বিরোধী জোটের মুখ হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম সামনে নিয়ে এসেছিলেন তৃণমূলের সাংসদরা। —ফাইল চিত্র।
সংসদের চলতি শীতকালীন অধিবেশনে বিরোধী জোটের মুখ হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম সামনে নিয়ে এসেছিলেন তৃণমূলের সাংসদরা। এর পরে অ-কংগ্রেসি বিরোধী অনেক দল সহমত পোষণ করে এই প্রস্তাবে। তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব কংগ্রেসের সঙ্গে গোটা অধিবেশনেই দূরত্ব বজায় রেখে আজও এই একই দাবিতে সরব হয়েছে। দলের এক শীর্ষ নেতার বক্তব্য, “এই অধিবেশনের গোড়ায় তৃণমূল এবং তার পর অন্যরাও একটি প্রস্তাব দিয়েছেন। তা হল ইন্ডিয়া জোটের নতুন নেতা প্রয়োজন।”
আজ অম্বেডকর নিয়ে যখন আসর গরম করছে কংগ্রেস, দূরত্ব বজায় রেখে নিজেদের মতো করে প্রতিবাদ করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। কংগ্রেস অম্বেডকর সংক্রান্ত অমিত শাহের মন্তব্যের প্রতিবাদ কৌশল তৈরির জন্য তৃণমূলকে আজ সকালে আহ্বান জানালেও, যায়নি তারা। দলের তরফ থেকে প্রকাশ্যে বলা হয়েছে, “শেষ মুহূর্তে বললে আমাদের পক্ষে যাওয়া সম্ভব নয়। তা ছাড়া মনে রাখতে হবে, ইন্ডিয়া জোটে আমরাই একমাত্র দল যাদের সঙ্গে কংগ্রেসের কোনও নির্বাচনী সমঝোতা নেই।” পাশাপাশি তৃণমূলের ওই নেতা বলেন, “আমরা সংসদের বাইরে কংগ্রেসের তুলনায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে স্বর তুলেছি। এ বার কৌশল করে অধিবেশনের
ভিতরেও তা বলা হচ্ছে।” প্রসঙ্গত, গত কালই তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন সংবিধান নিয়ে তাঁর বক্তৃতায় বলেন, “১৯৯৭ সালে কংগ্রেস কলকাতার একটি স্টেডিয়ামে সম্মেলন করে। তাঁর (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) মনে হয়েছিল কংগ্রেস সিপিএমের ঘনিষ্ঠ হয়ে পড়ছে। ওই সম্মেলনের ভিতরে স্টেডিয়ামে ৫ হাজার লোক হয়েছিল কংগ্রেসের। বাইরে নেত্রী রাস্তায় জমায়েত করেন, যেখানে ৫০ হাজার মানুষ জড়ো হয়েছিলেন। সংবিধান শুধু কেতাবি তাকে থাকে না, রাস্তাতেও নেমে আসে।”
আজ অম্বেডকর নিয়ে আলাদা করে রাজ্যসভায় কক্ষত্যাগ করে, স্লোগান দিয়ে এবং শাহের বিরুদ্ধে স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিস দিয়ে তৃণমূল তার প্রতিবাদ আন্দোলনের স্বাতন্ত্র্য বজায় রাখতে চেয়েছে। রাজনৈতিক সূত্রের খবর, আজ নিজেদের মতো করে কংগ্রেসের সঙ্গে দূরত্ব রেখে অম্বেডকর নিয়ে যা প্রতিবাদ করার করেছে তৃণমূল। তবে সম্ভাবনা রয়েছে, আগামিকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার কংগ্রেস, তৃণমূল-সহ ইন্ডিয়ার সমস্ত দল একজোট হয়ে লোকসভা এবং রাজ্যসভায় সরব হবে। তা যদি হয়, সে ক্ষেত্রে চলতি অধিবেশনে কংগ্রেস এবং তৃণমূলের এক বিরল ঐক্যের ছবি দেখা যেতে পারে।
তৃণমূলের পাশাপাশি লালু প্রসাদ, শরদ পওয়ার, আদিত্য ঠাকরের মতো বিরোধী নেতারা এবং ওয়াইএসআর কংগ্রেসের মতো দলও বিরোধী জোটের মুখ হিসেবে মমতাকে তুলে ধরার পক্ষে। ওমর আবদুল্লা বলেছেন, বিরোধী মঞ্চের নেতৃত্বের দাবি জানাতে পারেন মমতা। রাজনৈতিক সূত্রের খবর, এই বিষয়ে কংগ্রেস সম্প্রতি একটি অভ্যন্তরীণ বৈঠক করেছে। সেখানে রাহুল গান্ধী বলেন, বিরোধী দলগুলির মাঝারি বা তলার দিকের নেতারা মমতাকে জোটের মুখ করার দাবি তুলছেন। এর কোনও গুরুত্ব নেই। তৃণমূলের বক্তব্য, কংগ্রেস বড় বড় কথা বলছে, কিন্তু তাদের নিজেদেরই মহারাষ্ট্রে জোট টিকিয়ে রাখা কঠিন। রাহুলের সংবিধান নিয়ে লোকসভার বক্তৃতায় বার বার সাভারকরকে খোঁচা দেওয়াকে ‘বিরাট ভুল’ হিসেবেই উল্লেখ করছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। দল মনে করছে, এর ফলে কংগ্রেসের দুই শরিক উদ্ধবপন্থী শিবসেনা এবং শরদ পওয়ারপন্থী এনসিপি-র মরাঠি অস্মিতায় ঘা লেগেছে। সূত্রের খবর, তৃণমূলের এক শীর্ষ নেতা আজ কথা বলেছেন শিবসেনার সঞ্জয় রাউত এবং অনিল দেশাইয়ের সঙ্গে। তৃণমূলের বক্তব্য, এঁরা কেউই খুশি নন রাহুলের বক্তব্যে। পাশাপাশি মহারাষ্ট্রে মহাবিকাশ আঘাড়ি মুখ থুবড়ে পড়ার পরে কংগ্রেসের সঙ্গে শিবসেনা এবং শরদ পওয়ারের সম্পর্ক যে আলগা হচ্ছে, এমনটাও তুলে ধরছে তৃণমূল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy