Advertisement
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪
Summer Vacation

স্কুলে গরমের ছুটি বাড়িয়ে কমানো হোক পুজোর ছুটি, দাবি শিক্ষকদের

মঙ্গলবার প্রকাশিত প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের ছুটির তালিকায় দেখা গিয়েছিল, গরমের ছুটি বাড়েনি। গরমে ছুটি দেওয়া হয়েছে ন’দিন। পুজোয় ছুটি ২৫ দিন। বুধবার মধ্যশিক্ষা পর্ষদও ছুটির তালিকা প্রকাশ করেছে।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

আর্যভট্ট খান
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৬:২০
Share: Save:

গ্রীষ্মপ্রধান এই রাজ্যে গরমের ছুটি বাড়িয়ে কমানো হোক পুজোর ছুটি। তা হলে পঠনপাঠন পরিকল্পনা মাফিক শেষ করা যাবে। এই দাবি জানিয়ে বেশ কিছু স্কুলের প্রধান শিক্ষক চিঠি লিখেছিলেন শিক্ষা দফতরে। কিন্তু তাঁদের দাবি মানল না শিক্ষা দফতর।

মঙ্গলবার প্রকাশিত প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের ছুটির তালিকায় দেখা গিয়েছিল, গরমের ছুটি বাড়েনি। গরমে ছুটি দেওয়া হয়েছে ন’দিন। পুজোয় ছুটি ২৫ দিন। বুধবার মধ্যশিক্ষা পর্ষদও ছুটির তালিকা প্রকাশ করেছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, এ বার মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের স্কুলগুলিতে গরমের ছুটি থাকছে ১১ দিন (গত বছর ছিল ১০ দিন)। অর্থাৎ, গরমের ছুটি কার্যত বাড়ছে না। পুজোর ছুটি দেওয়া হয়েছে আগের বারের মতোই, ২৫ দিন। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ, মধ্যশিক্ষা পর্ষদ এবং মাদ্রাসা শিক্ষা পর্ষদের গরমের ছুটির দিনক্ষণ তিন রকম। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের গরমের ছুটি চলবে ২ মে থেকে ১২ মে পর্যন্ত। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের গরমের ছুটি দেওয়া হচ্ছে ১২ মে থেকে ২৩ মে পর্যন্ত। মাদ্রাসা শিক্ষা পর্ষদ গরমের ছুটি দিচ্ছে ২৮ মে থেকে ৯ জুন পর্যন্ত। শিক্ষকদের একাংশের অভিযোগ এই তিন দফতরের মধ্যে কোন সমন্বয় নেই। সে জন্য তিনটি দফতর গরমের ছুটি ভিন্ন সময়ে দিচ্ছে। কিসের ভিত্তিতে পড়ুয়াদের ভিন্ন ভিন্ন সময়ে গরমের ছুটি?

বিগত তিন-চার বছরে দেখা গিয়েছে, এপ্রিলের মাঝামাঝি তীব্র গরম পড়লেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গরমের ছুটি ঘোষণা করে দিচ্ছেন। স্কুল খুলছে প্রায় ৪৫ দিন পরে। গত বছরই যেমন গরমের ছুটি পড়েছিল ২১ এপ্রিল। স্কুল খুলেছিল ২ জুন। যদিও খাতায়-কলমে গরমের ছুটি মাত্র নয় থেকে ১১ দিন। অতিরিক্ত ছুটি বার্ষিক ৬৫ দিন ছুটির সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে। শিক্ষকদের একাংশের প্রশ্ন, তা হলে প্রতি বছর ছুটির তালিকায় স্কুল বছরে ৬৫ দিন বন্ধ থাকবে, এ কথা বলা হচ্ছে কেন? সরকারি ভাবেই বছরে ছুটির দিন ৬৫ থেকে বাড়ানো হোক।

‘অল পোস্ট গ্র্যাজুয়েট টিচার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’-এর রাজ্য সম্পাদক চন্দন গড়াই বললেন, ‘‘বেশ কয়েক বছর আগে শিক্ষা দফতরের তালিকাতেই বছরে ৮৫ দিন ছুটি ছিল। ফলে সেই মতো পরিকল্পনা করে পঠনপাঠন করানো যেত। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে ৪৫ দিন গরমের ছুটি দেওয়ায় বছরে ছুটির সংখ্যা ৮৫ দিনের থেকেও বেশি হয়ে যাচ্ছে। অথচ, দেখানো হচ্ছে, বছরে ৬৫ দিন ছুটি। এর অর্থ কী?’’ শিক্ষকদের একাংশের মতে, এ ভাবে হঠাৎ গরমের ছুটি বাড়িয়ে দিলে পঠনপাঠনের পরিকল্পনা করা যাচ্ছে না।

‘শিক্ষা অনুরাগী ঐক্য মঞ্চ’-এর সাধারণ সম্পাদক কিঙ্কর অধিকারীর মতে, ‘‘গরমের ছুটি বাড়ানো সম্ভব না হলে খুব গরমে ভোরে স্কুল করানো হোক। তা ছাড়া, মধ্যশিক্ষা পর্ষদের তরফে প্রজাতন্ত্র দিবস, স্বাধীনতা দিবসের মতো ছুটির দিনে বিদ্যালয়ে উপস্থিত থেকে তা পালন করার কথা বলা হয়েছে। সেই কারণে ওই দিনগুলি ছুটি হিসাবে না ধরে কাজের দিন বলে ঘোষণা করার দাবি জানিয়েছিলাম। কিন্তু তা মানা হয়নি।’’ ‘কলেজিয়াম অব অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমাস্টার্স অ্যান্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমিস্ট্রেসেস’-এর সম্পাদক সৌদীপ্ত দাস বলেন, ‘‘গ্রীষ্মপ্রধান রাজ্যে অন্যান্য বোর্ডের স্কুলগুলি কিন্তু এত কম সময়ের জন্য গরমের ছুটি দেয় না।’’

শিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, বছরে যাতে ৬৫ দিনের বেশি ছুটি দিতে না হয়, তার জন্যই গরমের ছুটি কমাচ্ছে শিক্ষা দফতর। কিন্তু পুজোর ছুটি টানা ২৫ দিন রাখছে। অনেকের মতে, পুজোর সময়ে, সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে অত্যধিক গরম থাকে না, আবার শীতও পড়ে না। ফলে সেই সময়ে ক্লাস করতে অসুবিধা হয় না। তাই পুজোর ছুটির দিন কমিয়ে দেওয়া হোক। ‘বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি’র সাধারণ সম্পাদক আনন্দ হান্ডার মতে, ‘‘অনেক গরিব পড়ুয়া টিউশন নিতে পারে না। বাড়িতে মা-বাবাও পড়াতে পারেন না। গরমের ছুটি এত বেশি দিন চললে পড়ুয়াদের পড়াশোনার প্রচুর ক্ষতি হয়।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Summer Vacation Puja Vacation School students School Teachers
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy