ভূমি ও ও রাজস্ব দফতরের অফিসের নোটিস বোর্ড লাগানো এই চিঠি ঘিরেই বিতর্ক। নিজস্ব চিত্র।
বদলি আটকাতে পঞ্চায়েত সমিতির লেটার প্যাডে চিঠি লিখে ব্লকের ভূমি ও রাজস্ব দফতরের আধিকারিকের কাছে ঘুষ চাওয়ার অভিযোগ উঠল পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির বিরুদ্ধে। গোপন সেই চিঠি ফাঁস করে লাগিয়ে দেওয়া হল ভূমি দফতরের অফিসের নোটিস বোর্ডে। এই ঘটনায় শোরগোল পড়েছে রাজনৈতিক মহলে।
পটাশপুর-২ তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতির বিরুদ্ধে আগেও একাধিক দুর্নীতির অভিযোগে সরব হয়েছিল বিরোধীরা। জুলাই মাসে আমপান ও পরিযায়ী শ্রমিকদের রেশন বিতরণে দুর্নীতির অভিযোগে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিকে ঘিরে বিক্ষোভও হয়েছে। পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের খন্ডযুদ্ধে রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছিল পটাশপুর দইতলা বাজার। এই পরিস্থিতিতে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় তৃণমূলের ব্লক সভাপতিকে। অপরদিকে পটাশপুর-২ ব্লকের ভূমি ও রাজস্ব দফতরের আধিকারি নির্ঝর বিশ্বাসের বিরুদ্ধে একাধিক বেআইনি কাজের অভিযোগ ওঠে। জেলা প্রশাসন ওই অভিযুক্ত অফিসারকে শো-কজ পর্যন্ত করে।
কয়েক মাস আগে ভূমি ও রাজস্ব আধিকারিকের বিরুদ্ধে জমির মিউটেশন করানোর নামে ঘুষ চাওয়ার অভিযোগ ওঠে। অভিযুক্ত আধিকারিকেক অপসারণ-সহ শাস্তির দাবিতে নবান্নে গণস্বাক্ষর সংবলিত আবেদন জমা পরে। অভিযোগ, সম্প্রতি ওই সরকারি আধিকারিকের বদলি আটকাতে তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নিজের অফিসের প্যাডে চুক্তি অনুযায়ী ঘুষের পাঁচ লক্ষ টাকার বাকি দু’লক্ষ টাকা এবং নাম খারিজের জন্য সংগৃহীত কাটমানি মিলিয়ে মোট পাঁচ লক্ষ টাকা তাঁকে মিটিয়ে দেওয়ার জন্য দ্রুত ওই আধিকারিককে বলেন। ওই টাকা পত্রবাহক ওয়াসিম খানের হাতে পাঠাতে বলেন বলেও অভিযোগ। কিন্তু গোপন সেই চিঠি ফাঁস হয়ে যায়। গত শুক্রবার ভূমি দফতরের নোটিস বোর্ডে কে বা কারা ওই চিঠি লাগিয়ে দেয়। চিঠিতে লেখা রয়েছে। ‘মাননীয় বিএল অ্যান্ড এলআরও পটাশপুর-২ প্রতাপদিঘি, জেলা পূর্ব মেদিনীপুর। মহাশয়, আপনাকে জানাই যে আপনার সহিত ওয়াসিম খানের মাধ্যমে চুক্তি হইল, অফিসের নাম খারিজ কেসগুলি নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে প্রতি কেসে ১০০ (একশত) টাকা হারে আমাকে দেবেন এবং আপনার ট্রান্সফার রদ করা ব্যাপারে পাঁচ লক্ষ টাকা আমাকে দেবেন। আপনি ওয়াসিম খানের মাধ্যমে তিন লক্ষ টাকা আমাকে দিলেন, বাকি টাকা দিলেন না কেন? নাম খারিজ কেসগুলিতে যে কাটমানি টাকা ওয়াসিম খানের মাধ্যমে তুললেন তাহার এক টাকাও দিলেন না। আপনার টাকা না দেওয়ার কারণটা কি? পত্রবাহকের হাতে অদ্য পাঁচ লক্ষ টাকা পাঠাবেন। যদি না পাঠান তাহা হইলে আমার পক্ষ হইতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বাধ্য থাকিব’। সভাপতি ও ব্লক ভূমি আধিকারিকের মধ্যে এই চিঠি নিয়ে শোরগোল রড়েছে। সরব বয়েছে বিরোধধীরাও। ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবি জানিয়েছে মানুষ। ঘুষ দেওয়ার ঘটনায় উল্লিখিত পটাশপুর-২ ভূমি ও রাজস্ব দফতরের আধিকারিক নির্ঝর বিশ্বাসকে ফোন করা হলে তাঁর ফোন সুইচ অফ থাকে। মেসেজ করা হলেও কোনও উত্তর দেননি।
অভিযুক্ত পটাশপুর-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি চন্দন সাহুর দাবি, ‘‘আমার স্বাক্ষর করে লেটার প্যাড নিয়ে কে বা করা লেখা বিকৃতি করে আমাকে অপরাধী বানানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। এই চিঠির বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। এই কাজ যারা করেছে তাদের চিহ্নিত করে প্রশাসনিক ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
বিজেপি কাঁথি সাংগঠনিক সভাপতি অনুপ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘তৃণমূলের সব নেতা সরকারি অফিসারদের পোষ্য তৈরি করেছে। সাধারণ মানুষকে পরিষেবা দেওয়ার নামে সরকারি অফিসাররা ঘুষ চাইছে। ওই সব অফিসার ও নেতাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy