তখন সন্ধ্যা ৬টা ৩৩। তিনতলার ঘরে টিভি দেখছিলেন পলি পাহাড়ি। আচমকাই চেয়ারটা দুলে ওঠে। দ্রুত ঘর ছাড়েন তিনি। মঙ্গলবার নারায়ণগড়ের এক স্কুলের শিক্ষিকা পলি বলছিলেন, “এর আগেও মেদিনীপুরে ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। সেই সময় আমিও কম্পন টের পেয়েছি। তবে এ বার কম্পনের মাত্রা অনেক বেশিই ছিল।”
শুধু মেদিনীপুর শহর নয়, দুই মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামের প্রায় প্রতিটি এলাকায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। কোথাও কম্পন তিন-চার সেকেন্ড স্থায়ী ছিল, কোথাও বা পাঁচ-ছ’সেকেন্ড। কয়েক সেকেন্ডের হেরফেরেই কম্পন অনুভূত হয়েছে এক-এক জায়গায়। গড়বেতা, খড়্গপুর, বেলদা, ঘাটাল থেকে তমলুক, হলদিয়া, কাঁথি, এগরা সর্বত্র। ভূমিকম্পের জেরে অবশ্য বড় কোনও ক্ষয়ক্ষতির কোনও খবর নেই।
বেলদাতে ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। বুঝতে পেরেই ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন লোকজন। প্রায় পাঁচ সেকেন্ড স্থায়ী ছিল কম্পন। আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এলাকার মানুষ। সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টার পরপরই কাঁথিতে ভূমিকম্প অনুভূত হয়। শহরের বহু বাড়ির লোকজন রাস্তায় বেরিয়ে আসেন। কম্পনের জেরে চাঞ্চল্য ছড়ায়। কাঁথির আঠিলাগড়ির এক বাসিন্দার কথায়, “বাড়িতে টেবিলে বসে কাজ করছিলাম। হঠাৎ টেবিল নড়ে ওঠে। ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। পাশাপাশি লোকেদের চিত্কার শুনে বুঝলাম ভূমিকম্প হয়েছে।”
হলদিয়া টাউনশিপ এলাকায় ভূমিকম্প অনুভূত হয়। এগরাতেও তাই। কিছু সময়ের জন্য কম্পন অনুভূত হয়েছে। কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানে দু’বার কেঁপে ওঠে মেদিনীপুর। সেই আতঙ্কেই রাস্তায় নেমে পড়েন লোকজন। মেদিনীপুরে শহরের বড়বাজারের বাসিন্দা মলয় রায়ের কথায়, “ওই রকম শব্দের সঙ্গে এমন কম্পন মেদিনীপুরে আগে টের পাইনি। শুরুতে মনে করেছিলাম, অনেক দূরে কোথাও হয়তো কিছু ফেটে গিয়েছে। এটা তারই শব্দ। বা আশেপাশে কোনও দুর্ঘটনা ঘটেছে।”
সন্ধ্যায় ওই সময় কালেক্টরেটে নিজের দফতরে ছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক পি মোহনগাঁধী। কম্পন টের পেয়ে তিনিও দফতর থেকে বাইরে বেরিয়ে আসেন। বাইরে আসেন কালেক্টরেটের অন্য আধিকারিক-কর্মীরাও। মুহূর্তে শোরগোল পড়ে। জেলাশাসক পি মোহনগাঁধী বলেন, “কম্পনে কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy