গত বিধানসভা ভোটে তমলুক কেন্দ্রে হারের জন্য শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকে দলের গোষ্ঠী কোন্দল যে দায়ী তা কার্যত মেনে নিয়েছিলেন তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব। ফলে তমলুক লোকসভা কেন্দ্রে উপ-নির্বাচনের আগে জেলায় দলীয় কোন্দল সামাল দিতে নিজেই উদ্যোগী হয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। ব্লক তৃণমূল নেতাদের যুযুধান শিবিরকে একসঙ্গে নিয়ে একাধিক বৈঠক করেছেন তিনি। দলীয় পদ বণ্টনে ভারসাম্য বজায় রাখার প্রয়াসও নেওয়া হয়েছে। কিন্তু এত কিছুর পরও সংশয় কাটছে না শাসক শিবিরের। তাই এ বার তমলুক লোকসভা উপ-নির্বাচনে অধিকারী পরিবারের দিব্যেন্দুকে প্রার্থী করা হলেও শুধু শুভেন্দুর উপর ভরসায় রাজি নন নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আর সে জন্য ভোটের সময় তমলুকের শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের দলীয় কোন্দল সামলে সব শিবিরকে মাঠে নামানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পাশের জেলা হাওড়ার চার বিধায়ক-সহ একাধিক নেতাকে।
জানা গিয়েছে, শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকে প্রাক্তন সভাপতি দিবাকর জানা ও যুব সভাপতি জয়দেব বর্মনের অনুগামী স্থানীয় নেতাদের নিয়ে আলোচনার জন্য হাওড়া জেলার চার বিধায়ক পুলক রায়, গুলশন মল্লিক, সমীর পাঁজা ও অরুণাভ সেনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। দলের রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশ মেনে ওই চার বিধায়ক বুধবার এসেছিলেন তমলুকেও। নোনাকুড়ি বাজারের শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস অফিসে ব্লকের দুই শিবিরের স্থানীয় নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেন। বিকেল সাড়ে পাঁচটা থেকে বৈঠক চলে দু’ঘণ্টা। বৈঠকে ব্লকের ১০ টি পঞ্চায়েত এলাকার মোট ১৭৭টি বুথে বিধানসভা ভোটের ফলাফল পর্যালোচনা করে সমস্যাবহুল এলাকা চিহ্নিত করা হয়।
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে তৃণমূল প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী এই ব্লকে প্রায় ১৪ হাজার ৭০০ ভোটে এগিয়ে ছিলেন। কিন্তু এ বার বিধানসভা ভোটে প্রায় ৮ হাজার ভোটে পিছিয়ে যায় তৃণমূল। ফলে তমলুক বিধানসভায় তৃণমূল প্রার্থী নির্বেদ রায়ের হার হয়। দলের ব্লক নেতাদের গোষ্ঠী কোন্দলের জেরেই এখানের ফলাফলকে দায়ী করা হয়। তাই এ বার লোকসভা উপ-নির্বাচনে যুযুধান দুই শিবিরকে একসঙ্গে মাঠে নামিয়ে দলীয় ঐক্য তুলে ধরে ভোটের প্রচারে নামাতে মরিয়া তৃণমূল নেতৃত্ব।
অধীর চৌধুরীর গড় ভেঙে তৃণমূলের পাল্লা ভারী করতে দলের পর্যবেক্ষক করে শুভেন্দু অধিকারীকে পাঠানো হয়েছিল মুর্শিদাবাদে। নিজের জেলায় খাসতালুক সামলানোর পাশাপাশি মুর্শিদাবাদেও একের পর এক পুরসভা ও পঞ্চায়েতের দখল নিয়ে সাংগঠনিক দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন শুভেন্দু। কিন্তু গত বিধানসভা ভোটে নিজের লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে থাকা হলদিয়া, তমলুক, পূর্ব পাঁশকুড়া বিধানসভায় বামেদের কাছে হার হয়েছে তৃণমূলের। ফলে দলনেত্রীর নির্দেশ মেনে নন্দীগ্রাম বিধানসভায় দাঁড়িয়ে বিশাল ব্যবধানে জয়ের পরও তিন বিধানসভা আসনে হার অস্বস্তিতে ফেলেছিল শুভেন্দু-সহ শাসক শিবিরকে। তাই তমলুক লোকসভা আসনে উপ-নির্বাচনে সেই হারানো জমি পুনরুদ্ধারে আর কোনও ফাঁক রাখতে চাইছে না শাসকদল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy