Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

লোকসভা নির্বাচনে সাফল্যের পর সাধারণ কর্মীদের সংবর্ধনা তৃণমূলে

বিধানসভার পর সদ্যসমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনেও বিপুল জয় পেয়েছে তৃণমূল। সাফল্যের এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে তত্‌পর দলীয় নেতৃত্ব। তাই লোকসভা নির্বাচনে পরেও পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রতিটি এলাকায় নানা ধরনের কর্মসূচির উপরে জোর দেওয়া হচ্ছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর ও খড়্গপুর শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০১৪ ০১:০০
Share: Save:

বিধানসভার পর সদ্যসমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনেও বিপুল জয় পেয়েছে তৃণমূল। সাফল্যের এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে তত্‌পর দলীয় নেতৃত্ব। তাই লোকসভা নির্বাচনে পরেও পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রতিটি এলাকায় নানা ধরনের কর্মসূচির উপরে জোর দেওয়া হচ্ছে। আর সে ক্ষেত্রে নবতম সংযোজন হল, তৃণমূল স্তরের নেতা-কর্মীদের সংবর্ধনা। এতদিন জয়ের সাফল্যে রাজ্য নেতারা জেলা নেতাদের, জেলা নেতারা ব্লক স্তরের নেতাদের সংবর্ধনা জানাতেন। তবে এ বার থেকে পঞ্চায়েত স্তরের নেতা-নেত্রীদেরও সংবর্ধনা জানানো হবে। তৃণমূলের জেলা কার্যকরী সভাপতি আশিস চক্রবর্তী বলেন, “প্রতিটি নির্বাচনে জয়ের পিছনেই প্রত্যেক নেতা-কর্মীর ভূমিকা অনস্বীকার্য। কিন্তু সব সময় সেই কৃতিত্বকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়, এমন নয়। জেলা বা ব্লক স্তরেই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে কিছু নেতা-নেত্রীকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। এ বার আমরা তৃণমূল স্তরের নেতা-কর্মীদেরও সংবর্ধনা দিতে উদ্যোগী হয়েছি।”

রবিবার বিকেলে দাঁতন-১ ব্লকের রবীন্দ্রভবনে লোকসভা নির্বাচনে ভাল কাজ করায় নিচতলার ৩২৪ জন দলীয় কর্মীদের সংবর্ধনা দেয় তৃণমূল। এঁদের মধ্যে ছিলেন বুথ সভাপতি, অঞ্চল সভাপতি, পোলিং এজেন্টরা। ব্লকের কৃতী মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদেরও সংবর্ধিত করা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলা সভাপতি দীনেন রায়, কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোত্‌ ঘোষ, নির্মল ঘোষ, সাধারণ সম্পাদক শশাঙ্ক পাত্র, ব্লক সভাপতি বিক্রম প্রধান প্রমুখ। বিক্রমবাবু বলেন, “এই ব্লক থেকে নির্বাচনে এগিয়ে থাকার কারণ আমাদের বুথস্তরের সব কর্মীর পরিশ্রম। তাই তাঁদের উত্‌সাহিত করতেই এই উদ্যোগ।”

লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিম মেদিনীপুরের তিনটি আসনেই বিপুল ব্যবধানে জিতেছেন তৃণমূল প্রার্থীরা। বিরোধী অবশ্য প্রথম থেকেই সন্ত্রাস ও রিগিংয়ের অভিযোগে সরব হয়েছিল। যুব তৃণমূলের রাজ্য সভাপতির পদ থেকে অপসারণের পর তৃণমূল সাংসদ শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্যও উস্কে দিয়েছিল রিগিং তত্ত্ব। এই পরিস্থিতিতে জন সমর্থন নিজেদের অনুকূলে রাখতে তত্‌পর তৃণমূল নেতৃত্ব। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় সামনে বেশ কয়েকটি পুর-নির্বাচন রয়েছে। তবে পাখির চোখ অবশ্যই ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচন। হাতে দু’বছর সময় রয়েছে। তবে আত্মসন্তুষ্টিতে ভুগতে নারাজ তৃণমূল। জঙ্গলমহলের এই জেলায় বামেরা ক্রমশ ক্ষয়িষ্ণু হলেও এখনও তাদের একটা নির্দিষ্ট ভোট রয়েছে। কংগ্রেস পিছিয়ে পড়লেও ঘাড়ে নিশ্বাস ফেলছে বিজেপি। মোদী হাওয়ায় সদ্য সমাপ্ত লোকসভা ভোটে কোথাও এক লক্ষের কাছাকাছি আবার কোথাও লক্ষাধিক ভোট পেয়েছে তারা। খড়্গপুর সদর বিধানসভা এলাকায় তো তারা রীতিমতো এগিয়ে রয়েছে। তার উপর কেন্দ্রে বিপুল গরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠনের পর অনেকেই বিজেপি-র দিকে ঝুঁকছে। বিজেপি সূত্রে খবর, সিপিএম নেতা-কর্মীদের অনেকেই দলে যোগ দেওয়ার আবেদন জানাচ্ছে। বিজেপি অবশ্য ধীরে চলো নীতি নিয়েছে। কলকাতায় দলের দু’দিনের রাজ্য কমিটির বৈঠক শেষ হচ্ছে রবিবার। সেখানে কী সিদ্ধান্ত হয় তা দেখার পরই, পরবর্তী পদক্ষেপ করবে জেলা বিজেপি।

এই পরিস্থিতিতে বাড়তি সতর্ক থাকছে তৃণমূল। তাছাড়াও শাসকদলের মধ্যে নানা স্তরে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রয়েছে। এ সবের প্রভাব যাতে কোনও ভাবেই জন সমর্থনে ফাটল না ধরায় সে জন্য প্রতিটি এলাকায় লাগাতার কর্মসূচির উপর জোর দিচ্ছে তৃণমূল। কোথাও হচ্ছে কৃতী ছাত্রছাত্রীদের সংবর্ধনা, কোথাও রক্তদান শিবির কোথাও আবার উন্নয়ন নিয়ে দলীয় বৈঠক। আর সেই সূত্রেই তৃণমূল স্তরের নেতা-কর্মীদেরও সংবর্ধনা জানানোর পরিকল্পনা। এক তৃণমূল নেতার কথায়, “একদিকে কর্মীদের চাঙ্গা রাখা, যাতে বিজেপি বেশি মাথা চাড়া দিতে না পারে, মানুষের সঙ্গে সদ্ভাব বজায় রাখা ও উন্নয়নের কাজ করা এটা ভীষণ জরুরি। বিধানসভা নির্বাচনের এখনও দু’বছর বাকি। তবে একটু রাশ আলগা হলেই এই জয় ধরে রাখা কঠিন হবে। সেই মতো প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।”

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE