Advertisement
০৮ নভেম্বর ২০২৪

‘টিকিট আবার কীসের, ব্যাজ আছে’

একুশ জুলাইয়ের সভা থেকে ফেরা উত্তরবঙ্গের কর্মী-সমর্থকদের গুঁতোগুঁতিতে শুক্রবার কার্যত ‘কুস্তির আখড়া’-এ পরিণত হল শিয়ালদহ স্টেশনের ৯বি প্ল্যাটফর্ম। শুধু উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেসই নয়, কাঞ্চনকন্যা, হাটে-বাজারে এক্সপ্রেস, দার্জিলিং মেল, পদাতিক এবং গৌড় এক্সপ্রেসেও একই ছবি।

হুড়োহুড়ি: ফেরার সময় এ ভাবেই ট্রেনে উঠেছেন যাত্রীরা। শুক্রবার শিয়ালদহে। নিজস্ব চিত্র

হুড়োহুড়ি: ফেরার সময় এ ভাবেই ট্রেনে উঠেছেন যাত্রীরা। শুক্রবার শিয়ালদহে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০১৭ ০২:০৩
Share: Save:

চিত্র ১: চোখের সামনেই বেরিয়ে গেল উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেস। ভিড়ে ঠাসা ট্রেনে উঠতে না পেরে মালবাজারের আসরাফ আলির খেদোক্তি ‘‘ভিড় হবে জানতাম। তাই বলে এমন অবস্থা হবে ভাবতে পারিনি!’’

চিত্র ২: সবে প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে বেরোচ্ছে উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেস। আচমকাই এস-৩ সংরক্ষিত কামরা থেকে পড়িমরি করে নেমে পড়লেন বছর পঁচিশের তরুণী ডি শেরপা। কী হয়েছে জানতে চাইতে বললেন, ‘‘রিজার্ভেশন থাকা সত্ত্বেও ঠিক ভাবে বসতে পারছিলাম না ট্রেনে। দমবন্ধ হয়ে আসছিল। তাই নেমে পড়লাম।’’

এমন ভাবেই একুশ জুলাইয়ের সভা থেকে ফেরা উত্তরবঙ্গের কর্মী-সমর্থকদের গুঁতোগুঁতিতে শুক্রবার কার্যত ‘কুস্তির আখড়া’-এ পরিণত হল শিয়ালদহ স্টেশনের ৯বি প্ল্যাটফর্ম। শুধু উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেসই নয়, কাঞ্চনকন্যা, হাটে-বাজারে এক্সপ্রেস, দার্জিলিং মেল, পদাতিক এবং গৌড় এক্সপ্রেসেও একই ছবি। প্রতিটি ট্রেনই কার্যত ‘আনরিজার্ভড’ হয়ে পারি দিল। যদিও বারবার প্ল্যাটফর্মে রেলের তরফে ঘোষণা হচ্ছিল, ‘‘অসংরক্ষিত টিকিট নিয়ে কে‌উ সংরক্ষিত কামরায় উঠবেন না।’’ কিন্তু কে শোনে কার কথা! ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জিন্দাবাদ’ স্লোগান রেলের ঘোষণাকে কার্যত চাপা দিয়ে দিয়েছে। বুকে সমাবেশের ব্যাজ ঝুলিয়ে তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরা উঠে প়ড়লেন প্রায় প্রতিটি ট্রেনের সংরক্ষিত কামরায়।

উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেসের এস-৭ কামরায় ছিলেন দার্জিলিঙের নিতাই মালি। ‘টিকিট আছে?’ প্রশ্ন করতেই উত্তর, ‘‘টিকিট কীসের? ব্যাজ আছে।’’ দার্জিলিঙের অন্য এক যুবকের সাফ জবাব, ‘‘রিজার্ভেশন কামরা কীসের? বাড়ি যাবই।’’ শুক্রবার বিকেল থেকে অনেক রাত পর্যন্ত এমনই পরিস্থিতি চলল শিয়ালদহ স্টেশনে।

স্টেশন চত্বরেই ক্যাম্প অফিসে রাত পর্যন্ত বসে রইলেন রাজ্যের
মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ, রবীন্দ্রনাথ ঘোষ ও সাংসদ
সুব্রত বক্সী প্রমুখ। সকলেই ‘স্বেচ্ছা সেবক’-এর ভূমিকায়। তাঁদের স্বগতোক্তি, উত্তরবঙ্গের দিকে ভিড়টা খুবই বেশি। জ্যোতিপ্রিয়বাবু বলেন, ‘‘কর্মীদের বলছি, আজ যেতে না পারলে কাল যান। রাতে মিলন মেলায় থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে।’’ উত্তরবঙ্গের নেতা মানিক দে-র ঘোষণা, ‘‘দয়া করে কেউ ট্রেনে ঝুলে ঝুলে যাবেন না। আমাদের গাড়ি করে মিলন মেলায় যান।’’ তবু অধিকাংশ কর্মী-সমর্থক ‘বাদুড় ঝোলা’ হয়েই বাড়ি ফিরলেন।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE