Advertisement
E-Paper

Amartya Sen:‘অমর্ত্য এমন মন্তব্য করলে রাজনীতিকদের কী বলব’? নোবেলজয়ীর শব্দচয়নে হতাশ মনোবিদরা

অমর্ত্য সেনের মন্তব্যে শুরু হয়েছে নতুন বিতর্ক। মনোবিদরা বলছেন, ‘স্কিৎজোফ্রেনিয়া’ শব্দটির ব্যবহার করে ঠিক করেননি নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ।

গ্রাফিক: সন্দীপন রুইদাস

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০২১ ১৪:৩৩
Share
Save

কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন ব্যবহার করেছেন, ‘স্কিৎজোফ্রেনিয়া’ শব্দটি। তাঁর এই শব্দচয়ন নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। শহরের মনোবিদদের একাংশ মনে করছেন, অমর্ত্যর বক্তব্য মানসিক স্বাস্থ্যের সমস্যায় ভুগছেন এমন মানুষদের আঘাত করতে পারে। এই মানসিক স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে কেউ কেউ অমর্ত্যের কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি শ্লেষকে সমর্থন করলেও সমর্থন করছেন না এই শব্দের ব্যবহারটি।

মনোবিদ অনুত্তমা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘আমরা যখন এই কথা বলি, তখন আদতে ওই মানুষটিকে বা প্রতিষ্ঠানটির সমালোচনা করা হয় না। কারণ, রোগ তো কেউ ইচ্ছাকৃত ভাবে বাধায় না। এই শব্দটা বলে আমরা কোথাও যেন তাঁর অন্যায়টাকে লঘু করে দিচ্ছি একটা রোগের আড়াল দিয়ে। এই কথায় মানসিক রোগাক্রান্তদের অনেক বেশি অপমান করা হচ্ছে। এ ছাড়া বিরাট একটা তাত্ত্বিক ভুলের জায়গাও রয়েছে। অলীক কল্পনা মানেই ‘স্কিৎজোফ্রেনিয়া’ নয়, ‘স্কিৎজোফ্রেনিয়া’ মানেই স্বল্প বুদ্ধি নয়।’’

কেন্দ্রীয় সরকার করোনা সংক্রমণ আটকাতে ব্যর্থ। সেই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে রাষ্ট্রীয় সেবাদলের একটি অনুষ্ঠানে ‘স্কিৎজোফ্রেনিয়া’ শব্দটি ব্যবহার করেন অমর্ত্য। একই সঙ্গে কম বুদ্ধির লক্ষণ রয়েছে কেন্দ্রের, এই কথাও বলেন। অমর্ত্য সেন এই শব্দ ব্যবহার করায় অবাক মনোবিদ সমাজকর্মী রত্নাবলী রায়। আনন্দবাজার ডিজিটালকে তিনি বলেন, ‘‘আমি আশাহত। অমর্ত্য সেনের তো শব্দের কমতি নেই। কেন্দ্রীয় নীতির সমালোচনা করা প্রয়োজন। কিন্তু সেই সমালোচনা করতে গিয়ে মানসিক রোগের লব্জ কেন বারবার আনতে হয়? ওঁর মতো বিদ্বান পণ্ডিত যদি এই শব্দটি ব্যবহার করেন তা হলে তো আমরা রাজনীতিবিদদের কিছু বলতেই পারব না। ‘কম বুদ্ধি’ শব্দগুচ্ছটিও ব্যবহার করা হয়েছে। এতে সরকারকে আক্রমণ করতে গিয়ে মানসিক রোগে আক্রান্তদেরই আক্রমণ করা হচ্ছে।’’

রোজকার জীবনেও এই ধরনের শব্দ অজান্তেই অনেকে ব্যবহার করে থাকেন। সমাজকর্মী দোলন গঙ্গোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘কোনও নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দিতে হলে, আমরা অনেক সময় মানসিক রোগীদের কথা টেনে আনি। আমরা বলি, ‘পাগল নাকি!’ এই অভ্যাসের প্রতিবাদ করছি আমি। সামাজিক ভাবে মানসিক রোগীদের নেতিবাচক ভাবে দেখা এবং কেউ সমাজবিরোধী কাজ করলে তার সঙ্গে মানসিক রোগীদের যোগাযোগ করিয়ে দেওয়ার যে অভ্যাস আমাদের আছে, তার প্রতিবাদ করছি।’’ তবে অমর্ত্য কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনায় যা বলেছেন তার সমর্থন করছেন দোলন। বলছেন, ‘‘পাশাপাশি অমর্ত্য সেন কেন্দ্রীয় সরকার সম্পর্কে যা বলেছেন, তার সঙ্গে আমি ১০০ শতাংশেরও বেশি একমত।’’

তবে কমবেশি সকলেই মনে করছেন, অমর্ত্য এই শব্দ ব্যবহার করে মানসিক রোগীদের অপমান করেছেন। মনোবিদ সাহেলী গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছেন, তাঁর আপত্তিও এই ‘স্কিৎজোফ্রেনিয়া’ শব্দটি ব্যবহার করা নিয়ে। তিনি বলেছেন, ‘‘স্কিৎজোফ্রেনিয়া শব্দটি ব্যবহার করা হলে, যাঁরা মানসিক স্বাস্থ্যের সমস্যায় জর্জরিত, তাঁদের প্রত্যেককে অপমান করা হয়। এটি ‘স্টিগমাটাইজেশন’-কে আরও ইন্ধন দেয়। আর অমর্ত্য সেন বলেছেন বলে আলাদা কথা নয়, আমার পাড়ার লোক বললেও যে ভাবে আমি প্রতিবাদ করতাম, এ ক্ষেত্রেও তাই করব। মানসিক স্বাস্থ্যজনিত শব্দের ব্যবহার অত্যন্ত সচেতনতার সঙ্গে করা উচিত।’’

Amartya Sen

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}