Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Antibiotics

ডাক্তারি পরামর্শ ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিকের বিক্রি রুখতে কড়া নজরদারির সিদ্ধান্ত

প্রেসক্রিপশন ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রির উপরে নজরদারি চালানোর সিদ্ধান্ত নিল স্বাস্থ্য দফতর। পাশাপাশি, কৃষি, পোলট্রি, মৎস্য পালনেও যথেচ্ছ অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার বন্ধে কড়া হচ্ছে দফতর।

An image of Medicine

—প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০২৩ ০৭:২৪
Share: Save:

প্রেসক্রিপশন ছাড়াই বিভিন্ন সমস্যায় মুড়ি-মুড়কির মতো অ্যান্টিবায়োটিক কিনে খাওয়ার অভ্যাসে আখেরে ক্ষতি হচ্ছে অনেকেরই। কারণ, এই যথেচ্ছ ব্যবহারে শরীরে বাসা বাঁধছে মাল্টি-ড্রাগ প্রতিরোধী ব্যাক্টিরিয়া। তাই প্রেসক্রিপশন ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রির উপরে নজরদারি চালানোর সিদ্ধান্ত নিল স্বাস্থ্য দফতর। পাশাপাশি, কৃষি, পোলট্রি, মৎস্য পালনেও যথেচ্ছ অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার বন্ধে কড়া হচ্ছে দফতর।

কিছু দিন ধরেই রাজ্যের অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধ বিষয়ক কমিটির সদস্য-চিকিৎসকদের নজরে এসেছে বিষয়টি। বিভিন্ন জায়গায় কিছু রোগীর শরীরে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী ব্যাক্টিরিয়া বাসা বেঁধেছে। ফলে সংক্রমণ কমাতে উচ্চ মাত্রার বা খুব দামি অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করতে হয়েছে। সম্প্রতি অ্যান্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ ব্যবহার নিয়ে সতর্ক করতে সচেতনতা সপ্তাহ পালন করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। শুক্রবার রাজ্যের প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতর, মৎস্য দফতর ও অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধ বিষয়ক কমিটির সঙ্গে বৈঠকে বসে স্বাস্থ্য দফতর। সূত্রের খবর, সেখানেই প্রেসক্রিপশন ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রির উপরে নজরদারি এবং কৃষি, মুরগি, মৎস্য চাষে অ্যান্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ ব্যবহার বন্ধের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। প্রতি মাসে স্বাস্থ্য দফতরের পর্যালোচনা বৈঠকে প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতর, মৎস্য দফতরকে রিপোর্ট পেশ করতে বলা হয়েছে।

রাজ্যের অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধ বিষয়ক কমিটির সদস্য, শল্য চিকিৎসক দীপ্তেন্দ্র সরকারের কথায়, ‘‘প্রায় এক-তৃতীয়াংশ দেশবাসী অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করেন। তাঁদের একটি বড় অংশ প্রেসক্রিপশন ছাড়াই যথেচ্ছ অ্যান্টিবায়োটিক খান। দেশের দুই-তৃতীয়াংশ খাদ্যদ্রব্যের মধ্যে যেমন খুশি ভাবে অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগ করা হচ্ছে। যা সভ্যতাকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যেতে পারে। অবিলম্বে এই প্রবণতা বন্ধ করতে হবে।’’ চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক কিনে তা ঠিকমতো ডোজ়ে ব্যবহার না করা, পুরো কোর্স শেষের আগেই ব্যবহার বন্ধের কারণে বিশ্ব জুড়ে অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল রেসিস্ট্যান্ট বাড়ছে। সেই কারণেই আগামী দিনে বড় বিপদের বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সতর্কতা জারি করেছে বলে জানাচ্ছেন শহরের এক বেসরকারি হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ারের চিকিৎসক সৌতিক পান্ডা।

অনিয়ন্ত্রিত ভাবে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের ফলে অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল রেসিস্ট্যান্টের কারণে ২০৫০-এর মধ্যে ৭০ শতাংশ মানুষের মৃত্যু হবে বলে বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কার কথা জানাচ্ছেন রাজ্যের অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধ বিষয়ক কমিটির সদস্য ভাস্করনারায়ণ চৌধুরীও। রাজ্যের প্রাণী ও মৎস্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজিস্ট তথা ব্যাক্টিরিয়া বিষয়ক গবেষক ইন্দ্রনীল সামন্ত বলেন, ‘‘দেশের স্বাস্থ্য-নীতিতে অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার কমাতে স্বাস্থ্য, প্রাণিসম্পদ, মৎস্য, পরিবেশ-সহ সংশ্লিষ্ট সমস্ত দফতরকে এক ছাতার তলায় এসে কাজ করতে বলা হয়েছে।’’ তিনি আরও জানান, অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের পরিমাণ বেঁধে দেওয়া থাকলেও অনেক সময়েই রফতানি করা মাছের ক্ষেত্রে তা মানা হয় না। চিকিৎসার প্রয়োজন ছাড়াও প্রাণীদের শরীরে অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগ করা হয়। এর জন্য দেশ জুড়ে আরও কড়া নজরদারি প্রয়োজন।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy