Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪

আপেল-কলায় পেট ভরিয়েই চুরি ঠেকানোর তোড়জোড়

লুট ঠেকাতেই চিল্কিগড়ের কনকদুর্গা মন্দিরে হনুমানের দলকে পেট ভরে খাওয়াতে উদ্যোগী হলেন মন্দির কর্তৃপক্ষ।

মন্দির চত্বরে হনুমানদের ভুরিভোজ। নিজস্ব চিত্র

মন্দির চত্বরে হনুমানদের ভুরিভোজ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
চিল্কিগড় শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০১৯ ০২:৩৫
Share: Save:

খিদের জ্বালায় খাবার কেড়ে খায় ওরা। সেই লুট ঠেকাতেই চিল্কিগড়ের কনকদুর্গা মন্দিরে হনুমানের দলকে পেট ভরে খাওয়াতে উদ্যোগী হলেন মন্দির কর্তৃপক্ষ। কলা-আপেলে আয়োজন করা হল ভুরিভোজের। পেট ভরল কয়েকশো হনুমানের।

মঙ্গলবার থেকে এই ব্যবস্থা চালু হয়েছে। এ দিন সকালে মন্দির প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা গেল, মন্দির কমিটির লোকজন বড় বড় ব্যাগ ভর্তি আপেল আর কলা নিয়ে হাজির। ছোট, বড়, মোটা, কচিকাঁচা এক পাল হনুমানকে ফল বিলি করছিলেন মন্দির উন্নয়ন কমিটির কার্যকরী সভাপতি সমীর ধল, সহ-সভাপতি তেজেশচন্দ্র দেও ধবলদেব, সম্পাদক প্রদীপ হোতার মতো অনেকেই। পর্যটক ও দর্শনার্থীরা অবাক হয়ে দেখছিলেন। ল্কিগড় কনকদুর্গা উন্নয়ন কমিটির কার্যকরী সভাপতি সমীর ধল বলেন, ‘‘খিদের জ্বালায় হনুমানের দল দর্শনার্থীদের পুজোর সামগ্রী লুটপাট করে। খাবার-দাবার কেড়ে নেয়। তাই পেট ভরিয়েই ওদের চুরির পথ বন্ধ করার উদ্যোগ নিয়েছি আমরা।’’

ঝাড়গ্রাম জেলার জামবনি ব্লকের চিল্কিগড়ের কনকদুর্গা মন্দির জেলার একটি উল্লেখযোগ্য পর্যটন কেন্দ্র। চিল্কিগড়ের মন্দির লাগোয়া ৬০ একর জঙ্গলে রয়েছে বহু দুষ্প্রাপ্য প্রাচীন গাছগাছড়া। আর রয়েছে কয়েক কয়েকশো হনুমান। জঙ্গলের ভিতরে সেই অর্থে পর্যাপ্ত ফলের গাছ নেই। তাই দর্শনার্থী ও পর্যটকদের কাছ থেকে ফলমূল, মিষ্টি ছিনিয়ে নেয় রামভক্তের দল। তাই পুজোর সামগ্রী বিক্রির দোকানগুলি অনেকক্ষেত্রেই লাঠি-পাহারা দিয়ে পুজোর সামগ্রী সমেত দর্শনার্থীদের পৌঁছে দেন মন্দিরে। পুজোর সময় দর্শনার্থীদের গর্ভগৃহের ভিতরে ঢুকিয়ে মন্দিরের দু’দিকে গ্রিল গেট বন্ধ রাখা হয়। সুযোগ পেলেই রাম ভক্তরা মন্দিরের গর্ভগৃহে ঢুকেও ফলমূল, মিষ্টি লুট করে পালায়। সমস্যা ঠেকাতে এবার রামভক্তদের পেট ভরানোর পন্থা নিলেন মন্দির-কর্তৃপক্ষ।

সমীর জানালেন, এ দিন প্রায় ২০ কিলো আপেল আর ২৫ ডজন কলা খাওয়ানো হয় হনুমানদের। খেয়েদেয়ে হনুমানের দল কেউ মন্দির প্রাঙ্গণেই গাছের ডালে বসে জিরোতে শুরু করে। কেউ আবার জঙ্গলের ভিতরে ঢুকে পড়ে। মন্দির উন্নয়ন কমিটির সম্পাদক প্রদীপ হোতা বলেন, ‘‘আমরা চেষ্টা করছি যাতে রোজই হনুমানদের পেট ভরানো যায়। তাহলে ওরা খাবার লুটপাট করবে না।’’ এ দিন পরীক্ষামূলক কর্মসূচি সফল হয়েছে বলে দাবি করলেন মন্দির কর্তৃপক্ষ। এদিন খাওয়ার পরে হনুমানের দল আর দর্শনার্থীদের জিনিসপত্র লুটপাট করেনি। মন্দিরে বেড়াতে আসা কলকাতার বিশাখা মল্লিক, তপন আচার্য বলেন, ‘‘এ দি‌ন নির্ঝঞ্ঝাটে পুজো দেওয়া গিয়েছে।’’

এ দিনই দুপুরে ব্যক্তিগত সফরে মন্দিরে এসেছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক রশ্মি কমল। পুজো দেন তিনি। মন্দির চত্বর, কনক অরণ্য, ডুলুং নদী পরিদর্শন করেন। দেবীদহ খালে নৌকা বিহারও করেন রশ্মি কমল।

অন্য বিষয়গুলি:

BJP Clash in BJP By Poll election
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE