মহিলা চালকের হাতে গাড়ির চাবি (প্রতীকি) তুলে দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। নিজস্ব চিত্র
দিঘা, মন্দারমণি, তাজপুর এবং তমলুক, মহিষাদল, হলদিয়ার মতো পর্যটন কেন্দ্রে ভ্রমণের জন্য জেলায় চালু হল ‘পিঙ্ক ক্যাব’ গাড়ি পরিষেবা। মহিলারাই চালাবেন ওই গাড়ি।
বুধবার বাজকুলের প্রশাসনিক সভামঞ্চ থেকে এই পরিষেবার উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন মঞ্চেই মুখ্যমন্ত্রী সাতজন মহিলা চালকের হাতে ‘পিঙ্ক ক্যাব’-এর চাবি তুলে দেন। পরিষেবার উদ্বোধন করে দৃশ্যতই খুশি মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আজকে আমার সবচেয়ে ভাল লাগছে এই ভেবে যে, এই গাড়িগুলি মেয়েরা চালাবে। গোলাপি পোশাক করে মেয়েরা গাড়ি চালাবে ঠিক যে ভাবে ছেলেরা নীল-সাদা গাড়ি চালায়। আত্মমর্যাদা ও স্বনির্ভরতার প্রতীক হবেন এই মেয়েরা।’’
মুখ্যমন্ত্রীর হাত থেকে ‘পিঙ্ক ক্যাব’-এর চাবি পেয়ে খুশি কোলাঘাটের সুপর্ণা দে, দিঘার সোনালি দাস, কাঁথির সুমনি মাইতি, ভগবানপুরের পপিতা রায়ও। এঁদের প্রত্যেককেই গাড়ি চালানোর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। সুপর্ণা বলেন, ‘‘ছেলেরা সবসময় গাড়ি চালায়। তা হলে আমরাই বা পারব না কেন! আশাকরি ভালভাবেই এই পরিষেবা চলবে।’’
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, দিঘা, মন্দারমণি-সহ জেলার অন্যান্য জনপ্রিয় ও দর্শনীয় স্থানগুলি গাড়িতে ঘুরে দেখার জন্য বহু পর্যটক আসেন। সে দিকে লক্ষ্য রেখেই পর্যটনকেন্দ্রগুলিতে গাড়ি চালানোর মাধ্যমে স্বসহায়ক গোষ্ঠীর সদস্যদের স্বনির্ভর করে তোলার পরিকল্পনা নেয় জেলা প্রশাসন। ন্যূনতম মাধ্যমিক পাশ এমন ৫০ জনকে দু’মাস ধরে ট্যাক্সি চালানোর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মহিলাদের স্বামী বিবেকানন্দ স্বনির্ভর প্রকল্পে গাড়ি কেনার জন্য ব্যাঙ্ক ঋণ দেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে। জেলার পর্যটনকেন্দ্রগুলি ঘুরিয়ে দেখানোর জন্য এই পরিষেবার নাম দেওয়া হয়েছে ‘পিঙ্ক ক্যাব’। গোলাপি পোশাক পরা মহিলা চালক ও গাড়িতে গোলাপি রঙের জন্য এই নামকরণ বলে প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে।
জেলার স্বসহায়ক গোষ্ঠীর অফিসার ও ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট অমলেন্দু সমাদ্দার বলেন, ‘‘গাড়ির ভাড়া প্রতি কিলোমিটারে ১৮ থেকে ২০ টাকার মধ্যে থাকবে। দিঘা, মন্দারমণি, কাঁথিকে নিয়ে একটি এবং তমলুক রাজবাড়ি, মহিষাদল রাজবাড়ি ও হলদিয়াকে নিয়ে আরেকটি সার্কিট ট্যুরের ব্যবস্থা হয়েছে। চলতি মাস থেকেই এই পরিষেবা পুরোপুরি চালু হয়ে যাবে।’’
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গাড়িতে চালক-সহ ৫ জনের বসার ব্যবস্থা রয়েছে। মহিলা চালকদের নিরাপত্তায় বিশেষ ব্যবস্থা হিসাবে গাড়িতে থাকছে ‘অ্যাপ’ নির্ভর জিপিএস ট্র্যাকিং সিস্টেম। গাড়ির ভিতরে কোনও যাত্রী খারাপ আচরণ বা আক্রমণ করার চেষ্টা করলেই চালক লাল বোতাম টিপলে স্থানীয় থানার ওসি এবং চালকের দুই নিকটাত্মীয়ের কাছে মোবাইলে মেসেজ চলে যাবে। পুলিশ ওই গাড়ির অবস্থান বুঝে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy