কুশল বিনিময় দুই প্রার্থীর। —নিজস্ব চিত্র।
রবিবার ভোট প্রচারে বেরিয়েছিলেন দু’জনেই। সেখানেই পথে হল দেখা। রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমেও পারস্পরিক সৌজন্য দেখাতে ভুললেন না জঙ্গিপুর লোকসভার কংগ্রেস প্রার্থী অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় এবং সিপিএমের জুলফিকার আলি। তাঁদের সেই সৌজন্যের সাক্ষী রইলেন কয়েকশো দলীয় সমর্থকও।
প্রচারে বেরিয়ে কাকতালীয় ভাবেই দেখা হয়ে যায় অভিজিৎ এবং জুলফিকারের। গাড়ি থেকে নেমে করমর্দনের জন্য হাত বাড়িয়ে দেন দু’জনেই। তারপর কয়েক মিনিট দু’জনে হেসে কথাবার্তাও বলেন।
একে অপরে শুভেচ্ছা বিনিময়ও করেন। দু’জনকেই তখন ঘিরে রয়েছেন দু’দলের কর্মী-সমর্থকরা। দুই প্রার্থীকে কথা বলতে দেখে তাঁদের মুখেও হাসি। অভিজিৎকে জুলফিকার বললেন “আপনাকে অনেক শুভেচ্ছা। আমি কাশিমনগর হাইস্কুলের হেড মাস্টার।” অভিজিৎ সেই সময় বললেন, “আরে বাবা, জানেন তো ছাত্রজীবনে হেড মাস্টারমশায়কে আমি খুব ভয় পেতাম।’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
দুই প্রার্থীই তখন করমর্দনে ব্যস্ত। এরপর শুভেচ্ছা জানিয়ে তাঁরা ফের প্রচারে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।
তবে দুই যুযুধানের এহেন সৌজন্য বিনিময়কে সাধুবাদ জানিয়েছেন রাজনীতির কারবারিদের একাংশ। তাঁদের বক্তব্য, রাজ্যজুড়ে যখন কুকথারস্রোত বইছে, কোনও রাজনৈচিক নেতা পাঁচনের ‘দাওয়াই’য়ের কথা বলছেন। অনেকে রুচিহীন ব্যক্তিগত আক্রমণ করতেও পিছপা হচ্ছেন না। তখন রবিবার সকালের এই সৌজন্যের ছবি কিছুটা হলেও ব্যতিক্রম তো বটেই।
জঙ্গিপুরের সম্মতিনগর নিমতলায় প্রচারে বেরিয়ে দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর মিনিট কয়েকের এই কুশল বিনিময়ের সাক্ষী ছিলেন পথচলতি মানুষও। অভিজিৎ বলছেন “রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী হলেও এ ধরনের সৌজন্য দেখানোই তো বাঞ্ছনীয়। ভিন্ন চিন্তাভাবনা থাকতেই পারে, তার জন্য রাজনৈতিক লড়াই হবে। উনিও (জুলফিকার) চাইছেন রাজনীতির মধ্যে থেকে জনগণের কল্যাণ করতে। দেশের উন্নয়ন করতে। কংগ্রেসও তাই চাইছে। গণতন্ত্রে পথ ভিন্ন হতেই পারে। রাজনীতিতে ভিন্নমত থাকলেও এই পারস্পরিক সৌহার্দ্য কখনই নষ্ট হতে দেওয়া উচিত নয়।”
আর জুলফিকার কী বলছেন? তাঁর কথায়, “সম্মতিনগরে প্রচারে বেরিয়ে ছিলাম। পাশ দিয়ে গাড়িতে করে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে যাচ্ছিলেন অভিজিৎবাবু। আমায় দেখেই গাড়ি থেকে নেমে এলেন উনি। শুভেচ্ছা জানালেন। আমিও পাল্টা শুভেচ্ছা জানাই। কুশল বিনিময় হয়েছে। এর আগেও আমি ওঁর বাড়ি গিয়েছি ওঁর বাবার (প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়) সঙ্গে দেখা করতে। উনিও সেই সময় উপস্থিত ছিলেন।ভারতবর্ষে এখন এক অসুস্থ রাজনীতি চলছে। পশ্চিমবঙ্গও তা থেকে মুক্ত নয়। নীতির প্রশ্নে আপস নয়। কিন্তু দেশের রাজনীতিতে সুস্থ পরিবেশটা ফিরিয়ে আনা বড় জরুরি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy