সময়বিশেষে মহিলাটি নিজের নাম বদলে ফেলেন। কথাবার্তা আর চালচলনেও চৌকস!
তাতেও অবশ্য শেষ রক্ষা হল না। একটি বড় ব্যাগ নিয়ে ট্রেন ধরতে যাওয়ার পথেই রেলরক্ষীদের নজরে পড়ে যান বছর বিয়াল্লিশের মহিলাটি। বেশ কিছু ক্ষণ তাঁকে অনুসরণ করার পরেই পথ আটকান রেলরক্ষীরা। ব্যাগ তল্লাশিতে পাওয়া যায় প্রচুর বিদেশি মুদ্রা এবং নগদ ৯০ হাজার টাকা। সব মিলিয়ে প্রায় ১৮ কোটি টাকা। ব্যাগে মিলেছে কিছু দুষ্প্রাপ্য মুদ্রাও। তার মূল্যায়ন করতে পারেনি জিআরপি। রেল পুলিশের খবর, ধৃত মহিলার নাম রাইমা শেখ। প্রয়োজনমতো তিনি রাইমা বিবি, রমা সাহা এবং রমা দাস বলেও নিজের পরিচয় দিতেন।
সোমবার, প্রজাতন্ত্র দিবসের বিকেলে ঘটনাটি ঘটেছে শিয়ালদহ স্টেশনে। রেল পুলিশ সুপার দেবাশিস বেজ বলেন, “রেলরক্ষী বাহিনী (আরপিএফ)-র সন্দেহ হওয়ায় তারা ওই মহিলাকে আটকান। বিদেশি মুদ্রা ও দুষ্প্রাপ্য মুদ্রাগুলি আসল না নকল, তা যাচাই করা হচ্ছে। কী ভাবে ওই মহিলার কাছে এত মুদ্রা এবং টাকা এল, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
রেল পুলিশ জানায়, আদতে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসিন্দা রাইমা শেখ প্রায় দু’যুগ আগে মুম্বইয়ের ওয়ার্লিতে চলে যান। পুলিশের জেরার মুখে মহিলা জানান, গত ২৪ জানুয়ারি তিনি ডাউন মুম্বই মেলে মুম্বই থেকে কলকাতা রওনা দেন। সোমবার সকালে নামেন সাঁতরাগাছি স্টেশনে। সেখান থেকে লোকাল ট্রেনে হাওড়ায় পৌঁছে কিছু ক্ষণ এ-দিক ও-দিক ঘোরাঘুরি করার পরে ট্যাক্সিতে শিয়ালদহে যান। তার পরে শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার লোকাল ট্রেন ধরতে যাচ্ছিলেন তিনি। তখনই রাইমার চালচলন দেখে সন্দেহ হয় কর্তব্যরত রেলরক্ষী বাহিনীর। তারা ওই মহিলাকে আটকে তাঁর ব্যাগ তল্লাশ করেন। বেরিয়ে পড়ে টাকা এবং বিদেশি ও দুষ্প্রাপ্য মুদ্রা।
কোথা থেকে টাকা বা মুদ্রা পেলেন, তার সদুত্তর দিতে পারেননি রাইমা। রেলরক্ষী বাহিনী তাঁকে রেল পুলিশের হাতে তুলে দেয়। কেন তিনি মুম্বই মেলেই হাওড়া পর্যন্ত না-এসে সাঁতরাগাছিতে নেমেছিলেন এবং পরে লোকাল ধরে হাওড়ায় পৌঁছন, সেই রহস্য ভেদ করতে পারেনি পুলিশ। সাঁতরাগাছিতে বিশেষ কারও সঙ্গে তাঁর যোগাযোগের কথা ছিল কি না, সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশ জানায়, ট্রেনে মথুরাপুরে শ্বশুরবাড়িতে যাচ্ছিলেন রাইমা। কোনও চোরাচালান চক্রের সঙ্গে তাঁর যোগ আছে কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। মঙ্গলবার শিয়ালদহ আদালতে তোলা হলে বিচারক ওই মহিলাকে ১৩ দিন পুলিশি হাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy