Advertisement
০২ অক্টোবর ২০২৪

ঘেরাও-অশান্তি, আক্রান্ত পুলিশ

পুলিশের দাবি, ইটবৃষ্টিতে ৯ জন পুলিশকর্মী জখম হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ডেপুটি পুলিশ সুপার দেবশ্রী সান্যালও।

মেদিনীপুরে বিজেপির অভিযানে পুলিশের লাঠি। নিজস্ব চিত্র

মেদিনীপুরে বিজেপির অভিযানে পুলিশের লাঠি। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০১৯ ০২:১৯
Share: Save:

পুলিশ সুপারের অফিসে বিজেপি-র ঘেরাও কর্মসূচি ঘিরে সোমবার দুপুরে ধুন্ধুমার বাধল শহর মেদিনীপুরে। চলল ধাক্কাধাক্কি, ইটবৃষ্টি। পুলিশও পাল্টা লাঠিচার্জ করে। ফাটানো হয় স্টান গ্রেনেড ও কাঁদানে গ্যাসের শেল।

পুলিশের দাবি, ইটবৃষ্টিতে ৯ জন পুলিশকর্মী জখম হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ডেপুটি পুলিশ সুপার দেবশ্রী সান্যালও। বিজেপি-র পাল্টা দাবি, পুলিশের মারে তাদের ৫৪ জন কর্মী জখম হয়েছেন। তাদের মধ্যে শেখ সারিফুল নামে একজনের চোখ নষ্ট হতে বসেছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার বলেন, ‘‘জমায়েত থেকে পুলিশকে লক্ষ করে ইটবৃষ্টি করা হয়েছে। আত্মরক্ষার্থে পুলিশ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করেছে।’’ বিজেপির দাবি, পুলিশ শূন্যে গুলি ছুড়েছে। জেলা পুলিশ সুপার বলেন, ‘‘শূন্যে গুলি ছোড়া হয়নি। স্টান গ্রেনেডই ব্যবহার করা হয়েছে।’’

আইশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ও দলীয় কর্মীদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে এই অভিযোগে এ দিন মেদিনীপুরে পুলিশ সুপারের অফিস ঘেরাওয়ের ডাক দিয়েছিল বিজেপি। কর্মসূচিতে শামিল হন দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু, রাজ্য সম্পাদক তুষার মুখোপাধ্যায়, দলের নেত্রী তথা জেলার প্রাক্তন পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ প্রমুখ। দুপুরে শুরুতে শহরের এলআইসি মোড়ে এক সভা করে বিজেপি। সেই সভায় সায়ন্তন বলেন, ‘‘পিংলায় আমাদের কর্মীর ছেলেকে বিজেপি করার অপরাধে গাছের মধ্যে ঝুলিয়ে খুন করা হয়েছে। পিংলা থানার ওসি না কি (দলের ওই কর্মীকে) বলেছে, ও আত্মহত্যা করেছে।’’ সায়ন্তনের হুমকি, ‘‘আমি পিংলা থানার ওসি-কে জানিয়ে দিতে চাই, আমরা চাইলে আপনাকেও ঝুলিয়ে দিতে পারি। আমরা চাই না এই দুর্ঘটনা ঘটুক। সময় থাকতে থাকতে শুধরে যান।’’

সভা শেষে বিজেপির মিছিল কালেক্টরেট মোড় পেরিয়ে এসপি অফিসের দিকে এগোতে থাকে। এসপি অফিসের অদূরে পুলিশের ব্যারিকেড ছিল। বিজেপি কর্মীরা ব্যারিকেড ভেঙে এগোতে শুরু করলে পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে। পুলিশের দাবি, বিজেপির জমায়েত থেকে পুলিশকে লক্ষ করে ইটবৃষ্টি করা হয়েছে। ধাক্কাধাক্কিও করা হয়। বিজেপির পাল্টা দাবি, শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে পুলিশ বিনা প্ররোচনায় লাঠি চালিয়েছে। বিজেপি নেত্রী ভারতী বলেন, ‘‘পুলিশ নির্বিচারে লাঠি চালিয়েছে। ফের প্রমাণ হল এখানে গণতান্ত্রিক পরিবেশ নেই।’’ প্রাক্তন পুলিশ সুপারের আরও দাবি, ‘‘মাইকে ঘোষণা না করে পুলিশ স্টান গ্রেনেড ব্যবহার করতে পারে না।’’

খণ্ডযুদ্ধের পরে সায়ন্তনও ফের পুলিশকে হুমকি দেন, ‘‘আপনারা শুরু করলে আমরা কিন্তু শেষ করব।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতির মতে, ‘‘এক হাজার লোক এনে মেদিনীপুরে গুন্ডামি করেছে বিজেপি। পুলিশ যা করার তাই করেছে।’’ ৪৮ জন বিজেপি কর্মীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। প্রয়োজনে গ্রেফতারও করা হতে পারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Police Violence BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE