Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪

ট্যাবলেটে না, স্কুলে সভা

স্বাস্থ্য দফতরের বক্তব্য, সচেতনতা বাড়াতে স্কুলে অভিভাবকদের নিয়ে সভা করতে হবে। রক্তাল্পতা কী, কেন এই কর্মসূচি, তা অভিভাবকদের ভাল ভাবে জানাতে হবে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৬:২০
Share: Save:

রক্তাল্পতা রোধে প্রাথমিকের পড়ুয়াদের আয়রন-ফলিক অ্যাসিড ট্যাবলেট খাওয়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। সেই মতো স্কুলে স্কুলে ট্যাবলেট খাওয়ানো শুরুও হয়েছে। যদিও অনেক স্কুলে অভিভাবকেরা বাচ্চাদের এই ওষুধ খাওয়াতে অনীহা দেখানোয় উদ্বিগ্ন স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা। স্বাস্থ্য দফতরের বক্তব্য, সচেতনতা বাড়াতে স্কুলে অভিভাবকদের নিয়ে সভা করতে হবে। রক্তাল্পতা কী, কেন এই কর্মসূচি, তা অভিভাবকদের ভাল ভাবে জানাতে হবে।

একাংশ পড়ুয়া যে ওই ট্যাবলেট খাচ্ছে না তা মানছেন পশ্চিম মেদিনীপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা। তিনি বলছেন, “কিছু এলাকায় এমন সমস্যা হয়েছে বলে শুনেছি। এটা অনভিপ্রেত। রক্তাল্পতার জেরে অনেক সমস্যা হয়। তা দূর করতেই এই কর্মসূচি।” তাঁর কথায়, “অভিভাবকদের নিয়ে সভা করার কথা স্কুলগুলোকে আগেই বলা হয়েছিল। অভিভাবকদের সচেতন করতে হবে। তা না হলে এই কর্মসূচি সফল হবে না। কিছু স্কুল এখনও অভিভাবকদের নিয়ে সভা করেনি বলে শুনেছি। দ্রুত ওই সভা করার কথা বলা হয়েছে।”

মেদিনীপুরের পালবাড়ি এলাকার বিদ্যাসাগর বিদ্যাভবন শিশুশিক্ষা কেন্দ্রের সহায়িকা শবনম বানুর কথায়, “যেদিন এই ট্যাবলেট দেওয়ার কথা সেদিন একাংশ পড়ুয়া কেন্দ্রেই আসে না। আমরা আগেও অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলেছি। এই কর্মসূচির ব্যাপারে বুঝিয়েছি। ফের কথা বলব।” রেউদি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অনির্বাণ চট্টোপাধ্যায় মানছেন, “অভিভাবকদের সচেতন করতেই হবে। না হলে এই কর্মসূচিতে সফল ভাবে এগোনো মুশকিল।”

রক্তাল্পতা রোধে প্রাথমিকেও আয়রন-ফলিক অ্যাসিড ট্যাবলেট দেওয়া শুরু হয়েছে গত সপ্তাহ থেকে। অনেক শিশু রক্তাল্পতায় ভোগে। তাই প্রাথমিক স্কুলের পড়ুয়াদের আয়রন ও ফলিক অ্যাসিড ট্যাবলেট খাওয়ানোর পরিকল্পনা। সপ্তাহে একদিন করে মিড ডে মিলের পরে ট্যাবলেট খাওয়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পাঁচ থেকে দশ বছর বয়সীদের এই ট্যাবলেট খাওয়ানো হবে। কর্মসূচির নাম দেওয়া হয়েছে, ‘জুনিয়র উইকলি আয়রন-ফলিক অ্যাসিড সাপ্লিমেন্টেশন’। আগে শুধুমাত্র হাইস্কুলেই এই ট্যাবলেট খাওয়ানো হত। এ বার হাইস্কুলের পাশাপাশি প্রাথমিকেও খাওয়ানো শুরু হল। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ানোর বিষয়ে আগেই শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। জেলার এক স্বাস্থ্যকর্তার কথায়, “রক্তাল্পতার জেরে শিশুদের মস্তিষ্কের বিকাশ কম হয়। তা ছাড়া স্কুলে এসে নেতিয়ে পড়া, স্কুলে মনোযোগ দেওয়া নিয়েও সমস্যা হয়। এ সব দূর করতেই প্রাথমিকের পড়ুয়াদের ট্যাবলেট দেওয়া হচ্ছে।”

শিশুদের যে খালি পেটে এই ট্যাবলেট খাওয়ানো যাবে না তাও স্কুলগুলোকে জানিয়ে দিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। জেলার এক স্বাস্থ্যকর্তা বলেন, “স্কুলগুলোয় মিড ডে মিলের পরে সপ্তাহে একদিন পড়ুয়াদের এই ট্যাবলেট খাওয়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শিশুদের অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলার কথাও জানানো হয়েছে। অভিভাবকদের বুঝিয়েই এই কর্মসূচির কাজ করতে হবে।” তাঁর মতে, “এই কর্মসূচির ক্ষেত্রে তাড়াহুড়ো করা উচিত নয়।”

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE