Advertisement
E-Paper

শ্রমিকদের বিমানযাত্রায় সমস্যা বাড়াচ্ছে সঙ্গে থাকা যন্ত্র 

কলকাতা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে এখন মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এই সব যন্ত্রই। কেন? বিমান পরিবহণের নিয়ম অনুযায়ী, যাত্রী যে হাতব্যাগ নিয়ে বিমানে উঠবেন, সেখানে সামান্য ব্লেডও রাখা যাবে না। স্ক্রু-ড্রাইভার, হাতুড়ি তো দূর অস্ত্।

ছবি পিটিআই।

ছবি পিটিআই।

সুনন্দ ঘোষ

শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৩:১৮
Share
Save

এই মুহূর্তে পশ্চিমবঙ্গের শ্রমিকেরা কাজের জন্য ফের ভিন্ রাজ্যমুখী হচ্ছেন। কেউ চেন্নাই, কেউ কেরল। অনেকে বেঙ্গালুরু, হায়দরাবাদ, পঞ্জাবেও যাচ্ছেন। সঙ্গে থাকছে একটি পিঠের ব্যাগ বা হাতে ঝোলানো ছোট কাপড়ের ব্যাগ। তার মধ্যে থাকছে স্ক্রু-ড্রাইভার, টেস্টার, ছেনি-হাতুড়ি সহ বিবিধ যন্ত্র। যাঁরা রাজমিস্ত্রি বা ইলেকট্রিশিয়ান অথবা নির্মাণকাজে যুক্ত, তাঁরা মূলত এই যন্ত্রগুলি সঙ্গে রাখছেন। আর কলকাতা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে এখন মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এই সব যন্ত্রই। কেন? বিমান পরিবহণের নিয়ম অনুযায়ী, যাত্রী যে হাতব্যাগ নিয়ে বিমানে উঠবেন, সেখানে সামান্য ব্লেডও রাখা যাবে না। স্ক্রু-ড্রাইভার, হাতুড়ি তো দূর অস্ত্।

বিমানবন্দরের নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে সিআইএসএফ। তাদের বলা হয় ‘অ্যান্টি-হাইজ্যাকিং ইউনিট’। বিমানে ওঠার মুখে যাত্রীদের হাতব্যাগ ও দেহ তল্লাশির প্রধান উদ্দেশ্যই হচ্ছে বিমান ছিনতাই আটকানো। যাত্রী তাঁর হাতব্যাগে এমন কিছু নিয়ে উঠতে পারবেন না যা মাঝ আকাশে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে তিনি বিমান ছিনতাই করতে পারেন। সেই কারণে ছোট ছুরি, কাঁচি সব নিষিদ্ধ। শ্রমিকদের ব্যাগ তল্লাশি করতে গিয়ে এ বার চোখ কপালে উঠছে নিরাপত্তারক্ষীদের।

বিমানবন্দরের অধিকর্তা কৌশিক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘দেখা যাচ্ছে ওই যাত্রীদের ব্যাগে রয়েছে ছেনি-হাতুড়ি, স্ক্রু-ড্রাইভার। সে সব নিয়ে তো বিমানে উঠতে দেওয়া যাবে না। এর ফলে প্রত্যেক শ্রমিককে আবার ফেরত আনতে হচ্ছে চেক-ইন কাউন্টারে। তাঁদের ব্যাগ পাঠাতে হচ্ছে বিমানের পেটে। এর ফলে অনেক শ্রমিক যথেষ্ট সময় হাতে নিয়ে বিমানবন্দরে ঢুকেও উড়ান ধরতে পারছেন না।’’ এমনিতেই এই শ্রমিকদের বেশির ভাগ প্রথম বিমানে চাপছেন। বিমানবন্দরে ঢোকার সময়ে অনেকের মুখেই থাকছে না মাস্ক। ওয়েব চেক-ইন করে বোর্ডিং কার্ড আনার ব্যাপারেও তাঁরা সড়গড় নন। বহু শ্রমিক কাগজের টিকিট নিয়ে চলে আসছেন।

তাঁদের সঙ্গে থাকা ছোট পিঠের ব্যাগ দেখে উড়ান সংস্থার কর্মীদের মনে হচ্ছিল, সেটি কেবিন লাগেজ হিসেবেই চলে যেতে পারবে। এতে একাধিক সুবিধা হবে। প্রথমত, ব্যাগটি যাত্রীর সঙ্গেই থাকবে। বিমানের পেটের ভিতরে সেই ব্যাগ দিলে গন্তব্যে পৌঁছে আবার কনভেয়ার বেল্টের সামনে অপেক্ষা করতে হবে। প্রথম বারের এই যাত্রীদের পক্ষে গন্তব্যে পৌঁছে নির্দিষ্ট কনভেয়ার বেল্ট খুঁজে পাওয়াটা সমস্যার হতে পারে। আবার কলকাতায় চেক-ইন লাগেজ হিসেবে নিলে সেই ব্যাগে আলাদা ট্যাগ লাগাতে হবে। সেটি দিতে হবে যাত্রীকে। সব মিলিয়ে বিস্তর ঝামেলা।

ফলে ছোট ব্যাগ নিয়ে যাত্রী বিমানে উঠে গেলে সব দিক থেকেই সুবিধা। কিন্তু ইদানীং সমস্যার কেন্দ্রে সেই ব্যাগই। বিমানবন্দরের কর্তাদের বক্তব্য, অনেক ক্ষেত্রে ব্যাগ হাতছাড়া করতে চাইছেন না শ্রমিকেরা। তাঁদের আশঙ্কা, এক বার ব্যাগ হাতছাড়া হয়ে গেলে যদি সেটি ফেরত না-পান, তা হলে কাজ করতে সমস্যা হবে।

শ্রমিকদের দাবি, যে যন্ত্রটি তাঁরা ব্যবহার করেন, সেটি ছাড়া তাঁদের কাজের মান ভাল হবে না। সব সময়েই তাঁরা কাজের জায়গায় ওই যন্ত্রপাতি নিয়ে যান। নিজের সরঞ্জাম অন্যকে ব্যবহার করতে দেন না। অন্যের সরঞ্জামও নিজেরা ব্যবহার করেন না। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, ওই শ্রমিকদের বহু বার বুঝিয়ে তবে সমস্যা মিটছে।

Device Flight Workers

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}