—ফাইল চিত্র
যে ক্ষেত্রে বিশ্বে প্রথম ভারত, রাজ্যে চাকরি নেই সেই ক্ষেত্রেই! ফলে এ রাজ্য থেকে ডেয়ারি টেকনোলজি পাশ করা বহু তরুণ-তরুণী কর্মহীন হয়ে রয়েছেন। অথবা ভিন্ রাজ্যে চাকরির খোঁজে তাঁরা পাড়ি দিচ্ছেন।
অথচ, দুধ উৎপাদনে চিন ও আমেরিকাকে পিছনে ফেলে ভারত এখন শীর্ষে। ২০১৮-’১৯ এর তথ্য অনুযায়ী, এ দেশে দুধ উৎপাদন হয় দৈনিক মাথাপিছু ৩৯৪ গ্রাম। সেখানে এ রাজ্যে দৈনিক মাথাপিছু উৎপাদনের পরিমাণ ১৫৮ গ্রাম! মাথাপিছু এই উৎপাদনের ফারাকই বলে দেয়, ঘাটতি কত গভীরে।
দফতরের আধিকারিকদের একটি অংশ মনে করেন, এর অন্যতম কারণ প্রশাসনিক অদক্ষতা। রাজ্যের একমাত্র ডেয়ারি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে পাশ করেও এখানে কদর নেই বলে অভিযোগ। অথচ সেই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ‘পশ্চিমবঙ্গ প্রাণী ও মৎস্যবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়’-এর ডেয়ারি টেকনোলজির স্নাতক স্তরে প্রতি বছর ৪৪ জন এবং স্নাতকোত্তর স্তরে ২৪ জন করে পড়ুয়া ভর্তি হন। আধিকারিকদের মতে, ফি বছর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উত্তীর্ণ হয়েও চাকরি না পাওয়ার অন্যতম কারণ, রাজ্যে ধুঁকতে থাকা বিভিন্ন সরকারি ডেয়ারি। দীর্ঘদিন ধরে রাজ্য ডেয়ারি সার্ভিসে একাধিক পদ ফাঁকা পড়ে রয়েছে। তবুও নিয়োগ নেই। তারই একটি উদাহরণ মাদার ডেয়ারি, কলকাতা। সেখানে পদ ৯৫ (প্রায়), কর্মরত ২০ আর শূন্য পদ ৭৫!
পদ থেকেও নিয়োগ না হওয়ায় চাকরির খোঁজে ভিন্ রাজ্যে পাড়ি দিচ্ছেন ডেয়ারি টেকনোলজি পাশ করা তরুণ-তরুণীরা। পশ্চিমবঙ্গ প্রাণী ও মৎস্যবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেয়ারি টেকনোলজি উত্তীর্ণেরা বিষয়টি নিয়ে একাধিক বার প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতরের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের কাছে দরবার করেছেন। এমনকি সংশ্লিষ্ট দফতরের আধিকারিকদের কাছেও স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন। তাঁদের দাবি, দীর্ঘদিন কেটে গেলেও দফতর থেকে কোনও উত্তর আসেনি। চাকরিপ্রার্থীদের অভিযোগ, বেসরকারি ডেয়ারিগুলির ভেজাল দুধের ব্যবসা নিয়েও তাঁরা মন্ত্রীকে অভিযোগ জানিয়েছেন। কিন্তু কোনও কাজ যে হয়নি, তা বর্তমান পরিস্থিতিতেই স্পষ্ট।
প্রাণী ও মৎস্যবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেয়ারি ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অধ্যাপক প্রদীপকুমার রায় মনে করেন, পশ্চিমবঙ্গে হরিণঘাটা ডেয়ারি, মাদার ডেয়ারি কলকাতা, বর্ধমান ডেয়ারি, কৃষ্ণনগর ডেয়ারি, সেন্ট্রাল ডেয়ারি-সহ বিভিন্ন সরকারি মিল্ক ইউনিয়নগুলি কার্যত অচল। পর্যাপ্ত সংখ্যক নিয়োগ না হওয়াকেই এর কারণ বলছেন তিনি। তাঁর কথায়, “সরকারি ডেয়ারিগুলির উন্নয়নে প্রশাসনিক দৃষ্টির অভাবে রাজ্যে দুধ উৎপাদনের পরিমাণ কমছে।” সেই ফাঁকতালে বেসরকারি ডেয়ারিগুলির রমরমা বাড়ছে বলে তাঁর অভিযোগ। ফলে দুধ উৎপাদনকারীরাও সরকারি সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। প্রদীপবাবুর অভিযোগ, “বেসরকারি ডেয়ারিগুলি ভেজাল ও সিন্থেটিক দুধ মানুষের হাতে তুলে দিচ্ছে। সরকার সব জেনেও চুপ।”
যাবতীয় অভিযোগ প্রসঙ্গে দফতরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি শুধুই বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন বলে
আশ্বাস দিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy