এমনিতে রন্ধনকর্মীদের মাসিক ভাতা এক হাজার টাকা। ফাইল ছবি
তাঁরা মিড-ডে মিল রান্না করে রোজ খুদে পড়ুয়াদের মুখে তুলে দেন। বিনিময়ে মাসে জোটে সাকুল্যে হাজার দেড়েক টাকা। এই ভাতা নিতান্তই সামান্য বলে অভিযোগ উঠছে। ওই রন্ধনকর্মীদের বক্তব্য, পড়ুয়াদের খাবার রান্না করে যে-টাকা পাওয়া যাচ্ছে, তার থেকে অন্যের বাড়িতে রান্নার কাজ করলে অনেক বেশি বেতন পাওয়া যায়। প্রশ্ন উঠছে, তা হলে তাঁরা স্কুলে দুপুরের খাবার রান্নার কাজে উৎসাহিত হবেন কেন?
এমনিতে রন্ধনকর্মীদের মাসিক ভাতা এক হাজার টাকা। তার মধ্যে কেন্দ্র ৬০০ টাকা এবং রাজ্য ৪০০ টাকা দেয়। সম্প্রতি রাজ্য সরকার আরও ৫০০ টাকা দিচ্ছে। সেটা ধরে নিয়ে মাসান্তে প্রাপ্তি দেড় হাজার টাকা। পশ্চিমবঙ্গ মিড-ডে মিল কর্মী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মধুমিতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, অনেক সময় রন্ধনকর্মীরা এই দেড় হাজার টাকাও পান না। কারণ, ২৫ জন পড়ুয়া-পিছু এক জন করে রন্ধনকর্মী থাকার কথা। রাজ্যে পদ ২,৩৩,০০০। কিন্তু তার থেকে অনেক বেশি রন্ধনকর্মী কাজ করছেন।
বেশির ভাগ স্কুলেই মিড-ডে মিলের রান্নার কাজের দায়িত্বে রয়েছে স্বনির্ভর গোষ্ঠী। দেখা যাচ্ছে, অনেক স্কুলে যত জনের রান্না করার কথা, তার থেকে বেশি কর্মী ওই কাজে নিযুক্ত। ফলে ওই দেড় হাজার টাকা তাঁদের মধ্যে ভাগ হয়ে যায়। মধুমিতাদেবী বলেন, “অনেক সময় দেখা যায়, দেড় হাজার টাকা ভাগ হয়ে এক-এক জন মাসে পাচ্ছেন হয়তো মোটে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা।”
দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনাখালির একটি স্কুলে মিড-ডে মিলের রান্নার কাজ করেন রাবেয়া জমাদার। তিনি মিড-ডে মিলের স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সম্পাদিকাও। ওই মহিলা বললেন, “আমাদের স্কুলে ১২৪১ জন ছাত্র। মোট ১৩ জন রন্ধনকর্মীর কাজ করার কথা। সেই অনুযায়ী ভাতা আসে। অথচ রান্নার কাজ করছেন ২০ জন। ফলে টাকা ভাগ হয়ে আমরা দেড় হাজার টাকার থেকেও কম পাই।” রাবেয়ার আরও অভিযোগ, তাঁরা ১২ মাস কাজ করে ১০ মাসের ভাতা পান। এই বিষয়ে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেও কোনও সুরাহা হয়নি।
এত কম ভাতায় তাঁরা কাজ করছেন কেন? মিড-ডে মিল রান্নার কর্মী, পূর্ব বর্ধমানের রন্ধনকর্মীদের সভানেত্রী মাধবী অধিকারী বলেন, ‘‘আমাদের আশা, এক দিন সুদিন ফিরবে। তামিলনাড়ুতে মিড-ডে মিল রন্ধনকর্মীদের চতুর্থ শ্রেণির কর্মীর মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। আমরাও সেই দাবি জানিয়েছি।’’ সেই সঙ্গে রন্ধনকর্মীরা জানাচ্ছেন, অবিলম্বে পরিস্থিতির বদল না-হলে তাঁদের অনেকেই স্কুলের কাজ ছেড়ে বাড়িতে রান্নার কাজে চলে যাবেন।
মধুমিতাদেবীর বক্তব্য, অন্যান্য রাজ্যে রন্ধনকর্মীদের ভাতা অনেক বেশি। কেন্দ্র সেখানেও মাথাপিছু ৬০০ টাকাই দেয়, তবে সংশ্লিষ্ট রাজ্য অনেক বেশি টাকা দিচ্ছে। মধুমিতাদেবী বলেন, “বছর দুয়েক আগে বর্ধমানের একটি প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন মিড-ডে মিলের রাঁধুনি মায়েদের ১০০ দিনের প্রকল্পের কাজের সঙ্গে যুক্ত করার কথা ভাবা হচ্ছে। কিন্তু এখনও কাজের কাজ কিছুই হয়নি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy