প্রতীকী ছবি।
লোকসভা নির্বাচনের আচরণবিধির গেরোয় আটকে মাথায় হাত বিয়ে ঠিক হওয়া মেয়েদের বাবা-মায়ের। এঁদের কেউ রাজ্য সরকারের ‘রূপশ্রী’ প্রকল্পের জন্য ইতিমধ্যেই আবেদন জানিয়েছেন। কারও বা আগামী কয়েক দিনের মধ্যে দরখাস্ত দেওয়ার কথা ছিল। এখন লোকসভা ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা হওয়ায় আগামী মে মাসের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত নির্বাচনের আচরণবিধি বহাল থাকছে। তাতে বলা হয়েছে, সরাসরি ভোটারের হাতে কোনও অর্থ দেওয়া যাবে না। যার ফলে দক্ষিণ কলকাতার রিনা সাউ বা খিদিরপুরের শামিমার বিয়ে নিয়ে চিন্তায় তাঁদের পরিবার। রূপশ্রী প্রকল্পে সরকারের কাছ থেকে ২৫ হাজার টাকা মিলবে মেয়ের বিয়ে উপলক্ষে। সেই আর্থিক সাহায্যের ভরসায় মেয়ের বিয়ে ঠিক করে কলকাতা পুরসভায় তাঁরা আগেভাগে আবেদনও জানিয়েছিলেন। কিন্তু নির্বাচনী বিধি চালু হওয়ায় টাকা পাওয়া নিয়ে এখন চিন্তায় তাঁদের অনেকেই।
কয়েক দিনের মধ্যেই বিয়ে হবে, এমন ৬৮ জন পাত্রীর পরিবার আবেদন জানিয়েছিল পুর প্রশাসনের কাছে। এর মধ্যে অনেকের বিয়ে এ মাসের শেষের দিকে। ওই ৬৮ জনের জন্য ১৭ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করে রাজ্যের সমাজকল্যাণ দফতর। কিন্তু বিয়ের জন্য তা প্রাপকদের হাতে পৌঁছে দেওয়ার আগেই ভোটের আচরণবিধি চালু হয়ে যায়। মঙ্গলবার কলকাতা পুর প্রশাসন জানিয়ে দিয়েছে, নির্বাচনের দিন ঘোষণার আগেই যে হেতু আবেদন জানানো হয়েছে, তাই তাঁদের টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
কিন্তু ভোটের দিন ঘোষণার পরেও রাজ্য জুড়ে আরও অনেকের আবেদন জমা পড়েছে। টাকা পাবেন ভেবে বিয়ের দিনক্ষণও স্থির করে ফেলেছেন তাঁরা। তাঁদের কী হবে? রাজ্য সরকারের নারী, শিশু এবং সমাজকল্যাণ দফতরের হিসেব অনুযায়ী, প্রতি মাসে প্রায় ২০ হাজার দরখাস্ত পড়ে রূপশ্রী প্রকল্পের সুবিধা পেতে। চৈত্র, বৈশাখ ও জ্যৈষ্ঠ মাস ভরে বিয়ে হয়। তাই চিন্তা বাড়ছে রূপশ্রী প্রকল্পের আশায় বিয়ের দিন ঠিক করা পরিবারগুলির। এ ব্যাপারে রাজ্যের ওই দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘এই প্রকল্পের টাকা বিয়ের দিন কয়েক আগে দেওয়া হয়। অনেক আগে বা পরে দেওয়া হয় না, যাতে দরিদ্র, নিম্নবিত্ত বাবা-মা টাকাটা বিয়ের কাজে লাগাতে পারেন। অন্য ভাবে খরচ না হয়।’’ এখন ভোটের বিধিতে তা আটকে গেলে সমস্যায় পড়বে বিয়ে ঠিক হওয়া মেয়েদের পরিবার।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
আবার নির্বাচনী বিধিতে লেখা রয়েছে, ‘প্রসেসিং অব বেনিফিসিয়ারি ওরিয়েন্টেড স্কিমস, ইভন ইফ অনগোয়িং, শুড বি স্টপ্ড টিল দ্য কমপ্লিশন অব ইলেকশন’। তাই ওই প্রকল্পের আবেদনকারীদের নিয়ে সমস্যায় প্রশাসনও। সমাধান কী জানতে চাওয়া হলে বিভাগীয় মন্ত্রী শশী পাঁজা বলেন, ‘‘এটা তো একটা সামাজিক অনুষ্ঠান। অনেক কথাবার্তার পরে একটা বিয়ের ঠিক হয়। হঠাৎ করে তো আর বলা যায় না, বিয়ে পিছিয়ে দিন বা প্রকল্পের টাকা বিয়ের পরে দেওয়া হবে। আবার নির্বাচনী বিধিও আছে।’’ তাঁর মতে, ‘‘আচরণবিধির ঊর্ধ্বে গিয়ে মানবিকতার খাতিরে কিছু করা গেলে ওঁদের স্বস্তি হতে পারে।’’
বিষয়টি নিয়ে রাজ্যের অতিরিক্ত মুখ্য নির্বাচনী অফিসার সঞ্জয় বসু বলেন, ‘‘এ সব বিষয় নিয়ে রাজ্যের মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে একটা স্ক্রিনিং কমিটি রয়েছে। তাঁরা সিদ্ধান্ত নিয়ে নির্বাচন কমিশনকে জানালে সেই মতো সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy