Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
জেলা হাসপাতালে বহাল পুরনো হাজিরা খাতাই

ধুলো জমছে বায়োমেট্রিকে

আসি যাই মাইনে পাই-এই কর্ম-সংস্কৃতি পাল্টাতে আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্য নেওয়া শুরু হয়েছিল কয়েক বছর আগে। হাজিরা খাতার বদলে বায়োমেট্রিক যন্ত্র ব্যবহারের পদ্ধতি চালু করা হয়েছিল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা হাসপাতালে।

ধুলোমাখা: এভাবেই পড়ে রয়েছে আধুনিক যন্ত্র। নিজস্ব চিত্র

ধুলোমাখা: এভাবেই পড়ে রয়েছে আধুনিক যন্ত্র। নিজস্ব চিত্র

আনন্দ মণ্ডল
তমলুক শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০১৭ ০০:০০
Share: Save:

আসি যাই মাইনে পাই-এই কর্ম-সংস্কৃতি পাল্টাতে আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্য নেওয়া শুরু হয়েছিল কয়েক বছর আগে। হাজিরা খাতার বদলে বায়োমেট্রিক যন্ত্র ব্যবহারের পদ্ধতি চালু করা হয়েছিল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা হাসপাতালে।

কিন্তু সেই নতুন পদ্ধতিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে জোর দেওয়া হয়েছে হাজিরা খাতাকেই। আর ধুলোর চাদরে ঢাকা পড়েছে হাসপাতালের জরুরি বিভাগ সংলগ্ন দু’টি বায়োমেট্রিক যন্ত্র। ফলে বায়োমেট্রিক যন্ত্র বসানোর কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন হাসপাতালের আধিকারিক ও স্বাস্থ্য কর্মীদের একাংশ।

জেলা হাসপাতাল সুপার গোপাল দাসের অবশ্য সাফাই, ‘‘হাসপাতালের যে অংশে বায়োমেট্রিক যন্ত্র বসানো রয়েছে সেখানে সংস্কার কাজ চলছে। তাই আপাতত তা বন্ধ করা রয়েছে। হাজিরা খাতার মাধ্যমে উপস্থিতি নেওয়া হচ্ছে। সংস্কার কাজ সম্পূর্ণ হলে ফের বায়োমেট্রিক পদ্ধতি চালু করা হবে।’’

স্বাস্থ্য দফতর ও জেলা হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, চিকিৎসক, আধিকারিক ও নার্স ও সব স্বাস্থ্যকর্মীদের নির্দিষ্ট সময়ে হাসপাতালে আসা-যাওয়ার প্রমাণ রাখতে বছর দুয়েক আগে বায়োমেট্রিক যন্ত্র বসানো হয়েছিল। ওই যন্ত্রে হাতের আঙুলের ছাপ দিয়ে উপস্থিতির ও বেরিয়ে যাওয়ার প্রমাণ রাখা যায়। এর মাধ্যমে চিকিৎসক ও কর্মীদের উপস্থিতির প্রমাণ এবং সময় দুই তথ্যই পৌঁছে যায় খোদ রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরে।

আরও পড়ুন:ঝেঁতল্যায় বাস উল্টে জখম ১২

প্রথম ধাপে জেলা হাসপাতালের চিকিৎসকদের জন্য এই পদ্ধতি চালু করা হয়। পরবর্তী ধাপে প্রায় এক বছর আগে হাসপাতালের সমস্ত আধিকারিক ও কর্মীদের জন্য এই পদ্ধতি চালু করা হয়েছিল। এ জন্য পাশাপাশি দু’টি বায়োমেট্রিক যন্ত্র বসানো হয়েছিল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সংলগ্ন একটি ঘরে। কিন্তু এরপরেই তা নিয়ে সমস্যা শুরু হয় বলে অভিযোগ।

জেলা হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, চিকিৎসক, আধিকারিক বাদ দিয়ে হাসপাতালে নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী মিলিয়ে প্রায় সাড়ে ৩৫০ জন স্থায়ী কর্মী রয়েছেন। হাসপাতালে বায়োমেট্রিক যন্ত্রের মাধ্যমে উপস্থিতির পাশাপাশি পুরনো পদ্ধতির হাজিরা খাতাও রাখা হয়। ফলে হাসপাতালের কর্মীদের একাংশ বায়োমেট্রিক যন্ত্র ব্যবহার করলেও একাংশ তা এড়িয়ে গিয়ে পুরনো হাজিরা খাতায় সই করেন। বায়োমেট্রিক যন্ত্র ব্যবহার বাধ্যতামূলক না করার ফলে ফের হাজিরা খাতার ব্যবহার বাড়ছে বলে অভিযোগ। এর জেরে জেলা হাসপাতালের কর্মীদের একাংশের যাওয়া–আসার সময় নিয়ে ফের গয়ংগচ্ছ মনোভাব তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ ।

জেলা হাসপাতালের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘বায়োমেট্রিক পদ্ধতি চালু হওয়ার পর একাংশ কর্মী এবং আধিকারিকদের কিছুটা অসুবিধা হচ্ছিল। হাসপাতালের সামগ্রিক কর্মসংস্কৃতির উন্নতি হয়েছিল এটা প্রমাণিত। তবে একাংশ কর্মীরা এই বায়োমেট্রিক যন্ত্র ব্যবহার এড়িয়ে যেতেন ইচ্ছাকৃতভাবেই।’’

যদিও এমন অভিযোগ মানতে নারাজ কর্মী সংগঠন নন-গেজেটেড হেলথ এমপ্লয়িজ অ্যসোসিয়েশনের জেলা সম্পাদক সত্যরঞ্জন সাহু।

তিনি বলেন, ‘‘বায়োমেট্রিক যন্ত্রর চালুর জন্য আমরা দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু জেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সমস্ত কর্মীদের জন্য এই পদ্ধতি চালু করতে পারেনি। আমরা চাই দ্রুত সব কর্মীর জন্য বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে হাজিরা ব্যবস্থা চালু করা হোক।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Biometric Attendance Machine
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE