আসানসোল স্টেশনের ট্যাক্সি স্ট্যান্ড। —নিজস্ব চিত্র।
রেলের উদ্যোগে আসানসোল স্টেশন চত্বরে ট্যাক্সি স্ট্যান্ড তৈরি হয়েছিল। সেটি তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সরব হয়েছেন রেলযাত্রী থেকে ট্যাক্সি চালকেরা। বিষয়টি নিয়ে প্রায় নিত্যদিনই রেলের সঙ্গে বিবাদে জড়াচ্ছেন ট্যাক্সি চালকেরা। এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে বুধবারও স্টেশন চত্বরে দীর্ঘক্ষণ বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন ট্যাক্সি চালকেরা। তবে রেলের দাবি, যাত্রী পরিষেবা স্বাভাবিক রাখতে স্টেশন চত্বরে ‘যাত্রিসাথী’র বুথ করে দেওয়া হয়েছে।
পূর্ব রেলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন ধরা হয় আসানসোলকে। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিদিন এই স্টেশনে প্রায় ১৯২ জোড়া যাত্রিবাহী ট্রেন থামে। এর মধ্যে রাজধানী, শতাব্দী, দূরন্ত, বন্দে ভারত-সহ ১০২টি মেল, এক্সপ্রেস ও সুপারফাস্ট ট্রেন যাতায়াত করে। ৫০টি সুবার্বান প্যাসেঞ্জার ও ৪০টির মতো বিশেষ ট্রেন থামে। প্রতিদিন লক্ষাধিক মানুষের যাতায়াত রয়েছে। আসানসোল স্টেশনে নেমে যাত্রীরা রানিগঞ্জ, দুর্গাপুর, কুলটি বার্নপুর চিত্তরঞ্জন, রূপনারায়ণপুর, ঝাড়খণ্ডের চিরকুণ্ডা, জামতাড়া-সহ বীরভূম, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে যাতায়াত করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, যাত্রীদের কথা ভেবে প্রায় ৫০ বছর আগে স্টেশন চত্বরে একটি ট্যাক্সি স্ট্যান্ড বানানো হয়েছিল। যাত্রীদের দাবি, স্ট্যান্ডটি তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্তে সমস্যায় পড়েছেন তাঁরা। কারণ, সেখান থেকে আর দূর-দূরান্তে যাওয়ার ট্যাক্সি পাওয়া যাচ্ছে না। চিত্তরঞ্জন রেল শহরের বাসিন্দা, রেলকর্মী প্রতাপ কর বলেন, “হাওড়া থেকে বন্দে ভারতে আসানসোল স্টেশনে নেমে এখন ট্যাক্সি ধরতে পারছি না। প্রায় দেড় কিলোমিটার পথ রিকশায় গিয়ে বাজারের স্ট্যান্ড থেকে ট্যাক্সি ধরতে হচ্ছে।” মিঠানির বাসিন্দা অপর্ণা চট্টোপাধ্যায়ের ক্ষোভ, “আগে রাতের ট্রেনে কলকাতা থেকে ফিরে স্টেশন চত্বর থেকেই ট্যাক্সি ধরে বাড়ি ফিরতে পারতাম। সেই সুবিধা এখন গিয়েছে।”
রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ওই ট্যাক্সি স্ট্যান্ডটি রেলের জমি। সেটি একটি বেসরকারি সংস্থাকে লিজ়ে দেওয়া হয়েছে। তবে রেলের তরফে জানানো হয়েছে, স্ট্যান্ড চত্বরে একটি ‘যাত্রিসাথী’ বুথ করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষের দাবি, যাত্রীরা সেখানে গিয়ে ট্যাক্সি চাইলেই কর্মীরা ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন। কিন্তু গভীর রাতে সেই বুথ থেকে কোনও পরিষেবা মিলছে না বলে অভিযোগ যাত্রীদের। অভিযোগ প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করেননি রেল কর্তৃপক্ষ।
বুধবার স্টেশন চত্বরে দেখা গেল, ট্যাক্সি স্ট্যান্ডটিকে বাঁশ দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে। মোতায়েন রয়েছে আরপিএফ। রেলের এই সিদ্ধান্ত আসলে পশ্চিমবঙ্গবাসীর সঙ্গে বঞ্চনা বলে অভিযোগ তৃণমূলের জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর। তিনি বলেন, “স্টেশন চত্বর থেকে ট্যাক্সি ধরেন যাত্রীরা। তাই এই পরিষেবার ব্যবস্থা করা রেলের দায়িত্ব। কেন্দ্রের বিজেপির নেতৃত্বাধীন সরকারের নীতি হল পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে বঞ্চনা করা। এ ক্ষেত্রেও ওরা সেটাই করছে।” এই অভিযোগ অস্বীকার করে বিজেপির রাজ্য সম্পাদক তথা আসানসোল দক্ষিণের বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল বলেন, “রেলযাত্রীদের কথা ভেবে এই সিদ্ধান্ত। রাজ্যবাসীর কথা ভেবে ওদেরও উদ্যোগী হওয়া উচিত।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy