রাজ্যে ডেঙ্গি পরিস্থিতি ক্রমেই উদ্বেগজনক হচ্ছে। প্রতীকী ছবি।
রাজ্যে ডেঙ্গি পরিস্থিতি ক্রমেই উদ্বেগজনক হচ্ছে। শনিবার রাজ্যে এক দিনে নতুন করে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন ৬১৬ জন। যা চলতি বছরে সর্বাধিক দৈনিক সংক্রমণ। সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে বাড়ছে মশাবাহিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা। এমতাবস্থায় ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়ার চিকিৎসায় মানুষকে যাতে সাধ্যাতীত খরচ করতে না হয়, সে দিকে নজর রাখতে বেসরকারি হাসপাতালগুলির কাছে আবেদন জানাল স্বাস্থ্য দফতর। স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা এ-ও জানাচ্ছেন, পুরো অক্টোবর, অর্থাৎ পুজোর মরসুম এবং নভেম্বরের প্রথম দিক পর্যন্ত রাজ্যে মশাবাহিত রোগের প্রকোপ থাকার প্রবল আশঙ্কা রয়েছে।
এ দিন শহরের বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকে বসেন রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম ও স্বাস্থ্য-অধিকর্তা সিদ্ধার্থ নিয়োগী। সূত্রের খবর, বর্তমান পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে জানানো হয়েছে, ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়া, এই দুই নোটিফায়েড ডিজ়িজ়-এর সামগ্রিক চিকিৎসা প্রক্রিয়া সুসংহত ব্যবস্থাপনার মধ্যে করতে হবে। বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সময় থেকে চিকিৎসা পদ্ধতি-সহ সবেতেই নজর থাকবে স্বাস্থ্য ভবনের। এ বার থেকে স্বাস্থ্য দফতরের নির্দিষ্ট পোর্টালেই বাধ্যতামূলক ভাবে দৈনিক তথ্য আপলোড করতে হবে প্রতিটি বেসরকারি হাসপাতালকেও।
স্বাস্থ্য আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়ার পরীক্ষায় অনেক জায়গাতেই গড়িমসি দেখা যাচ্ছে। ওই রোগে আক্রান্ত সন্দেহ হলেই অ্যালাইজ়া পদ্ধতিতে পরীক্ষার কথা বলা হয়েছে। স্বাস্থ্যকর্তারা জানাচ্ছেন, ডেঙ্গি বা ম্যালেরিয়া পরীক্ষার খরচের উপরে এখনও বিধিনিষেধ আরোপ হয়নি। কিন্তু পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ছে বলে বেসরকারি ল্যাবরেটরিগুলি ইচ্ছা মতো খরচ নেবে, তা হবে না। সকলের সাধ্যের মধ্যে পরীক্ষার খরচ রাখতে হবে। না হলে তখন সরকার হস্তক্ষেপ করবে। স্বাস্থ্য আধিকারিকদের একাংশ জানাচ্ছেন, অতিমারির চূড়ান্ত পর্যায়ে দেখা গিয়েছিল, কোভিড-১৯ পরীক্ষার জন্য বিভিন্ন ল্যাবরেটরি নিজেদের মতো করে খরচ নিচ্ছে। তেমন যাতে না হয়, তাই আগাম সতর্কতা।
বেসরকারি হাসপাতাল সংগঠনের পূর্বাঞ্চলীয় সভাপতি তথা আমরি হাসপাতাল গোষ্ঠীর সিইও রূপক বড়ুয়া বলেন, ‘‘প্রতি সপ্তাহে একটু হলেও ডেঙ্গিতে আক্রান্ত রোগী ভর্তির সংখ্যা বাড়ছে। সাধ্যের মধ্যে খরচ রাখতে বলছে স্বাস্থ্য ভবন। আমরাও আলোচনা করব।’’
রাজ্যের প্রতিটি স্তরের সরকারি হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা যে বাড়ছে, তা উঠে এসেছে স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যানেই। সম্প্রতি ডেঙ্গি নিয়ে প্রকাশিত স্বাস্থ্য দফতরের অভ্যন্তরীণ রিপোর্টে প্রকাশ, গত এক সপ্তাহে ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র (বিপিএইচসি), গ্রামীণ, সুপারস্পেশ্যালিটি, মহকুমা, স্টেট জেনারেল, জেলা ও মেডিক্যাল কলেজ মিলিয়ে ৩৭টি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে রোগীর মোট সংখ্যা ১২৩০।
ওই সপ্তাহে মেডিক্যাল কলেজ স্তরে বেশি রোগী ভর্তি ছিলেন মুর্শিদাবাদ (৫৪), সাগর দত্ত (৩২), মেদিনীপুর (২৪), বাঁকুড়া সম্মিলনী (১৯), ডায়মন্ড হারবার (১৪), এনআরএস (১৩), এসএসকেএম এবং কল্যাণী জওহরলাল নেহরু মেমোরিয়াল হাসপাতালে (১২)। জেলা স্তরে এম আর বাঙুর ও বারাসত (৪৭ জন করে), নদিয়া (৪৩), হাওড়া (৩৮), শিলিগুড়ি (৩২), বালুরঘাট (১১) হাসপাতালে বেশি রোগী ভর্তি ছিলেন। মশাবাহিত রোগের চিকিৎসা প্রোটোকল প্রকাশ করেছিল স্বাস্থ্য দফতর। দেখা যাচ্ছে, কিছু চিকিৎসক রোগীকে প্রথমেই অ্যান্টিবায়োটিক দিচ্ছেন। জানানো হয়েছে, প্রোটোকল মেনেই চিকিৎসা করতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy