নিয়মভঙ্গ: (বাঁ দিকে) বুজে গিয়েছে খাল। (ডান দিকে) এ ভাবেই পাঁচিল দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছে। নিজস্ব চিত্র
ই এম বাইপাস সংলগ্ন এলাকায় খাল বুজিয়ে তা বাস্তু জমি হিসেবে বিক্রি করার অভিযোগ উঠল। কলকাতা পুরসভার ৫৭ নম্বর ওয়ার্ডের পুরপিতা ও মেট্রোপলিটন সোসাইটির মদতে ওই খাল বোজানোর অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। মুখ্যমন্ত্রীর দফতর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসকের দফতরে সপ্তাহ দুয়েক আগে সেই অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পাশাপাশি কলকাতা পুরসভাতেও সেই অভিযোগ জমা দিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
অভিযোগ, এলাকার নুনের ভেড়ি ও ক্যাপ্টেন ভেড়ির জল ওই খাল দিয়ে গিয়ে বেলেঘাটা খালে পড়ত। এমনকি নিকাশি এবং বৃষ্টির জলও ওই খালের মাধ্যমেই বেলেঘাটা খালে গিয়ে পড়ত। বাসিন্দাদের অভিযোগ, বছর পাঁচ আগেই প্রায় তিন কিলোমিটার খালপথ সংস্কারের অভাবে সঙ্কীর্ণ হয়ে গিয়েছিল। পরবর্তী পর্যায়ে ওই খাল সংস্কারে নজর না দিয়ে ধীরে ধীরে এক কিমি খাল বুজিয়ে ফেলা হয়েছে। কয়েকটি জায়গায় খাল বুজিয়ে পাঁচিলও তুলে দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই খাল এখনও সাধারণের নিকাশির জন্য বলেই ভূমি আধিকারিকের দফতরে ‘রেকর্ড’ রয়েছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভূমি দফতরের ‘রেকর্ড’-এর পরচা অনুযায়ী তা খালপথ বলেই উল্লেখ করা রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, স্থানীয় কাউন্সিলর জীবন সাহা ও মেট্রোপলিটন হাউসিং কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডের সম্পাদক গোপাল সাহার মদতেই ওই খালপথ বোজানো হয়েছে। তাঁদের কথায়, বছরখানেক ধরেই খালটি বুজিয়ে ফেলা হচ্ছিল। কিছুটা বুজিয়ে ফেলার পরে সেখানে অস্থায়ী বাজার তৈরি করা হয়। কয়েক জন ব্যবসায়ী ওখানে দোকানও তৈরি করেন। কিন্তু পরে সে সব সরিয়ে দেওয়া হয়।
স্থানীয় সূত্রে খবর, বর্তমানে ওই এলাকায় জমির মূল্য কাঠা প্রতি প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই খাল বুজিয়ে জমি ছোট ছোট ‘প্লট’ করে বিক্রি করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বেশ কিছু এলাকায় ‘প্লট’ হিসেবে পাঁচিল দিয়ে ঘিরে ফেলাও হয়েছে। খাল বুজিয়ে দেওয়ায় নিকাশি বন্ধ হয়ে এলাকা বানভাসি হওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। জীবনবাবুর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি। বলেন, ‘‘এ বিষয়ে কিছুই জানি না। আমি তো জমির মালিক নই! তবে যদি খাল বুজিয়ে হয়ে থাকে, তা হলে আইনত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ গোপালবাবুকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘অভিযোগ করার অধিকার সবার আছে। কিন্তু অভিযোগের বাস্তবিকতা খতিয়ে দেখাও প্রয়োজন। আদালতেই তো অভিযোগ করা উচিত। তা হলে আইন আইনের পথে চলবে।
আমি কোনও ভাবে জড়িত নই।’’ দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও বলেন, ‘‘মহকুমাশাসক ওই অভিযোগের তদন্ত করে রিপোর্ট পেশ করবেন। তেমনই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy