লক্ষ্মীপুজোর আগের দিন হাতির তাণ্ডবে মাথায় হাত চাষিদের। সোমবার রাত থেকেই কেশিয়াড়ির একাধিক গ্রামে তাণ্ডব চালায় দামালের দল। ক্ষতি হয় বেশ কয়েক বিঘা জমির ফসল।
বেশ কয়েক দিন ধরেই ছোট-ছোট দলে ভাগ হয়ে ঝাড়গ্রাম, মেদিনীপুর, কলাইকুণ্ডা এলাকায় ঘুরছে হাতির দল। সম্প্রতি এই দাঁতালের দল লোধাশুলির জঙ্গলে আশ্রয় নিয়েছে। পুজোর সময় ক্ষতি এড়াতে হাতিগুলিকে শঙ্করবনির জঙ্গলে সরিয়ে নিয়ে যান বনকর্মীরা। পুজো মিটতেই ওই এলাকায় ফসলের ক্ষতি রুখতে গ্রামবাসীরা হাতিগুলিকে তাড়া করে। তার পরেই কলাইকুণ্ডার বাড়ডাঙা থেকে সাঁকরাইল হয়ে কেশিয়াড়ি পৌঁছয় হাতির দলটি। গ্রামবাসীরা জানতে পেরে নিজেরাই রাতে হাতি তাড়ানোর উদ্যোগী হন। খবর দেওয়া হয় বন দফতরে।
সকাল দশটা নাগাদ খাজরা বন দফতরের একটি দল এলাকায় আসে। হিজলি রেঞ্জের খাজরা বিট অফিসার টুটু বাওয়ালি বলেন, ‘‘বেশ ক্ষতি করেছে হাতিগুলি। দিনের বেলায় হাতি তাড়াতে সমস্যা আছে। রাতের দিকেই হাতিগুলিকে অন্যত্র সরিয়ে দেওয়া হবে। আর যাতে কারও ক্ষতি না হয় সে বিষয়ে দেখা হবে। ক্ষতিপূরণের তালিকা তৈরি
করা হচ্ছে।’’
সোমবার রাতে কলাইকুণ্ডার দিক থেকে জঠিয়া হয়ে সাঁকরাইল পেরিয়ে কেশিয়াড়ির ঘৃতগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের বড়ামারা গ্রামের মাঠে দাপিয়ে বেড়ায় প্রায় ২২-২৪টি হাতির দল। ভোরে হাতির দলটি আশ্রয় নেয় কেশিয়াড়ির খাজরার কাছে পচাখালির জঙ্গলে। বন দফতর সূত্রে খবর, তাড়া খেয়ে ভুল পথে চলে এসেছে হাতিগুলি। ভেঙেছে ঝাড়েশ্বর সিংহ নামে স্থানীয় এক বাসিন্দার বাড়ির কিছুটা অংশ। ক্ষতি করেছে কয়েকটি ফলের বাগানের। পাশের গ্রাম সাকলোবনিতেও তাণ্ডব চালিয়েছে ওই হাতির দলটি। দলে তিনটি বাচ্চা হাতি আছে বলেই জানা গিয়েছে।
ধান জমিতে তাণ্ডব চালিয়ে মঙ্গলবার ভোরে হাতির দল বড়ামারা জঙ্গলে ঢোকে। স্থানীয় বাসিন্দা বিনোদ দাস হঠাৎ বাড়ির সামনে শব্দ শুনতে পান। ঘুম থেকে উঠে দেখেন কয়েকটি হাতি বাগানের কলা গাছ ভাঙছে। পড়িমরি করে ছুট লাগান বাড়ির বাইরে। চিৎকার করে সবাইকে খবর দেন। ভোরে সাইকেলে করে সালুয়া যাচ্ছিলেন তিন ব্যবসায়ী পচাখালির বাসিন্দা খোকন শীট, নিত্যানন্দ শীট ও রবীন্দ্র জানা। হঠাৎ জঙ্গলের রাস্তায় হাতির সামনে পড়ে যান তিনি। সাইকেল ছেড়ে কোনক্রমে প্রাণে বাঁচেন তাঁরা।
খড়্গপুরের ডিএফও অরূপ মুখোপাধ্যায় বলেন, “পুজোর সময়ে হাতিগুলিকে নির্দিষ্ট এলাকায় রেখেছিলাম। তবে প্রায় ২৫টি হাতি লোধাশুলির জঙ্গল থেকে বেরিয়ে কেশিয়াড়ি গিয়েছে। দিনে হাতিগুলি সরালে আরও ক্ষতি হবে। তাই রাতে হুলাপার্টি গিয়ে হাতিগুলি সরাবে। সরকারি নিয়ম মেনে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy