লোকজন। কিন্তু ভিড় টেনে নিচ্ছে মেলায় হস্তশিল্পের প্রাঙ্গণ। বিশেষ ভাবে বলতে গেলে মেহগনি কাঠের শিল্পকর্ম ‘অবক্ষয়’। এক লক্ষ টাকা দামের এই শিল্পের চারপাশে রোজই ভিড় জমাচ্ছেন শিল্পপ্রেমীরা। পাশাপাশি নজর কেড়েছে একটি কৃষ্ণ মূর্তিও। যার দাম ৫০ হাজার। এ বার হলদিয়া মেলায় হস্তশিল্পের বিপুল সম্ভার নিয়ে হাজির রাজ্যের ২২টি জেলার দু’শোরও বেশি শিল্পী হাওড়ার থেকে আসা শিল্পী দীপেন্দ্র কুমার দাশ বলেন, ‘‘রাজ্যে নানা প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছে ‘অবক্ষয়’। সমাজে নানা অবক্ষয়ের মধ্যে বেঁচে থাকাটাই যে বিস্ময়, সেটাই আমার শিল্পকর্মে তুলে ধরতে চেয়েছি।’’ আলিপুরদুয়ার থেকে এসেছেন অসীম কর। অসীম বাঁশের গণ্ডার, হরিণ এনেছেন মেলায়। এক একটি গণ্ডারের দাম ১২ হাজার টাকা। তাঁর কথায়, ‘‘যে ভাবে গণ্ডারের সংখ্যা কমে যাচ্ছে তা উদ্বেগজনক। শিল্পের জন্যই শিল্প নয়, বন্য প্রাণের সঙ্গে সভ্যতার যে নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে শিল্পের মাধ্যমে সেটাই মানুষকে জানাতে চেষ্টা করেছি।’’ বর্ধমানের স্টলজুড়ে নানা ধরনের রঙিন কাঠের পেঁচা। বাঁকুড়ার স্টলে আবার ডোকরা শিল্প দেখতে ভিড়। তারই মাঝে নজর কাড়ছে ডোকরার দাবার বোর্ড।
জেলার সেরা পটচিত্র শিল্পীরাও হাজির মেলায়। টিয়া চিত্রকর জানান, নানাধরনের জামা কাপড়ের ওপর কাজ করছেন তাঁরা। আবার গান গেয়ে মেলায় খদ্দেরের আশায় ঘুরছেন সুকুমার চিত্রকর। তিনি জানান, মাটি নয় অ্যালুমিনিয়ামের নানা সরঞ্জামের ওপর মাছের বিয়ের ছবি আঁকছেন। মাছের বিয়ের গান শুনতে শুনতেই ভিড় বাড়ছে পটচিত্র শিল্পীদের স্টলে। দক্ষিণ দিনাজপুর থেকে সঞ্জীব বসু এনেছেন বাঁশের তৈরি মুখোশ, টেবল ল্যাম্প। বীরভূমের স্টলে রয়েছে কাঁথার কাজ। এ ছাড়া দুই মেদিনীপুরের মাদুরও রয়েছে মেলায়। রয়েছে পাটের শিল্পকর্ম।
মেলার দায়িত্বে থাকা শেফালি মাইতি বলেন, ‘‘মেলায় শিল্পীদের থেকে স্টলের জন্য কোনও টাকা নেওয়া হয়নি। তাঁদের থাকার জায়গাও দেওয়া হয়েছে। বিক্রিও ভাল হচ্ছে।’’ মেলার অন্যতম উদ্যোক্তা হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের সিইও বিভু গোয়েল বলেন, ‘‘এবার মেলার নবতম সংযোজন এই হস্তশিল্প মেলা। এর সঙ্গে স্বসহায়ক দলগুলিও যোগ দিয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy