রাসায়নিকের গুদামে আগুন। তারাতলায়, বুধবার।- নিজস্ব চিত্র।
গুদামে রাখার কথা চা-পাতা। ছিল এমনই রাসায়নিক, যাতে দমকল জল দিতেই একের পর এক বিস্ফোরণ। প্রথমে বুঝতে না পেরে পিছিয়ে আসেন দমকলকর্মীরা। পরে বিষয়টি বুঝে বাইরের দেওয়ালে জল ঢালতে শুরু করেন তাঁরা।
কিন্তু যেটুকু জল গিয়েছিল, তাতেই বিস্ফোরণ হতে শুরু করে গুদামে। তার জেরে এত বেশি আগুন জ্বলে ওঠে যে, পিছিয়ে আসেন দমকলকর্মীরা। তার পরে তাঁরা ঠিক করেন, গুদামে মজুত রাসায়নিক আগে পুড়ে শেষ হয়ে যাক। তার পরে ভিতরে ঢুকবেন। তত ক্ষণ ধরে জল দিয়ে গুদামের দেওয়াল ঠান্ডা রাখার চেষ্টা হয়। বেলা তিনটের মধ্যে বেশির ভাগ রাসায়নিকই পুড়ে যায়। তার পরে তাঁরা মুখোশ ও অক্সিজেনের সিলিন্ডার নিয়ে ভিতরে ঢোকেন। ছড়ানো হয় ফোম ও বালি।
দমকল ও পুলিশ জানায়, অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট ও অ্যালুমিনিয়াম চূর্ণ মজুত ছিল গুদামে। এই দুই রাসায়নিকই বিস্ফোরক তৈরিতে কাজে লাগে। পুলিশকর্তারা জানান, বন্দরের নথিতে ওটি চা পাতার গুদাম হিসেবে চিহ্নিত। সেখানে চায়ের বদলে কী করে রাসায়নিক মজুত হল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কলকাতার মেয়র তথা দমকলমন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায় এ দিন বলেন, ‘‘পুলিশকে বলেছি, প্রয়োজনে এফআইআর করে তদন্ত করতে।’’
এ দিন ট্রান্সপোর্ট ডিপো রোডের ওই গুদামে আগুন নেভাতে গিয়ে দমকলকে বেগ পেতে হয়েছে আরও একটি কারণে। খানাখন্দে ভরা রাস্তা। তাতে কোমর জল। তাই হাইড রোডের মোড় থেকে গুদাম পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তা পেরিয়ে আসতে দমকলের গাড়িচালকদের সময় লেগেছে অনেকটাই। তবে, এ দিন রাস্তায় জমা জলও কাজে লেগেছে দমকলের। গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে ওই এলাকায় এখন হাঁটু জল। ফলে দমকলের জল শেষ হয়ে যাওয়ার পরে রাস্তার জল টেনে নিয়েই জল ঢালা হয়েছে গুদামে।
গামবুটে জল ঢুকে যাওয়ায় ঠিক ভাবে কাজ করতে পারছিলেন না বেশ কয়েক জন দমকলকর্মী। তাঁদেরই এক জন বলেন, ‘‘অনেক খারাপ পরিস্থিতিতে কাজ করেছি। সরু গলিতে ঢুকতে না পারা এক রকম। কিন্তু, এত চওড়া রাস্তা থাকা সত্ত্বেও দমকলের গাড়ি নৌকার মতো দুলে দুলে যাচ্ছে, এমন দেখিনি!’’ পুলিশ জানায়, রাস্তার এমনই অবস্থা যে, হাইড রোড দিয়ে পৌঁছতেই অনেক সময় লেগে যায়। আগুন নেভানোর জন্য ওই রাস্তা বন্ধ করতে হয়েছিল বলে আশপাশের রাস্তায় বেশ কিছুক্ষণ যানজটও হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy