Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪

সমাবর্তনে ছক ভাঙা আচার্য

কথার ফাঁকে ছাত্রছাত্রীদের ‘বন্ধু’ সম্বোধন করলেন। তা শুনে হাততালি দিয়ে উঠলেন পড়ুয়ারা। রবিবার বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তন শেষে সকলেই একবাক্যে মানছেন, দেখে মনে হল, রাজ্যপাল নিরহঙ্কার, সহজ, সরল মানুষ।

বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজ্যপাল। নিজস্ব চিত্র

বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজ্যপাল। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০০:০২
Share: Save:

বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনের মঞ্চ। সেই মঞ্চে রাজ্যপাল নিজে উঠে চেয়ার সরালেন! দেখে অবাক অধ্যাপকেরা।

কথার ফাঁকে ছাত্রছাত্রীদের ‘বন্ধু’ সম্বোধন করলেন। তা শুনে হাততালি দিয়ে উঠলেন পড়ুয়ারা। রবিবার বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তন শেষে সকলেই একবাক্যে মানছেন, দেখে মনে হল, রাজ্যপাল নিরহঙ্কার, সহজ, সরল মানুষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রঞ্জন চক্রবর্তীও বলছিলেন, ‘‘উনি খোলা মনের মানুষ। খুবই সাধারণ।’’

বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাকক্ষেই ২১তম সমাবর্তনের আয়োজন ছিল। সেখানেই এসেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য, রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য, ইতিহাসবিদ রজতকান্ত রায়। অধ্যাপক অশোক সেন এবং অধ্যাপক শান্তনু ভট্টাচার্যকে এ দিন ডিএসসি দেওয়া হয়েছে। মঞ্চের এক দিকে একই সারিতে বসেছিলেন আচার্য, উপাচার্য, প্রধান অতিথি এবং ওই দুই অধ্যাপক। প্রথমে ছিলেন উপাচার্য, তাঁর বাঁ দিকে আচার্য, আচার্যের পাশে প্রধান অতিথি ও তাঁর পাশে দুই অধ্যাপক।

প্রধান অতিথি রজতকান্তবাবু বক্তৃতা দিতে যাওয়ার আগে নিজের চেয়ার সরিয়ে পোডিয়ামের কাছে যাচ্ছিলেন। তখন কিছুটা সমস্যা হয়। দুই চেয়ারের মধ্যে যেটুকু জায়গা রয়েছে, সেখান দিয়ে বেরনো সহজ নয় বুঝে উঠে দাঁড়িয়ে নিজের চেয়ারটা সরিয়ে নেন রাজ্যপাল। রজতকান্তবাবু পোডিয়ামের কাছে চলে যাওয়ার পরে ফের নিজের চেয়ার টেনে আগের জায়গায় বসেন রাজ্যপাল।

এ দিন শুরু থেকেই যেন ছকভাঙা পথে এগিয়েছেন রাজ্যপাল। বরণপর্বের শুরুতে রাজ্যপালের হাতে পুষ্পস্তবক তুলে দেওয়া হয়। তাঁর নিরাপত্তারক্ষী পরে রাজ্যপালের হাত থেকে সেই পুষ্পস্তবক নিয়ে নেন। রজতকান্তবাবুকেও পুষ্পস্তবক দিয়ে বরণ করা হয়। পুষ্পস্তবক কোথায় রাখবেন, সামনের টেবিলে, না অন্য কোথাও তা ঠিক করতে পারছিলেন না ইতিহাসবিদ। পরিস্থিতি বুঝে রাজ্যপাল হাত বাড়িয়ে তাঁর হাত থেকে পুষ্পস্তবক নিয়ে নিরাপত্তারক্ষীকে দিয়ে দেন। রাজ্যপালের এই ভূমিকায় মুগ্ধ হন রজতকান্তবাবুও।

সমাবর্তন শেষে আবার মঞ্চেই উপাচার্য রঞ্জন চক্রবর্তীকে কাছে ডেকে নেন রাজ্যপাল। রঞ্জনবাবুর স্ত্রী এসেছেন কি না জানতে চান। উপাচার্য জানান, তাঁর স্ত্রী নীচে চেয়ারে বসে রয়েছেন। স্ত্রীকে ডাকতে বলেন রাজ্যপাল। শুনে রঞ্জনবাবুর স্ত্রী সোমা চক্রবর্তী মঞ্চের কাছে যান। মঞ্চে দাঁড়িয়েই সোমাদেবীর সঙ্গে কথা বলেন রাজ্যপাল। পরে যখন সভাকক্ষ ছেড়ে রাজ্যপাল অতিথিনিবাসে যাচ্ছেন, তখন উপাচার্যকে নিজের গাড়িতে তুলে নেন রাজ্যপাল। উপাচার্য মানছেন, ‘‘আমার স্ত্রী এসেছেন কি না, উনি নিজেই জানতে চেয়েছিলেন। পরে আমার স্ত্রীর সঙ্গে কথাও বলেছেন।’’

এ দিন উপাচার্যের হাত থেকে পিএইচডির শংসাপত্র নিয়েছেন অন্তরা ঘোষ। চাঁদড়া হাইস্কুলের শিক্ষিকা অন্তরা বলছিলেন, ‘‘নিজেই চেয়ার সরালেন। অতিথির হাত থেকে পুষ্পস্তবক নিয়ে রাখার ব্যবস্থা করলেন। দেখে মনে হল, এত উঁচুতে উঠে গিয়েও উনি মাটির কাছাকাছি রয়েছেন।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Jagdeep Dhankhar Governor Vidyasagar University
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy