ঘাটালের শ্রীপুরে একটি পুজোর থিম ‘ডেঙ্গির মশা’। ডেঙ্গি রোধে হবে প্রচারও। — নিজস্ব চিত্র।
মহিষাসুরকে বধ করেছেন দশভূজা। কিন্তু ডেঙ্গি-অসুর নিধন করবে কে— উত্তর হাতড়াচ্ছেন জেলার স্বাস্থ্য-কর্তারা!
পশ্চিম মেদিনীপুরে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা এখনও পর্যন্ত ৫১০। এই মরসুমে এটা সরকারি হিসেবে। বেসরকারি মতে আক্রান্ত হাজার ছাড়িয়েছে। সরকারি ভাবে এই মরসুমে জেলায় ডেঙ্গিতে কারও মৃত্যুও হয়নি। তবে বেসরকারি হিসেব বলছে, ডেঙ্গিতে মারা গিয়েছেন ৩ জন। এঁদের মধ্যে কেউ কলকাতায় এসে অথবা জেলার বাইরে থেকে ফিরে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। বৃহস্পতিবারও ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন কয়েকজন। পরিস্থিতি দেখে পুজোতেও সচেতনতামূলক প্রচার চালানোর উপর জোর দিচ্ছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। ইতিমধ্যে এ নিয়ে তোড়জোড় শুরু হয়েছে। শহর-গ্রামের বড় পুজো মণ্ডপগুলোর সামনে সচেতনতামূলক ফেস্টুন রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, পুজো দেখতে আসা দর্শকদের লিফলেট দেওয়া হবে। তাতে থাকবে মশাবাহিত রোগ এড়াতে কী করা উচিত, আর কী উচিত নয়, সেই তালিকা। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, ‘‘ডেঙ্গি প্রতিরোধে পুজোতেও সচেতনতামূলক প্রচার চলবে। বিভিন্ন পুজো মণ্ডপে ফেস্টুন থাকবে। লিফলেটও দেওয়া হবে।’’
এই জেলারই ঘাটালে এ বার একটি পুজো মণ্ডপের থিম করা হয়েছে ডেঙ্গি। মশার আদলে তৈরি হয়েছে মণ্ডপ। সেখানেও মারণ এই রোগ প্রতিরোধের বার্তা দিচ্ছেন উদ্যোক্তারা। উদ্যোক্তাদের ডাকে সাড়া দিয়ে আজ, শুক্রবার এই পুজো মণ্ডপে যাবেন মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক, উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকরা। আসলে দুর্গাপুজোর মণ্ডপ হল জনসংযোগের ক্ষেত্র। আর সেই সুযোগ হাতছাড়া করতে নারাজ স্বাস্থ্য দফতর। মশাবাহিত রোগের নোডাল অফিসার তথা জেলার উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রবীন্দ্রনাথ প্রধান বলেন, ‘‘যে করেই হোক ডেঙ্গি রুখতে হবে। তাই পুজোর ক’দিনও মানুষকে সচেতন করা হবে। আমরা চাই মানুষ পুজো দেখুন, ডেঙ্গি নিয়েও সচেতন হোক।’’
পুজো মণ্ডপের সামনে রাখা ফেস্টুন কিংবা বিলি করা লিফলেট ঠিক কী জানানো হবে? জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক সূত্রে খবর, তাতে থাকবে ডেঙ্গি রোধে সতর্কবার্তা। যেমন, মশারি টাঙিয়ে ঘুমোন, জল জমতে দেবেন না, জ্বর হলেই রক্ত পরীক্ষা করান ইত্যাদি। জঙ্গলমহলের এই জেলায় আগে বেলপাহাড়ির মতো একটি-দু’টি এলাকায় মশাবাহী মারণ রোগের প্রকোপ দেখা দিত। এখন অবশ্য ডেঙ্গির মতো অসুখ গ্রাম ছাড়িয়ে ছড়াচ্ছে শহরেও। এ বার গড়বেতা-৩, দাসপুর, ঘাটাল, শালবনি থেকে দাঁতন, বেলদা— কমবেশি সর্বত্রই ডেঙ্গির প্রভাব রয়েছে। সেই ডেঙ্গি নিধনযজ্ঞে পুজো মণ্ডপে প্রচার কতটা সহায়ক হয়, সেটাই দেখার!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy