গ্রাফিক: তিয়াসা দাস
সিপিএমের অন্যতম স্লোগান ‘ব্যক্তির চেয়ে দল বড়’। ব্যক্তিগত নয়, রাজনৈতিক লড়াই করে শ্রমিক-কৃষক-মজুরদের অধিকার আদায়ের কথা বলতেন জ্যোতি বসু, অনিল বিশ্বাসরা। গণতন্ত্র, সাম্যবাদ, গরিবের অধিকার নিয়ে বুলি আওড়ানো সেই সিপিএমেরই বর্তমান রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র এমন এক টুইট করেছেন, যা থেকে তাঁর এবং দলের সেই নীতি-আদর্শ নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন নেটিজেনরা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম না করে তাঁর ইংরেজি উচ্চারণ নিয়ে ব্যক্তিগত আক্রমণ করে রীতিমতো ট্রোলড সূর্যকান্ত মিশ্র। সিপিএম রাজ্য সম্পাদকের রুচি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। কেউ কেউ টেনে এনেছেন আটের দশকে প্রাথমিকে ইংরেজি তুলে দেওয়ার প্রসঙ্গও।
কী টুইট করেছেন সূর্যকান্ত? প্রথম দিকে শুধুই কিছু ‘শব্দ’। যার মধ্যে একটি করে ইংরেজি অক্ষর ‘আর’ বিলুপ্ত। ওই ইংরেজি শব্দগুলি বাংলায় ফোনেটিক্যালি লিখতে হলে একটি করে ‘র-ফলা’ প্রয়োজন হয়। যেমন ‘প্রব্লেম’কে লিখেছন ‘পব্লেম’, ‘থ্রেট’কে থেট, ‘প্রোপাগান্ডা’ হয়েছে ‘পোপাগান্ড’ এবং আরও অনেকগুলি শব্দ। শব্দগুলির শেষে এই ইংরেজি অক্ষর ‘আর’ দিয়েই তৈরি করেছেন ‘রেড’ অর্থাৎ লাল। বামেদের প্রতীক ‘লাল ঝান্ডা’। বার্তা দিয়েছেন, এই ‘আর’ ফিরিয়ে আনতে ‘রেড ফ্ল্যাগ’ উঁচু করে তুলে ধরুন। ভোট দিন বিচার করে।
সূর্যকান্তর এই টুইটের টার্গেট যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তা বুঝতে সময় লাগেনি নেটিজেনদের। আরও স্পষ্ট করে বললে, মুখ্যমন্ত্রীর ইংরেজি উচ্চারণকে কটাক্ষ করতেই এই টুইট সূর্যকান্তর। কিন্তু টুইটের পর থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় তীব্র প্রতিক্রিয়া। প্রবল আক্রমণের মুখে পড়েছেন রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র। প্রায় দুই শতাধিক টুইটার ইউজার রিপ্লাই করেছেন। রিটুইট ৮৫ জনের। আর তার অধিকাংশই রাজ্যের প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে তীব্র আক্রমণ, কটাক্ষ, বা ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করে।
"Gobment,poblem, theat,poposal, popaganda, poperly, pocuring,pocess, popety, pice, kalpits potection, pesident, poject..
— Surjya Kanta Mishra (@mishra_surjya) April 29, 2019
and the list goes on !!!
If you want the " R " back.....vote judiciously ! 😜😜"
Excellent ponunciation!
Hold high the Redflag to get the R back.#Vote4Left
কেউ বলছেন, বামেদের দেউলিয়াপনা স্পষ্ট। কারও প্রশ্ন, এই ভাবে কারও দুর্বলতা নিয়ে ব্যক্তিগত আক্রমণ করে ভোট চাইতে হচ্ছে, এর চেয়ে বামেদের দুর্দিন আর কী হতে পারে? অনেকে সূর্যকান্তর ব্যক্তিগত রুচিবোধ নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন। কেউ কেউ আবার কমিউনিস্টদের নীতি-আদর্শের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন।
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
আরও পড়ুন: গঢ়চিরৌলীতে মাওবাদী হামলা, বিস্ফোরণে নিহত অন্তত ১৫ কমান্ডো, গাড়ির চালক
আরও পডু়ন: ২০৫ কিমি বেগে গোপালপুর-চাঁদবালির উপর শুক্রবার আছড়ে পড়তে পারে ফণী
আটের দশকের গোড়ার দিকে বাম জমানায় সরকারি স্কুলে প্রাথমিক স্তরে ইংরেজি পঠনপাঠন বন্ধ করে দেওয়া হয়। কবিগুরুরআদর্শকে তুলে ধরে বামেদের যুক্তি ছিল, ‘মাতৃভাষাই শিক্ষার সর্বোত্তম পন্থা’। যদিও প্রায় দু’দশক পর সেই বামেরাই আবার ইংরেজি ফিরিয়ে আনে। সেই প্রসঙ্গ তুলে এনে বামেদের খোঁচা দিয়েছেন অনেকেই। আবার সূর্যকান্ত মিশ্রর নিজের অনেক উচ্চারণের ত্রুটি তুলে ধরেও আক্রমণ চলেছে টুইটারে। সব মিলিয়ে ব্যাপক ট্রোলড সূর্যকান্ত মিশ্র।
সূর্যকান্তের হয়েও অবশ্য কয়েক জন ব্যাট ধরেছেন। তবে সেই সংখ্যাটা খুবই নগন্য। এবং এই টুইটের পক্ষে যাঁরা সওয়াল করেছেন, তাঁদের পিছনেও পড়েছেন নেটিজেনরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy