নিজেকে-দেখা: ভোট দিয়ে বেরিয়ে ভোটার কার্ডে নিজের ছবিই দেখছেন এক বৃদ্ধ। লালগড়ের রামকৃষ্ণ বিদ্যাপীঠে। সোমবার। ছবি: দেবরাজ ঘোষ
বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের খাসতালুক গোপীবল্লভপুর ২ –এ তিন স্তরেই প্রার্থী ছিল। এজেন্টও ঠিক ছিলেন। সোমবার কী হল ভোটের দিন? ব্লকের যুব বিজেপি নেতা অনুরণ সেনাপতির কথায় মিলল ইঙ্গিত। ১০৯ নম্বর বালিপাল বুথে ছাপ্পা ভোটের অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। সে প্রসঙ্গে অনুরণ বললেন, ‘‘১০৯ নম্বর বালিপাল বুথে সকাল ১০ টার মধ্যেই ভোট শেষ হয়ে গিয়েছিল।’’
শুধু বালিপাল নয়। গোপীবল্লভপুর ১ ও ২ নম্বর ব্লক ও তার পাশের ব্লক নয়াগ্রামেও শাসক দলের বিরুদ্ধে অভিযোগের পর অভিযোগ করল গেরুয়া শিবির। প্রতিটি ক্ষেত্রেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে শাসকদল। তবে গোপীবল্লভপুর ১ এ ছাতিনাশোল মোড়ে ভোট দিয়ে ফেরার পথে কয়েকজন ভোটারকে বলতে শোনা গেল, ‘‘ভোট করাতে শিখতে হয়। তৃণমূলের কাছে শিশু বিজেপি।’’
দিলীপ ঘোষের খাসতালুকে ৯৮ টি বুথ। আগে থেকে ভোট কৌশল ঠিক করা থাকলেও এ দিন কয়েকটি বুথে এজেন্ট বসাতে পারেনি বিজেপি। তাদের অভিযোগ, পেটবিন্দি অঞ্চলের রামগড়ে দলের জেলাপরিষদ প্রার্থী সমীর পাত্র সহ আরও ৭ জন কর্মীর উপর হামলা চালিয়েছে তৃণমূল। এমনকি তাদের বাইকও ভাঙচুর চালানো হয়। দিলীপবাবুর নিজের গ্রাম কুরিয়ানার বুথে বিজেপি এজেন্ট দিয়েছে। যদিও বিজেপির অভিযোগ, কুরিয়ানা বুথের আশেপাশের গ্রামগুলিতে তৃণমূল ভয় দেখিয়েছে। এ দিন বিকেল ৫ টা পর্যন্ত নিজের গ্রামে ভোট দিতে যাননি দিলীপবাবু। ঝাড়গ্রামের বিজেপির জেলা সভাপতি সুখময় শতপথি বলেন, ‘‘সারা রাজ্যে যেরকম সন্ত্রাস হয়েছে তা নিয়ে দিলীপদা ব্যস্ত, তবে নিজের এলাকার খবরাখবর তিনি নিয়েছেন।’’ গোপীবল্লভপুর ১ ব্লকের বিভিন্ন রাস্তায় তৃণমূল কর্মীদের দাপট চোখে পড়েছে। যেখানে তৃণমূলের ক্যাম্পে লোকজনের ব্যস্ততা, সেখানে পাশের বিজেপি ক্যাম্প সুনসান থেকেছে দুপুরের পরপরই।
বিজেপির নয়াগ্রাম মণ্ডল সভাপতি উৎপল দাস পট্টনায়েকের কথায়, ‘‘বহু এলাকায় তৃণমূলের কর্মীরা ভোট বানচালের চেষ্টা কর। আমাদের কয়েকজন কর্মীকে মারধর করে। এমনকি, টাকা দিয়ে ভোটারদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছে।’’ নয়াগ্রামেরই বালিগেড়িয়ায় বিজেপির গ্রাম পঞ্চায়েত প্রার্থী দুলালি টুডু এবং জেলা সাধারণ সম্পাদক সুশীল টুডুকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। কুড়চিবনিতে বিজেপি প্রার্থীর স্বামী তপন ঘোষকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। মলমে বিজেপি নেতা ফিলিপ হেমব্রমকে মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ। এছাড়া কাদোকাঠা, বরপাট, বড়শোল ভুড়ুরিবনি, কলমা পুকুরিয়া, খড়িকা সহ ব্লকের বিভিন্ন এলাকায় এদিন তৃণমূলেরই দাপট ছিল। সব অভিযোগ অস্বীকার করে স্থানীয় বিধায়ক দুলাল মুর্মু বলেন, ‘‘বিজেপি দিশাহারা হয়ে মিথ্যে অভিযোগ করছে। মানুষকে বিভ্রান্ত করছে।’’
বেড়াজালে অবশ্য দেখা গিয়েছে ভিন্ন ছবি। বিজেপির দাবি, সেখানে তাদের দলের কর্মীরা তৃণমূলকে প্রতিহত করেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy