কাজ চলছে চিড়িয়াখানায়। দেবরাজ ঘোষের তোলা ছবি।
শীতের আমেজ এসে গিয়েছে। এই সময় খুদেদের নিয়ে চিড়িয়াখানায় ঢুঁ মারার ছবিটা খুব চেনা। অথচ এই সময়েই মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প ‘জঙ্গলমহল জুলজিক্যাল পার্কটি পুরোদস্তুর চালু করা যায়নি। ফলে, বেশ কিছু বন্যপ্রাণী দেখার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন পর্যটকরা।
রাজ্যে ক্ষমতার পালা বদলের পরে ২০১২-১৩ অর্থবর্ষে ঝাড়গ্রাম মিনি চিড়িয়াখানাটির সম্প্রসারণ করা হয়। ২৩ হেক্টর এলাকা জুড়ে জুলজিক্যাল পার্ক করা হবে বলে সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়। চিড়িয়াখানাটির ‘জঙ্গলমহল জুলজিক্যাল পার্ক’ নামকরণ করেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অর্থ বরাদ্দ করে মাস্টার প্ল্যান অনুযায়ী চিড়িয়াখানার নতুন প্রবেশ পথ ও নতুন টিকিট ঘর তৈরি করা হয়। যদিও এখনও নতুন টিকিট ঘরে বিদ্যুৎ সংযোগ আসেনি। চালু হয়নি নতুন প্রবেশ পথ। এ ছাড়া ১২৪টি চিতল হরিণের জন্য নতুন এনক্লোজার, ৮টি বার্কিং ডিয়ার বা স্বর্ণ মৃগের নতুন এনক্লোজার, ১৮টি নীলগাইয়ের নতুন এনক্লোজার তৈরি হয়েছে। চিড়িয়াখানার নতুন প্রবেশ পথটি এখনও চালু না-হওয়ায় এগুলি কিছুই দেখতে পাচ্ছেন না দর্শকরা।
গত ফেব্রুয়ারিতে নয়াগ্রামের এক সরকারি অনুষ্ঠানে জঙ্গলমহল জুলজিক্যাল পার্কের জন্য একগুচ্ছ প্রকল্পের শিলান্যাস করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগে মিনি চিড়িয়াখানাটি ছিল ঝাড়গ্রাম বন বিভাগের ধবনী বিটের অধীনে। বর্তমানে চিড়িয়াখানাটির সম্প্রসারণ হচ্ছে ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট জু-অথরিটির তত্ত্বাবধানে। পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদ ও স্টেট জু-অথরিটি প্রথম পর্যায়ে মোট ৫ কোটি ৩৭ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করে। কিন্তু সেই সব প্রকল্পের কাজও চলছে ঢিমেতালে। চিড়িয়াখানার ভিতরে হাঁটার জন্য রাস্তা তৈরির কাজ অনেক বাকি। লেপার্ডের এনক্লোজার হলেও গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলির (পশু হাসপাতাল, মাঙ্কি রেসকিউ সেন্টার, হাতির পিল খানা, পাখিরালয় ) কাজ চলছে অত্যন্ত ধীর গতিতে। এখনও চিড়িয়াখানার প্রশাসনিক ভবন ও কর্মী আবাসন তৈরির কাজ শুরু হয়নি। ধবনী বিট অফিস ও বনকর্মীদের আবাসনগুলিকে চিড়িয়াখানা থেকে আলাদা করার জন্য আগেভাগে একটি বিভাজিকা-পাঁচিল তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। ফলে পাঁচিলে আড়াল হয়ে গিয়েছে হাতি, গোসাপ, সজারু, ককটেল, বাজপাখি, শকুন, এমুপাখি প্রভৃতি নানা প্রাণী ও পাখি। টিকিট কেটে ঢুকে এসব দেখতে না পেয়ে মেজাজ হারাচ্ছেন দর্শকরা। তারকেশ্বর থেকে চিড়িয়াখানা দেখতে আসা স্নিগ্ধা জানা, বীণাপাণি জানাদের আক্ষেপ, “মাথা পিছু ২০ টাকার টিকিট নেওয়া হচ্ছে। অথচ অনেক কিছুই দেখতে পেলাম না।”
প্রতিটি জুলজিক্যাল পার্কের জন্য এক জন অধিকর্তা থাকেন। জঙ্গলমহল জুলজিক্যাল পার্কের জন্য এখনও আলাদা কোনও অধিকর্তা নিয়োগ করা হয়নি। ঝাড়গ্রামের ডিএফও বাসবরাজ হোলেইচ্চি চিড়িয়াখানার অধিকর্তার বাড়তি দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। চিড়িয়াখানার ভারপ্রাপ্ত অধিকর্তা তথা ঝাড়গ্রামের ডিএফও বাসবরাজ হোলেইচ্চি বলেন, “জানুয়ারির মধ্যে পুরোদস্তুর চিড়িয়াখানাটি চালু করে দেওয়ার
চেষ্টা হচ্ছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy