বাড়ির রান্নাঘর সংলগ্ন ঘরে মাথা থ্যাঁতলানো অবস্থায় পড়ে যুবতীর দেহ। বাড়ির বাইরে গাছে তাঁর স্বামীর দেহ ঝুলছে। বুধবার সাতসকালে এমনই ঘটনা ঘটেছে সবংয়ে।
এ দিন সকালে সবংয়ের বুড়াল গ্রাম পঞ্চায়েতের বাহারকুণ্ডরা গ্রামে পুলিশ ভানুপদ বর্মন (৪২) ও তাঁর স্ত্রী কল্যাণী বর্মনের (৩৫) মৃতদেহ উদ্ধার করে। বাবা-মাকে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন ছেলে সিদ্ধার্থ। খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ওয়াই রঘুবংশী বলেন, “কী কারণে এই ঘটনা ঘটেছে তা স্পষ্ট নয়। মহিলাকে খুন করা হয়েছে এটা নিশ্চিত। কিন্তু তাঁর স্বামীকে কেউ খুন করেছে না আত্মঘাতী হয়েছেন সেটা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলে বোঝা যাবে।”
ভানুপদ-কল্যাণীর ছেলে সিদ্ধার্থ কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়া ও মেয়ে সুজাতা একাদশ শ্রেণিতে পড়ে। পরিবার সূত্রের খবর, মঙ্গলবার রাতে খাওয়াদাওয়ার পরে ছেলে-মেয়েরা ঘরে চলে যায়।
ভানুপদ ও কল্যাণী শুয়ে পড়েন অন্য ঘরে। এ দিন সকালে রান্নাঘরের পাশে একটি ঘরে মায়ের কাঁথা চাপা দেওয়া রক্তাক্ত দেহ পড়ে থাকতে দেখে ছেলেমেয়ে।
সিদ্ধার্থ খুনের অভিযোগ করলেও সুজাতার কথায়, “ বাবা-মা খুন হয়নি। আমাদের মনে হচ্ছে মাকে মেরে বাবা আত্মঘাতী হয়েছে। দাদা কেন এমন অভিযোগ করেছে তা-ও জানি না। ওঁদের কোনও অশান্তি হয়নি। আমাদের সব শেষ হয়ে গেল।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ভানুপদ কর্মসূত্রে মহারাষ্ট্রে থাকেন। শ্বশুরবাড়িতে ছেলেমেয়ের সঙ্গে থাকতেন কল্যাণী। দিন আটেক আগে ভানুপদের ভাই আকাশ পারিবারিক অশান্তিতে বিষ খেয়ে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। ভাইয়ের অসুস্থতার খবর শুনে গত শুক্রবার মহারাষ্ট্র থেকে আসেন ভানুপদ। স্থানীয়দের দাবি, গত কয়েক বছর ধরেই ভানুপদ মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন।
এ বারও বাড়িতে এসে চুপচাপ ছিলেন তিনি। পড়শি লক্ষ্মী বর্মন বলেন, ‘‘ভানুপদের আচরণ স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু অনেকে বলত ওঁর মানসিক সমস্যা রয়েছে। গত চার বছর আগেও তো একবার কল্যাণীর মুখ ধারাল কিছু দিয়ে কেটে দিয়েছিল। তার পরে কিন্তু সম্পর্ক ভাল হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু কী হল বুঝতে পারছি না।”
স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ইদানীং সুসম্পর্ক ছিল বলেই দাবি করেছে সকলে। তাহলে কেন স্ত্রীকে খুন করে আত্মঘাতী হবেন ভানুপদ? এই প্রশ্ন ঘিরেই রহস্য দানা বেঁধেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy