থমকে: টোল ট্যাক্স নিয়ে গোলমালের জেরে যানজট। শনিবার, বিদ্যাসাগর সেতুতে। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার ফাইল চিত্র।
ফাস্টট্যাগ চালু না করেই অতিরিক্ত টোল ট্যাক্স নেওয়া নিয়ে উত্তেজনা ছড়াল বিদ্যাসাগর সেতুর টোলপ্লাজ়ায়। শনিবার সকাল ৯টা থেকে টোলপ্লাজ়ার সামনে এ নিয়ে বিক্ষোভ দেখালেন গাড়ি-লরির চালক ও মালিকেরা। তাঁদের ক্ষোভের সামনে পড়েন টোলকর্মীরা। বিক্ষোভ এবং অবরোধের জেরে সেতুর দু’পাশে তীব্র যানজট তৈরি হয়। পরে শিবপুর থানা থেকে বিশাল পুলিশবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
গাড়ির চালক ও মালিকদের অভিযোগ, এক দিকে তাঁদের কাছ থেকে টোল বাবদ নগদ টাকা নেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি আবার ফাস্টট্যাগের টাকাও কেটে নেওয়া হচ্ছে। গত ৪ মে থেকে এমন শুরু হয়েছে বলে দাবি। হুগলি রিভার ব্রিজ কমিশনার্স (এইচআরবিসি) নিযুক্ত ঠিকাদারি সংস্থা অবশ্য পরে এই ভুলের কথা স্বীকার করে নেয়।
রাজ্যের অন্যান্য টোলপ্লাজ়ার মতো বিদ্যাসাগর সেতুতেও ফাস্টট্যাগ চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে এইচআরবিসি। এর জন্য একটি ঠিকাদার সংস্থাকে তারা দায়িত্বও দিয়েছে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে সরকারি ভাবে এই ফাস্টট্যাগ ব্যবস্থা চালু হওয়ার কথা। অথচ, গত কয়েক দিন ধরে দেখা যাচ্ছিল, টোল কাউন্টার থেকে নগদে টোল ট্যাক্স নেওয়ার পাশাপাশি ফাস্টট্যাগ থেকেও টাকা কেটে নেওয়া হচ্ছে। যার মেসেজ চালকদের মোবাইলে আসতে শুরু করে। এ দিন সকালেও একই ঘটনা ঘটতে থাকায় ক্ষুব্ধ হন টোলপ্লাজ়ায় আসা গাড়ির মালিক ও চালকেরা। টোলকর্মীদের সঙ্গে তর্কাতর্কি থেকে হাতাহাতি শুরু হয়ে যায়।
বিক্ষোভে শামিল অমিতকুমার সামন্ত নামে এক গাড়ির মালিক বলেন, ‘‘কোনও নোটিস না দিয়েই ফাস্টট্যাগের মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যাঙ্কিং পদ্ধতিতে টোল ট্যাক্স কেটে নেওয়া হচ্ছে। আবার টোলপ্লাজ়ায় গাড়ি দাঁড় করিয়েও টাকা নিচ্ছেন টোলকর্মীরা। এটা কী ভাবে সম্ভব?’’
পেশায় ইঞ্জিনিয়ার অমিতবাবু দাবি করেন, দু’দিন আগে বিষয়টি তাঁর নজরে আসতেই তিনি এইচআরবিসি-কে অভিযোগ জানিয়ে একটি মেল করেন। তাতেও কাজ না হওয়ায় নবান্নের সামনের বাসিন্দা অমিতবাবু এ দিন টোলপ্লাজ়ার বিক্ষোভে শামিল হন। তাঁর প্রশ্ন, এক বার যাতায়াত করলে কেন এ ভাবে দু’বার টাকা নেওয়া হবে?
এ দিন একই অভিযোগ করেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত পণ্যবাহী গাড়ির চালকেরাও। একটি পণ্যবাহী গাড়ির চালক সনাতন দলুইয়ের অভিযোগ, সেতুতে এক বার টোলপ্লাজ়া পার হওয়ার জন্য ফাস্টট্যাগে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে ২২০ টাকা দিতে হচ্ছে, আবার টোলের কর্মীরাও তাঁদের গাড়ি আটকে ২২০ টাকা নিচ্ছেন। এটা পুরোপুরি বেআইনি। ব্যক্তিগত গাড়িগুলির কাছ থেকেও এ ভাবে দু’বার টাকা নেওয়া হয়েছে।
এ দিন পুলিশ ও দ্বিতীয় হুগলি সেতুর টোলপ্লাজ়ার দায়িত্বে থাকা এইচআরবিসি-র ঠিকাদার সংস্থা সমস্যার কথা স্বীকার করে নেয়। পরে পুলিশের মধ্যস্থতায় যাঁদের কাছ থেকে দু’বার টাকা নেওয়া হয়েছে, সেই সমস্ত গাড়ির মালিক ও চালকদের টোলপ্লাজ়া থেকেই নগদ টাকা ফেরত দিয়ে দেওয়া হয়।
টোলপ্লাজ়ায় ট্যাক্স তোলার দায়িত্বে থাকা একটি বেসরকারি সংস্থার ম্যানেজার সঞ্জয় সিংহ বলেন, ‘‘দ্বিতীয় হুগলি সেতুতে ফাস্টট্যাগ চালু হওয়ার বিষয়টি এখনও চূড়ান্ত হয়নি। কিন্তু এর মধ্যেই একটি বেসরকারি ব্যাঙ্ক সেতুর ফাস্টট্যাগের টাকা ইন্টারনেট ব্যাঙ্কিংয়ের মাধ্যমে কাটতে শুরু করে দিয়েছে। যার ফলে এই সমস্যা হয়েছে। বিষয়টি ওই বেসরকারি ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ ও এইচআরবিসি-কে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে।’’ তিনি জানান, আপাতত দ্বিতীয় হুগলি সেতুতে ফাস্টট্যাগ চালু হচ্ছে না। নগদেই টোল নেওয়া হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy