শহরের বিভিন্ন জায়গায় পুরসভার প্রস্তাবিত পার্কোম্যাট নির্মাণের পরিকল্পনা আপাতত স্থগিতই রইল। কলকাতা পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারিং দফতরের মেয়র পারিষদ অতীন ঘোষ বলেন, “জমির অভাবেই আপাতত এই প্রকল্প নির্মাণ করা সম্ভব হচ্ছে না।” তবে কবে তা নির্মাণ করা সম্ভব, সে বিষয়েও স্পষ্ট ইঙ্গিত মেলেনি।
তৃণমূল পরিচালিত পুরবোর্ড ক্ষমতায় এসেই পার্কিং সমস্যা কমাতে শহরের নানা এলাকায় পার্কোম্যাট নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়। এর পরেই ২০১২ সালে দক্ষিণ কলকাতার হাজরা পার্ক, গাঁজা পার্ক এবং ট্র্যাঙ্গুলার পার্কে একটি বহিরাগত সংস্থাকে দিয়ে পার্কোম্যাট তৈরির ব্যাপারে সমীক্ষা হয়। তবে তার রিপোর্টে জানানো হয়, এই তিনটি জায়গার কোথাওই তা নির্মাণ সম্ভব নয়। কারণ, রিপোর্ট অনুযায়ী হাজরা পার্ক এবং গাঁজা পার্কের পাশ দিয়ে মেট্রোর লাইন গিয়েছে। অন্য দিকে, ট্র্যাঙ্গুলার পার্কে পরিকাঠামোজনিত কিছু সমস্যা
থাকায় সেখানেও এই প্রকল্পের কাজ সম্ভব নয়।
এর পরে পুরসভা থেকেও মধ্য ও দক্ষিণ কলকাতার ক্যামাক স্ট্রিট, আর এন মুখার্জি রোড, বড়বাজার-সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় যৌথ উদ্যোগে (পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ) পার্কোম্যাট নির্মাণের জন্য সমীক্ষা চালানো হয়। কিন্তু সেখানেও কোনও জমি না মেলায় প্রকল্পটি থেকে পিছিয়ে আসেন পুর-কর্তৃপক্ষ।
পুরসভার এক আধিকারিক জানান, প্রথমে শহরের বাণিজ্যিক এলাকাতেই এ ধরনের প্রকল্প গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়। কারণ এই সব এলাকায় গাড়ি পার্কিংয়ের সংখ্যা বেশি। অনেক সময়ে জায়গাই মেলে না। অন্য দিকে পুরসভা সূত্রে খবর, সবুজ ধ্বংস হবে বলে পার্কগুলিতে পার্কোম্যাট প্রকল্প তৈরি নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিলেন অনেক পরিবেশবিদ। তাই পরে ঠিক হয়েছিল শহরে যেখানে ফাঁকা জমি মিলবে, সেখানেই তৈরি হবে পার্কোম্যাট। কিন্তু জমি মেলেনি।
কলকাতা পুরসভার পার্কিং দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, পুরসভা এলাকায় বড়, মাঝারি এবং ছোট মিলিয়ে গাড়ি যাতায়াতের সংখ্যা মোট ৭ লক্ষ ৩৩ হাজার। মোট গাড়ি পার্ক হয় ৮৬১২টি। তার মধ্যে রাতে ২৪৩৬টি গাড়ি পার্ক করা হলেও দিনে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৬১৭৬টি। পুরসভার পার্কিং দফতরের হিসেব অনুযায়ী, শহরের পার্কিং সমস্যা মেটাতে পার্কোম্যাটই একমাত্র বিকল্প। কমপক্ষে ১০টি পার্কোম্যাট তৈরি হলে সমস্যা কিছুটা মিটবে বলে জানান দফতরের অধিকেরিকেরা। বর্তমানে শহরে নিউমার্কেট ছাড়াও রডন স্ট্রিটে একটি পার্কোম্যাট রয়েছে।
অতীনবাবু বলেন, “বিকল্প হিসেবে জমি কিনে বা অধিগ্রহণ করে যৌথ উদ্যোগে পার্কোম্যাট নির্মাণ করার কথা ভাবা হচ্ছে। কিন্তু কী ভাবে তা হবে, তা নিয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy