রাতে বন্ধ হাসপাতালের প্যাথোলজি বিভাগ। নিজস্ব চিত্র
কর্মী নেই। তাই ঘাটাল সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের প্যাথোলজি বিভাগে রাতের পরিষেবা বন্ধ করে দিলেন কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া নানা অজুহাতে দিনেও প্যাথোলজি বিভাগে আসা রোগীদের রক্তের রিপোর্ট বাইরে থেকে করিয়ে আনার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ।
জেলা স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে খবর, বছর দেড়েক আগেই ঘাটাল সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের প্যাথোলজি বিভাগ চব্বিশ ঘণ্টার জন্য খোলা রাখার নির্দেশ দিয়েছিল স্বাস্থ্য ভবন। নির্দেশ আসার পরেই ঘাটাল হাসপাতালে প্যাথোলজি বিভাগে রাতেও পরিষেবা দেওয়া শুরু হয়েছিল। তখন রাতে কোনও রোগীর রক্তের রিপোর্ট করানোর প্রয়োজন পড়লে হাসপাতাল থেকেই সেই সুবিধা মিলত।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিদিন বহিবির্ভাগে গড়ে সাতশো-আটশো রোগী বিভিন্ন বিভাগে চিকিৎসার জন্য আসেন। চিকিৎসকেরা এদের সিংহভাগ রোগীদের প্রয়োজনে রক্তের নানা পরীক্ষা করানোর নির্দেশ দেন। এ ছাড়াও হাসপাতালের অন্তবির্ভাগে গড়ে আড়াইশো থেকে তিনশো রোগী ভর্তি থাকেন। হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীদেরও নানা রিপোর্ট করতে হয়।
রোগী ও রোগীর পরিজনেদর অভিযোগ, ঘাটাল হাসপাতালে বেসরকারি প্যাথোলজি ক্লিনিকের কর্মীরা সকাল থেকে রাত ঘুরে বেড়ায়। নানা অজুহাত দিয়ে হাসপাতালের কর্মীরাও রক্তের বিভিন্ন রিপোর্ট বাইরে থেকে করানোর নির্দেশ দেয়। ঘাটালে এই ছবি দীর্ঘদিনের।
বছর দেড়েক আগে স্বাস্থ্য ভবনের পদস্থ আধিকারিকরা হাসপাতাল পরিদর্শনে এসে রোগীদের কাছে এমন অভিযোগ পেয়ে প্যাথোলজি বিভাগ ঢেলে সাজানোর নির্দেশ দেয়। আধুনিক যন্ত্রপাতিও আসে। যাতে রোগীদের বাইরের প্যাথোলজির উপর ভরসা করতে না হয়। চব্বিশ ঘণ্টার জন্য পরিষেবা দেওয়াও চালু হয়। কিন্তু ফের কর্মী সঙ্কটে শিকেয় উঠেছে সংশ্লিষ্ট বিভাগের পরিষেবা।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, স্বাস্থ্য ভবন ঘাটাল সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ছ’জন টেকনিসিয়ানকে অন্যত্র বদলি করে দেয়। আগে ঘাটাল হাসপাতালে আট জন টেকনিসিয়ান ছিলেন। বদলির পর সংখ্যাটা কমে দাঁড়ায় দুই-এ।
কয়েকমাস আগেই আরও দু’জনকে অস্থায়ী ভাবে ঘাটালে নিয়োগ করা হয়। এখন চার জন টেকনিসিয়ান রয়েছেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, পর্যাপ্ত কর্মী না থাকায় ওই সংখ্যক কর্মী দিয়ে প্যাথোলজির মতো গুরুত্বপূর্ণ বিভাগে ২৪ ঘণ্টা পরিষেবা দেওয়া সম্ভব নয়।
প্যাথোলজি বিভাগে রাতে পরিষেবা দেওয়া বন্ধ হওয়ায় সমস্যায় পড়েছেন রোগী ও তাঁর পরিজনেরা। ঘাটালের বিনয় মণ্ডল বললেন, “আমার মা হাসপাতালে ভর্তি। ডাক্তারবাবু সন্ধ্যায় রাউন্ডে এসে সোডিয়াম, পটাসিয়াম পরীক্ষা করানোর কথা বলেছিলেন। মাকে রেখেই বাইরে ছুটতে হয়েছিল।”
সমস্যার কথা স্বীকার করেছেন হাসপাতালের সুপার কুণাল মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “কর্মীর সমস্যা। টেকনিসিয়ানও পর্যাপ্ত নয়। তাই রাতে ওই বিভাগ বন্ধ থাকে।” যদিও কুণালবাবুর দাবি, “সকাল-সন্ধ্যায় স্বাভাবিক পরিষেবা চালু আছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy