১৯মে বিরোধী দলনেতা হিসেবে শুভেন্দুকে স্বীকৃতি দিয়ে চিঠি দেয় বিধানসভা সচিবালয়।
বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীই। বিধানসভার তরফেও ইতিমধ্যেই সেই স্বীকৃতি পেয়ে গিয়েছেন তিনি। ভোট মিটে যাওয়ার তিন সপ্তাহের মধ্যেই তাঁকে বিরোধী দলনেতা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন রাজ্য বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার সকালে সেই স্বীকৃতিপত্র প্রকাশ্যে আনল গেরুয়া শিবির। ঘটনাচক্রে, তার ঠিক আগেই ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাক্ষাতে শুভেন্দুর উপস্থিতি নিয়ে নবান্নের তরফে আপত্তি তোলা হয়েছে। নবান্নের তরফে নয়াদিল্লিকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, মোদীর বৈঠকে শুভেন্দু থাকলে মমতা ওই বৈঠকে থাকবেন না। তিনি শুধু বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গেই।
ওই আপত্তির কথা জানাজানি হওয়ার পরেই শুভেন্দুর বিরোধী দলনেতার স্বীকৃতির চিঠিটি প্রকাশ করেছে বিজেপি। যার মাধ্যমে প্রকারান্তরে বুঝিয়ে দিতে চাওয়া হয়েছে, শুভেন্দু ‘স্বীকৃত’ বিরোধী দলনেতা। যা পদমর্যাদায় মন্ত্রীর সমতুল। ফলে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে তাঁর থাকা নিয়ে আপত্তি তোলা অনুচিত হবে। যদিও প্রকাশ্যে বিজেপি এই বিষয়টি নিয়ে কোনও কথা বলেনি। বিজেপি-র তরফে যে চিঠিটি শুক্রবার সকালে প্রকাশ করা হয়েছে, সেটি গত ১৯মে বিধানসভার সচিবালয় থেকে শুভেন্দুকে পাঠানো হয়। তাতে সপ্তদশ বিধানসভায় ১৩মে থেকে বিরোধী দলনেতা হিসেবে শুভেন্দুকে স্বীকৃতি দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। স্পিকার নিজেও তাতে সায় দিয়েছেন বলে উল্লেখ রয়েছে চিঠিতে। অর্থাৎ ২মে ভোটের ফলাফল ঘোষণার ১১ দিনের মাথাতেই বিরোধী দলনেতা হিসেবে বিধানসভায় স্বীকৃতি পেয়েছেন শুভেন্দু।
তবে দু’সপ্তাহ আগে রাজ্য বিধানসভায় শুভেন্দু বিরোধী নেতার স্বীকৃতি পেয়ে গেলেও এত দিন সেটি দলীয় তরফে সামনে আনা হয়নি। বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠ তৃণমূল বিষয়টি জানত কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। কারণ, ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’-এর ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মমতার সাক্ষাতে শুভেন্দুর উপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলতে গিয়ে বিরোধী দলনেতা হিসেবে তাঁর স্বীকৃতির বিষয়টি তুলে ধরেছে তারা। বলা হয়েছে, বিজেপি শুভেন্দুকে বিরোধী দলনেতা হিসেবে ঘোষণা করলেও ‘আনুষ্ঠানিক ভাবে’ তিনি এখনও রাজ্যের বিরোধী দলনেতা নন। বিষয়টি নিয়ে রাজ্য-রাজনীতিতে চাপানউতরের মধ্যেই শুক্রবার সকালে প্রধানমন্ত্রী রাজ্য সফরে এসে পৌঁছনোর কয়েক ঘণ্টা আগে বিজেপি-র তরফে বিধানসভার বিরোধী দলনেতা হিসেবে শুভেন্দুর স্বীকৃতিপত্র প্রকাশ্যে আনা হয়েছে।
কেন এতদিন চিঠিটি প্রকাশ্যে আনা হয়নি? এ নিয়ে রাজ্য বিজেপি-র কেউই মুখ খুলতে চাননি। তবে দলীয় সূত্রে খবর, বিধানসভা সচিবালয়ের তরফে সরাসরি শুভেন্দুকেই চিঠি লেখা হয়েছিল। তিনি যে বিরোধী নেতা হিসেবে স্বীকৃতি পেয়ে গিয়েছেন, তা বোঝাতে শুক্রবার নিজেই ওই চিঠি সকলকে পাঠান শুভেন্দু। আনন্দবাজার ডিজিটাল বিষয়টি নিয়ে শুভেন্দুর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু সাড়া দেননি শুভেন্দু। তবে এই চিঠি নিয়েও তৃণমূল-বিজেপি এবং সর্বোপরি মমতা বনাম শুভেন্দুর সঙ্ঘাত আরও জোরাল হবে বলে মনে করছে শাসক এবং বিরোধী শিবিরের একাংশ। এখন দেখার, প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে শুভেন্দু হাজির থাকেন কি না এবং তিনি থাকলে মমতা সেখানে থাকেন কি না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy