ধুলিয়ানের গঙ্গাঘাট। —নিজস্ব চিত্র।
সড়কপথে দূরত্ব অন্তত ৩০ কিলোমিটার। শুধু বেশি দূরত্বই নয়, বহরমপুর থেকে ভাগীরথী সেতু হয়ে আসতে গেলে বিপুল যানজটে পড়ার আশঙ্কাও রয়েছে। এ সব মাথায় রেখে লালবাগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভায় পৌঁছতে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের প্রথম পছন্দ নৌকা। ইতিমধ্যে ঘাটে ঘাটে গিয়ে নৌকার আগাম বুকিংও সেরে ফেলেছেন শাসকদলের নেতারা। কিন্তু তাতেও চাহিদা মিটছে না। অনেক নেতাকেই ঘাটে গিয়ে শুনতে হচ্ছে, ‘‘এত নৌকা তো নেই বাবু!’’
সোমবার মুর্শিদাবাদের ‘নবাবি শহর’ লালবাগে মুখ্যমন্ত্রী মমতার প্রশাসনিক সভা রয়েছে। সভার প্রস্তুতি এখন তুঙ্গে। ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তা বলয়ে মুড়ে ফেলা হয়েছে লালবাগের নবাব বাহাদুর ইনস্টিটিউশনের মাঠ। দফায় দফায় সভাস্থল পরিদর্শন করছেন জেলা প্রশাসনের আধিকারিক এবং শাসকদলের সাংসদ-বিধায়কেরা। তৃণমূল সূত্রে খবর, মুখ্যমন্ত্রীর সভায় ৫০ হাজারের জমায়েতই লক্ষ্য তাদের। সেই মতো জেলার ব্লক এবং অঞ্চলের নেতাদের বিশেষ দায়িত্বও দেওয়া হয়েছে। তাঁরাই বহরমপুরের যানজট এড়িয়ে লালবাগে পৌঁছতে জলপথকে বেছে নিয়েছেন।
শাসকদল সূত্রে খবর, প্রথমত, বহরমপুর থেকে নৌকায় করে লালবাগে কম সময়ের মধ্যেই পৌঁছে যাওয়া সম্ভব। দ্বিতীয়ত, রাস্তায় যানজটের সমস্যাও সামাল দেওয়া যাবে। পাশাপাশি, নৌকায় করে সভায় গেলে অন্য রকম অনুভূতি মিলবে বলে মনে করছেন তৃণমূল নেতা-কর্মীরা। নবগ্রামের তৃণমূল বিধায়ক কানাইচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘নৌকায় করে গেলে পাঁচ কিলোমিটার। আর গাড়ি করে গেলে অন্তত ৩০। তাই কর্মীদের ইচ্ছে, তাঁরা নৌকায় লালবাগ যাবেন। সেই মতো অনেক নৌকা ভাড়া করাও হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যে।’’ বহরমপুর পশ্চিম ব্লকের তৃণমূল সভাপতি আলাউদ্দিন শেখও জানান, তিনি নিজে পাঁচটি নৌকা ভাড়া করেছেন।
তবে সর্বত্র নৌকার চাহিদা মিটছে না। কোথাও কোথাও দশ-বারোটা করে নৌকা চেয়ে বসছেন শাসক নেতারা। তার জোগান দিতে গিয়ে বিপাকে পড়তে হচ্ছে মাঝিদের। ঝাড়খণ্ডের পাকুড়ের বাসিন্দা সারোয়াল মাঝি দীর্ঘ দিন ধরে নৌকা টানেন ধুলিয়ানের ঘাটে। তিনি বলেন, ‘‘সবাই কইছে নৌকা লাগবে। সেমন মাছ হই না বলে অনেক নাও পড়ে আছে। যে কটা আছে, সি কটা আগেই বুকিং। সবাই বলছে নাও চাই, নাও চাই। লেকিন কাহাসে ওতো নাও আসবে?’’
মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূলের সাংগঠনিক সভাপতি অপূর্ব সরকার বলেন, ‘‘সব জায়গায় তো এত নৌকা পাওয়া যাচ্ছে না। নেতা-কর্মীরা আমাদের সে কথা জানিয়েছে। যথাসম্ভব চেষ্টা করছি নৌকা জোগাড়ের। দেখা যাক।’’
তবে অসময়ে নৌকার চাহিদা বাড়ায় বাড়তি রোজগারের আশায় খুশি মাঝিরা। মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জ ঘাটের মাঝি অমিয় নস্কর বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর সভার জন্য নৌকা চাইছে। অসময়ে খানিক রোজগারও হচ্ছে আমাদের। ভালই হল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy