অভিযোগ শুনছেন বিধায়ক। সর্বমঙ্গলা মন্দির পাড়ায়। —নিজস্ব চিত্র
তোলাবাজির টাকা ফেরাতে দলের নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর তোলার টাকা ফেরত চেয়ে জেলায় জেলায় বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। এ বার সরাসরি তোলা নেওয়ায় অভিযুক্ত কয়েকজনের নাম লেখা চিরকুট পেলেন গড়বেতার বিধায়ক আশিস চক্রবর্তী। ঘটনার কথা মেনে বিধায়কের আশ্বাস, অভিযোগ প্রমাণিত বলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গড়বেতার সর্বমঙ্গলা মন্দির পাড়ায় উন্নয়নের কাজ খতিয়ে দেখতে গিয়েছিলেন গড়বেতার তৃণমূল বিধায়ক। বুধবার বিকেলে সেখানেই কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা এসে গোপনে তাঁর হাতে একটি কাগজ দিয়ে যান। সেটি পড়ে দেখে দলের স্থানীয় নেতৃত্বকে পুরো বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখার নির্দেশ দেন তিনি। তিনি বলেন, ‘‘আমি ওই পাড়ায় নিকাশি নালা সংক্রান্ত উন্নয়নের কাজ খতিয়ে দেখতে গিয়েছিলাম। সেখানে স্থানীয় কয়েকজন আমাকে কাটমানির কথা জানান। ৭-৮ জনের নাম পেয়েছি। সেখানে কেউ ১০ হাজার, কেউ ২০ হাজার করে টাকা নিয়েছেন বলে অভিযোগ। এ নিয়ে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
এক সময়ে সিপিএমের গড় গড়বেতায় পরিবর্তনের পরে প্রভাব বাড়িয়েছিল তৃণমূল। তবে সদ্য সমাপ্ত লোকসভা ভোটে এই বিধানসভা থেকে ‘লিড’ পেয়েছে বিজেপি। ভোটের দিনেও তৃণমূল নেতারা গড়বেতা থেকে ‘লিড’ আসার ব্যাপারে প্রায় নিশ্চিত ছিলেন। গড়বেতায় দলের সমর্থন কমার ইঙ্গিত পেয়ে এখানে এসেছেন পশ্চিম মেদিনীপুরে তৃণমূলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা শুভেন্দু অধিকারী। ভোটের পরে তৃণমূলের বিভিন্ন বৈঠকে গড়বেতায় হারের পর্যালোচনায় অল্প সময়ে কিছু নেতা- কর্মীর অস্বাভাবিক সম্পত্তি বৃদ্ধি উঠে আসে। অনেক তৃণমূল কর্মী অভিযোগ করেন, সরকারি প্রকল্প পেতে হলে তাঁদেরও কাটমানি দিতে হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর তোলাবাজি সংক্রান্ত বক্তব্যের পরে বিধায়ককে সামনে পেয়ে অভিযোগ জানানোর সুযোগ ছাড়েননি স্থানীয় বাসিন্দারা। চিরকুট দেওয়া ছাড়াও বিভিন্ন বিষয়ে নিজেদের ক্ষোভ উগরে দেন স্থানীয় বাসিন্দারা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনেকেই জানান, নেতাদের সামনে প্রকাশ্যে কাটমানি নিয়ে অভিযোগ করা যায় না। তাই কে কোন খাতে কত টাকা কাটমানি নিয়েছেন সেটা কাগজে লিখে বিধায়কের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
কাটমানি নিয়ে একের পর এক অভিযোগ আসার পরে নড়েচড়ে বসেছে তৃণমূলও। গড়বেতার বিধায়ক জানিয়েছেন, শুধু যেখানে চিরকুট পেয়েছেন সেই জায়গাতেই নয়, গোটা গড়বেতাতেই তোলাবাজি বন্ধ করতে চান তিনি। তাঁর আশ্বাস, যে কোনও সরকারি প্রকল্পে ১০ লক্ষ টাকার উপরে কোনও কাজ হলে সেই প্রকল্পে স্থানীয় উপভোক্তা কমিটি গড়ে দেওয়া হবে। তারাই সেই কাজ দেখভাল করবে।
যদিও এই নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না বিরোধীরাও। গড়বেতার বাসিন্দা তথা বিজেপির জেলা সহ সভাপতি প্রদীপ লোধার দাবি, ‘‘গড়বেতা এলাকায় তৃণমূলের একটাই কাজ ছিল। সেটা হল কাটমানি খাওয়া। তার দায় বিধায়কও এড়াতে পারেন না। কাটমানির ফল তো ভুগতেই হবে।’’ গড়বেতার সিপিএম নেতা দিবাকর ভুঁইয়া বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী তো ওদের দলের মুখোশটা খুলে ফেলেছেন। আমরা তো বরাবর বলছি তৃণমূলের সংস্কৃতিটা এরকমই। গড়বেতাও তার ব্যতিক্রম নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy