মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
অসম সীমানা ও চা বলয় এলাকার নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ বুধবার উত্তরকন্যায় আলিপুরদুয়ার জেলার প্রশাসনিক বৈঠকে রাজ্য ও জেলার শীর্ষ প্রশাসনিক ও পুলিশ কর্তাদের সামনে উদ্বেগের কথা জানান মুখ্যমন্ত্রী৷ নাম না করে বিজেপির দিকে আঙুল তুলে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “গোলমাল পাকাতে অসম থেকে লোক ঢোকানোর চেষ্টা চলছে, আর চা বাগানে ছড়ানো হচ্ছে টাকা৷” তবে অসম সীমানার নিরাপত্তা নিয়ে তারা নজর রাখছেন বলে বৈঠকেই মুখ্যমন্ত্রীকে আশ্বস্ত করেন রাজ্যের শীর্ষ পুলিশ কর্তারা৷
বুধবার উত্তরকন্যায় আলিপুরদুয়ার জেলার প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী নিজেই অসম সীমানা ও চা বলয় অধ্যুষিত এলাকার নিরাপত্তার প্রসঙ্গ তোলেন৷ বৈঠকের একেবারে শুরুর দিকেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘সীমান্তে ঘেরা নতুন জেলা আলিপুরদুয়ার অত্যন্ত স্পর্শকাতর৷’’ এর পরেই পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তাদের উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘কুমারগ্রাম তো সীমান্তে ভরা৷ সেখানে নজর রাখছেন তো? মনে রাখবেন, অসম থেকে কেউ কেউ অপারেট করতে পারে৷ ওই রাজ্য থেকে কেউ কেউ এসে এখানে টাকা বিতরণ করছে বলেও আমার কাছে খবর রয়েছে৷’’ সেই সঙ্গে অসমের সাম্প্রতিক গোলমালের জেরে সীমানা দিয়ে যাতে ‘পুশ-ব্যাক’ হতে না পারে সে ব্যাপারেও প্রশাসনের কর্তাদের নজর রাখতে বলেন মুখ্যমন্ত্রী৷
চা বাগান এলাকার নিরাপত্তা নিয়েও এদিন উদ্বেগ প্রকাশ করতে দেখা যায় মুখ্যমন্ত্রীকে৷ তিনি বলেন, ‘‘বনবাসী-সহ বিভিন্ন নামে বাইরের ও ভিনদেশের কিছু লোক বিদেশের টাকা ঢোকাচ্ছে৷ প্রথমে দশটা লোককে তারা সাহায্য করছে৷ তার পর তাদের দিয়ে অন্যায় কাজ করাচ্ছে৷’’ এর পরই পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তাদের উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘দিন কয়েক আগে শিলিগুড়ি থেকে কয়েকজন চিনা নাগরিক ধরা পড়েছিল৷ তারা নকল আধার কার্ডও তৈরি করে ফেলেছিল৷ ফলে বাইরের লোক, যারা বিদেশ থেকে এসে এভাবে থাকছে কেন আপনারা তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেন না? প্রত্যেকটা কেস হালকা ভাবে দেখলে হবে না৷ মনে রাখবেন বাইরে থেকে অপরিচিত কেউ অযাচিতভাবে এলে, তাকে থাকতে দেওয়া ঠিক নয়৷ অনেক সময় তারা কোনন রাজনৈতিক আশ্রয়ে চলে যায়৷ সেটাও ঠিক নয়৷ আমাদের রাজনৈতিক আশ্রয়ে আসতে চাইলে সেটাও দেওয়া যাবে না৷’’
বিজেপির আলিপুরদুয়ার জেলা সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মার দাবি, ‘‘কোন তথ্য প্রমাণ ছাড়া রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রী এ সব বলছেন৷ তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা আলিপুরদুয়ার জেলা পরিষদের বিদায়ী সভাধিপতি মোহন শর্মা পাল্টা বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারের কাছে নির্দিষ্ট প্রমাণ রয়েছে বলেই মুখ্যমন্ত্রী এদিন বিষয়টি বৈঠকে তুলেছেন৷’’
এ দিনের বৈঠকে মোহনবাবু অসম সীমান্ত লাগোয়া বারবিশার পুলিশ ফাঁড়িকে থানা করার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আর্জি জানান৷ তিনি বলেন, ‘‘প্রায় দুই বছর আগে ব্যবসায়ী সমিতি একটি জমি দিয়েছেও৷’’ তবে রাজ্য পুলিশের ডিজি বীরেন্দ্র জানান, আলিপুরদুয়ার জেলায় নতুন দুটি থানা করার একটা ভাবনা তাঁদেরও রয়েছে৷ ডিজির দাবি, নতুন জেলা হওয়ার পর আলিপুরদুয়ারে অপরাধ নিয়ন্ত্রণে এসেছে৷ অসমের দিক থেকে অপহরণের ঘটনাও নিয়ন্ত্রণে আনা গিয়েছে৷ অসম সীমান্তের নিরাপত্তার বিষয়টিতে তাদের নজর রয়েছে বলে জানান রাজ্য পুলিশের ডিজি৷
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy