—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
আর জি কর-কাণ্ডের পরে দেড় মাসেরও বেশি চলা প্রতিবাদ আন্দোলন, দেবীপক্ষের দোরগোড়ায় উৎসব হয়ে উঠেছে। তবে মহালয়ার আগের রাতে তা অপেক্ষাকৃত ‘ফিকে’ বলে কারও কারও মনে হয়েছে। যেমন, মঙ্গলবার রাতে শ্যামবাজার পাঁচমাথার মোড় থেকে অ্যাকাডেমি অব ফাইন আর্টস চত্বর বা যাদবপুর— শহরের নানা অংশে ভিড় তুলনামূলক কম ছিল। শহরের বাইরেও রাতের আন্দোলন ততটা দানা বাঁধেনি।
আবার কয়েকটি অঞ্চলে কিছুটা অপ্রত্যাশিত ভাবেই ভিড় হয়েছে। কিন্তু অনেকেই আশা করেছিলেন, স্বাধীনতার ঐতিহাসিক মধ্যরাতের (১৪ অগস্ট) মতো মহালয়ার আগের রাতের ছক-ভাঙা প্রতিবাদেও উপচে পড়া ভিড় দেখা যাবে। পিতৃপক্ষের শেষে পিতৃতন্ত্রকে হটাও বলে অভিনব আহ্বান রাখা হয় সমাজমাধ্যমে। ‘রাত দখল থেকে ভোর দখল’ ডাক দিয়ে মহালয়ার আগের রাত জেগে সাংস্কৃতিক প্রতিবাদের কথা বলা হয়। কেউ কেউ ভাবেন, মহালয়ার সকালে ব্রাহ্ম মুহূর্তে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের দেবী আবাহনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে অভিনব প্রতিবাদী ভোর দেখা যাবে। তাঁদের আশা কিছুটা পূরণ অবশ্যই হয়েছে।
কেন এমন হল? যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনীদের একটি মঞ্চ পুরাতনী ও সংহতি এইট বি-র মোড়ে প্রতিবাদের ডাক দেন। তাঁরা বলছিলেন, “বয়স্করা অনেকেই সন্ধ্যার পরে বিরতি নিয়েছিলেন। সন্ধ্যায় কলেজ স্কোয়্যার থেকে ধর্মতলা হেঁটে তাঁরা ক্লান্ত ছিলেন। আবার সন্ধ্যায় মিছিলে হেঁটে, বাড়িতে একটু বিশ্রাম নিয়ে যাদবপুরে এইট বি-র মোড়ে চলে এসেছেন, এমন অনেকে আছেন। মধ্যরাতের পরে এইট বি-র মোড়ে আগের নৈশ প্রতিবাদের অনুষ্ঠানগুলির কাছাকাছিই ভিড় ছিল।” তবু তুলনা হচ্ছে, স্বাধীনতার মধ্যরাতে বা শীর্ষ কোর্টে দ্বিতীয় শুনানির আগের রাতে বিচার চেয়ে জমায়েতগুলির সঙ্গে ফারাকের জন্য।
রুবি মোড়, গড়িয়া, নাগেরবাজার প্রভৃতি এলাকায় তুলনায় ফাঁকা ছিল প্রতিবাদস্থল। রাত ১টায় শ্যামবাজার মোড়ে দেখা গেল, ভিড় কম। তবে তাকে খাটো করতে চান না অনেক প্রতিবাদীই। রাতে যানবাহনের সমস্যা কম ভিড়ের কারণ ভাবা হচ্ছে। অ্যাকাডেমি চত্বরের সামনে রাত ৩টে পর্যন্ত ছিলেন প্রবীণ রাজনৈতিক কর্মী কুশল দেবনাথ। পরের দুপুরেই ধর্মতলামুখী মহামিছিলে গিয়েছেন। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ছাত্রী ঝিলম রায় ভোর সাড়ে ৪টে পর্যন্ত অ্যাকাডেমির সামনে ভোর দখলের পরে দুপুরে ধর্মতলামুখী মিছিলে শামিল হন। তিনি বলেন, “নাগাড়ে প্রতিবাদের মধ্যে সাময়িক ক্লান্তির অধ্যায় বড় কিছু নয়। পুজোর সময়েও প্রতিবাদী মন নিভবে না।” কিছু পুজোমণ্ডপ প্রাঙ্গণে প্রতিবাদের পরিকল্পনা শোনা যাচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy