Advertisement
২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
Coronavirus

করোনা আক্রান্ত আরও ছয়

কেশপুরের ক্ষেত্রে যেমন মুম্বই যোগ রয়েছে, দাসপুরের ক্ষেত্রে সে যোগ দিল্লির।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কেশপুর ও ঘাটাল শেষ আপডেট: ২২ মে ২০২০ ০৩:৪১
Share: Save:

পশ্চিম মেদিনীপুরে এক ধাক্কায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ল ছয়। কেশপুর ও দাসপুরে তিনজন করে সংক্রমিত হয়েছেন। জেলায় এখন মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হল ২৭।

কেশপুরে যে তিনজন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন তাঁরা প্রত্যেকেই পরিযায়ী শ্রমিক। আর দাসপুরের ক্ষেত্রে আক্রান্তেরা ফিরেছেন দিল্লি থেকে। তাঁরা সোনার কারিগর এবং তাঁদের পরিবারের সদস্য।

জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, কেশপুরের তিন আক্রান্ত যুবকের মধ্যে একজন কেশপুরের কাকতার বাসিন্দা, বয়স ২৭। তিনি মুম্বইয়ে জরির কাজ করতেন। আরেকজন রাউতার বাসিন্দা, বয়স ২৬। তিনিও মুম্বইয়ে জরির কাজ করতেন। অন্যজন মোহবনির বাসিন্দা, বয়স ১৮। তিনি মুম্বইয়ে দর্জির কাজ করতেন। লকডাউনে কেশপুরের বেশ কয়েকজন পরিযায়ী শ্রমিক মুম্বইয়ে আটকে ছিলেন। এঁদের মধ্যে এই শ্রমিকেরাও ছিলেন। পরে ওই তিনজন সহ কয়েকজন বিশেষ ট্রেনে মুম্বই থেকে ফেরেন। গত ১৮ মে তাঁরা কেশপুরে পৌঁছন। শুরুতে খড়্গপুরে আসেন। সেখান থেকে কেশপুরে। মুম্বই ফেরত সূত্রে ওই পরিযায়ীদের করোনা পরীক্ষার জন্য লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। মেদিনীপুরের লেভেল- ১ করোনা হাসপাতালে তাঁদের লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। নমুনা পাঠানো হয়েছিল মেদিনীপুর মেডিক্যালে। বুধবার রাতে নমুনা পরীক্ষা হয়। ওই তিনজনের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। বৃহস্পতিবার রিপোর্ট পেয়েছে জেলার স্বাস্থ্যভবন। এরপরই তড়িঘড়ি ওই তিন করোনা আক্রান্তকে পাঁশকুড়ার করোনা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আক্রান্তদের প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ সংস্পর্শে কারা এসেছেন তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

কেশপুরের ক্ষেত্রে যেমন মুম্বই যোগ রয়েছে, দাসপুরের ক্ষেত্রে সে যোগ দিল্লির। সেখানকার গাঁধীনগরে পাশাপাশি থাকত দাসপুরের সোনার কারিগর দু’টি পরিবার। গত ১৫ মে দিল্লি থেকে স্পেশাল ট্রেনে ওই পরিবারের আটজন সদস্য খড়্গপুরে ফিরেছিলেন। সেখানে তাঁদের লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। একটি গাড়ি ভাড়া করে তাঁরা ফিরেছিলেন দাসপুর। বৃহস্পতিবার ওই দুই পরিবারের তিনজনের করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে। একটি পরিবারের দেওর ও তাঁর বৌদি এবং অন্য পরিবারের এক মহিলা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁরা ভর্তি পাঁশকুড়ার বড়মা হাসপাতালে। ওই দুই পরিবারের বাকি পাঁচজনেরও করোনা পরীক্ষা হয়েছিল। তাঁদের রিপোর্ট অবশ্য নেগেটিভ এসেছে। যদিও ওই পাঁচজনের নতুন করে দাসপুর গ্রামীণ হাসপাতালে লালরসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।

পুলিশ সূত্রের খবর, দিল্লি ফেরত এই দুই স্বর্ণশিল্পীর পরিবার নিজেদের বাড়িতে কোয়রান্টিনে ছিলেন। তবে বাড়িতে থাকলেও বাড়ির অন্য সদস্যদের সঙ্গে মেলামেশা করতেন। দুই বাড়িতে আরও ১৫-১৬ জন সদস্য রয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে,ওই তিন জনের সরাসরি সংস্পর্শে আর কারা কারা ছিলেন, তা চিহ্নিত করা হয়েছে। যাঁরা দিল্লি থেকে ফিরেছিলেন তাঁরা ঘরের বাইরে না গেলেও দুই পরিবারের অন্য সদস্যেরা কিন্তু বাজারে গিয়েছিলেন। ওই দুই বাড়ির লাগোয়া বাড়িগুলিতেও অনেকের যাতায়াত ছিল। পুলিশ সংশ্লিষ্ট সকলকে চিহ্নিত করার কাজ শুরু করেছে। এ দিন দাসপুরের ওই গ্রামে পৌঁছয় পুলিশ ও স্বাস্থ্য দফতরের টিম। সিল করে দেওয়া হয় পুরো এলাকা। ঘাটাল থেকে দমকলের কর্মীরা গিয়ে জীবাণুনাশক স্প্রে করেন। দু’টি বাড়িকে আলাদা ভাবে বাঁশের ব্যারিকেড দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়।

বুধবারই মেদিনীপুর গ্রামীণের মহাতাবনগরে এক করোনা আক্রান্তের হদিশ মিলেছে। ওই যুবকও ছিলেন মুম্বই ফেরত। কেশপুর ও দাসপুরের ক্ষেত্রেও মিলল ভিন্ রাজ্য যোগ। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরার অবশ্য দাবি, ‘‘উদ্বেগের কিছু নেই। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE