বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী রেজাউল করিম।
লোকসভার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য সরকারি চাকরি ছেড়েছেন তিনি। কিন্তু রাজ্য সরকার তাঁর ইস্তফা গ্রহণ না-করায় কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী রেজাউল করিম। বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিচারপতি শুভ্রা ঘোষের ডিভিশন বেঞ্চ শুক্রবার তাঁকে ভোটে দাঁড়ানোর ছাড়পত্র দিয়েছে। তবে রেজাউলের আইনজীবীরা জানান, তাঁর ইস্তফা সংক্রান্ত বিষয়ে বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ চূড়ান্ত মতামত দেয়নি। আগামী সোমবার ওই বিষয়টির নিষ্পত্তি হবে বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের ডিভিশন বেঞ্চে।
রেজাউলের আইনজীবী জয়দীপ কর ও শামিম আহমেদ জানান, তাঁদের মক্কেল কামারহাটির সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষক। ২০১৭ সালে তিনি রাজ্যের স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তার কাছে স্বেচ্ছাবসরের আর্জি জানান। স্বাস্থ্য-শিক্ষা দফতর গত বছর তাঁর বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ তোলে। তাঁকে জানিয়ে দেওয়া হয়, রাজ্যের স্বাস্থ্যনীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ আন্দোলনে তিনি জড়িত। তাই তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। রেজাউলের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করা হয়। চার্জশিটের উত্তরও দিয়েছেন তিনি।
আইনজীবীরা জানান, স্বাস্থ্য-শিক্ষা দফতর তাদের সিদ্ধান্ত রেজাউলকে জানায়নি। ৬ মার্চ ওই শিক্ষক স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তাকে চিঠি দিয়ে জানান, তিনি চাকরিতে ইস্তফা দিতে চান। কারণ, তিনি ভোটে লড়তে ইচ্ছুক। স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা তখন সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষকে চিঠি দিয়ে রেজাউলের ইস্তফার বিষয়ে তাঁর মতামত জানতে চান। অধ্যক্ষ জানিয়ে দেন, তাঁর ইস্তফা গ্রহণ করা যেতে পারে। কিন্তু স্বাস্থ্য-শিক্ষা দফতর ২৯ মার্চ রেজাউলকে জানিয়ে দেয়, তাঁর ইস্তফা গ্রহণ করা হচ্ছে না।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
ওই শিক্ষকের কৌঁসুলিরা জানান, স্বাস্থ্য-শিক্ষা দফতরের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইবুনাল বা স্যাটে মামলা করা হয়। ১ এপ্রিল স্যাট অন্তর্বর্তী কোনও নির্দেশ না-দিয়ে রেজাউল ও স্বাস্থ্য-শিক্ষা দফতরকে হলফনামায় তাদের বক্তব্য পেশ করতে বলে। স্যাটের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ৪ এপ্রিল হাইকোর্টে মামলা করেন ওই শিক্ষক। আবেদনে বলা হয়, ভোটে প্রার্থী হওয়ার জন্য তিনি সরকারি চাকরিতে ইস্তফা দিয়েছেন। তাঁকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ছাড়পত্র দেওয়া হোক।
এ দিন মামলার শুনানিতে ওই শিক্ষকের আইনজীবীরা জানান, তাঁদের মক্কেল ইস্তফা দিয়েছেন। কিন্তু তা গ্রহণ করা হচ্ছে না। তা শুনে বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায় মন্তব্য করেন, কেউ ইস্তফা দিয়ে থাকলে তাঁকে দিয়ে জোর করে কাজ করানো যায় না। সেনা বা পুলিশের মতো বাহিনী হলে ব্যতিক্রম হতে পারে। রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত আদালতে জানান, ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ রয়েছে। সেই বিষয়ের নিষ্পত্তি এখনও হয়নি। ইস্তফা গৃহীত হলে বিষয়টির নিষ্পত্তি হবে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy