ধর্মঘটী ট্যাক্সিমালিক ও চালকদের চাপে শেষপর্যন্ত ওলা, উবেরের মতো লাক্সারি ট্যাক্সিকে বিধিনিষেধের বেড়াজালে বাঁধার বিজ্ঞপ্তি বের করতে চলেছে রাজ্য সরকার। পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, আগামী সোমবার এই সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত করা হবে। তবে তা সত্ত্বেও এখনই সরকারের প্রতি নরম মনোভাব নিচ্ছে না ধর্মঘটী ট্যাক্সিমালিক এবং চালক সংগঠনগুলি। তাদের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হল, দু’সপ্তাহ তারা সরকারের পদক্ষেপের জন্য অপেক্ষা করবে। তার মধ্যে ব্যবস্থা না নিলে ফের ধর্মঘটের পথে হাঁটবে তারা।
সরকারের পক্ষ থেকে অবশ্য পাল্টা দাবি, ধর্মঘটী সংগঠনগুলির বেশির ভাগ দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে। তা সত্ত্বেও অযথা অনড় মনোভাব নিচ্ছে ট্যাক্সি সংগঠনগুলি। পরিবহণ দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘ট্যাক্সিমালিক ও চালকদের দাবি ছিল, তাঁরা অসম প্রতিযোগিতার সামনে পড়ছেন। সে কারণে তাঁদের দাবি মেনে ওলা-উবেরের জন্য নির্দিষ্ট বিধি তৈরি করা হয়েছে। কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় ট্যাক্সির জন্য পার্কিং স্পট-ও নির্দিষ্ট করা হচ্ছে। এর পরে ফের ধর্মঘটের হুমকি দেওয়ার কোনও অর্থই হয় না।’’ তবে ট্যাক্সিমালিকদের ওয়েটিং চার্জ বাড়ানোর দাবি কোনও অবস্থাতেই মেনে নেওয়া সম্ভব নয় বলে পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর। তাঁদের বক্তব্য, ‘‘গত কয়েক মাসে পেট্রোলের দাম অনেকটাই কমেছে। এখন ভাড়াবৃদ্ধি সম্ভব নয়।’’
এখন ওলা, উবেরে মতে সংস্থাগুলির জন্য কী বিধি আরোপ করছে সরকার?
পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, সোমবার পরিবহণ দফতর লাক্সারি ট্যাক্সি সংস্থাগুলির জন্য যে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে চলেছে, সেই অনুযায়ী ওলা-উবেরের মতো প্রতিটি সংস্থাকে সরকারের কাছ থেকে লাইসেন্স নিতে হবে। এখানে একটি অফিস এবং ২৪X৭ কন্ট্রোল রুম তৈরি করতে হবে। এ ছাড়া, সংস্থা অনুযায়ী নির্দিষ্ট পোশাক ও গাড়িতে লোগো থাকতে হবে। গাড়িতে জিপিএস পরিষেবা, ‘ফিজিক্যাল প্যানিক বাটন’ এবং সিসি ক্যামেরার নজরদারি রাখতে হবে। যদিও প্রশ্ন উঠেছে, হলুদ বা নীল-সাদা ট্যাক্সির জন্য না থাকলেও কেন শুধুমাত্র ওলা-উবেরের জন্য বিধিনিষেধ থাকছে।
তবে ধর্মঘটী সংগঠনগুলি এর পরেও খুশি নয়। সংগঠনগুলি জানাচ্ছে, দু’সপ্তাহ সরকারের পদক্ষেপ দেখার পরে ফের ধর্মঘটের ডাক দেবে তারা।’’ ধর্মঘটের জেরে নিত্যযাত্রীদের দুর্ভোগ নিয়ে অবশ্য নিরুত্তর ধর্মঘটী সংগঠনগুলি।
অবশ্য ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিনে নিত্যযাত্রীদের দুর্ভোগ কিছুটা কমল। হাওড়া, শিয়ালদহ স্টেশন এবং কলকাতা বিমানবন্দরে বৃহস্পতিবারের তুলনায় শুক্রবারে ট্যাক্সি ছিল বেশি। বিমানবন্দরে সাধারণ দিনে প্রায় ১৬০০ ট্যাক্সি যাতায়াত করে। এ দিন প্রায় ৪০০ থেকে ৪৫০ ট্যাক্সি যাতায়াত করেছে। আগের দিনের মতো এ দিনও ভলভো বাসের সংখ্যা ছিল বেশি। পাশাপাশি ওলা-উবের, সাদা লাক্সারি গাড়ি, ভাড়ার গাড়ি অন্য সাধারণ দিনের মতোই মিলেছে। একই চিত্র ছিল শিয়ালদহ ও হাওড়া স্টেশনেও। এ দিন দিনভরই ওই সব চত্বরে ট্যাক্সি মিলেছে। তবে অনেক ক্ষেত্রেই ঝোপ বুঝে বিপুল ভাড়া হেঁকেছেন ট্যাক্সি চালকেরা। অন্য উপায় না থাকায় বেশি ভাড়া দিয়েই গন্তব্যে যেতে হয়েছে যাত্রীদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy