মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পোস্টার। ছবি: রয়টার্স।
এ যেন দুর্গাপুজোর বিসর্জনের সময়ের ছবি। একের পর এক কাঠামো ফেলা হচ্ছে গঙ্গায়। আবার সেই কাঠামোই জল থেকে তুলে নিয়ে আসা হচ্ছে পরবর্তী পুজোর প্রতিমা তৈরির জন্য।
লোকসভা নির্বাচনের সময়ে এমনই ছবি ধরা পড়েছে ফ্লেক্স ব্যবসাতেও। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ফ্লেক্সের কাঠামোর পুনর্ব্যবহার করা হচ্ছে। বিষয়টি পরিবেশগত ভাবে ইতিবাচক বলেই মনে করছেন পরিবেশকর্মীরা। তাঁদের ব্যাখ্যা, এর ফলে গাছের উপরে ‘কোপ’ কম পড়বে। তবে ফ্লেক্স এবং কাট-আউট তৈরির জায়গা উত্তর কলকাতার রমেশ দত্ত রোডের ব্যবসায়ীদের বক্তব্য, ‘‘ভোটের বাজারে নির্বাচন কমিশনের পরিবেশ বিধি মেনে চলার ফরমানের জেরে আলাদা করে কোনও রাজনৈতিক দলের জন্য ফ্রেক্স কিংবা হোর্ডিং তৈরির প্রয়োজন হচ্ছে না। ফ্লেক্স ও হোর্ডিংয়ের চাহিদা কম থাকায় যখন যে কাঠামো খালি পাওয়া যাচ্ছে তা দিয়েই কোনও না কোনও দলের কাজ করা হচ্ছে।’’
রমেশ দত্ত রোডে খোঁজ নিয়ে দেখা গেল প্রয়োজনের তুলনায় বেশি আয়োজন সেখানে। ফ্লেক্স কিংবা হোর্ডিং তৈরির ছোট-বড় বিভিন্ন আকৃতির কাঠ কিংবা লোহার ফ্রেম রাস্তার ধারে ডাঁই করে রাখা রয়েছে। ব্যবসায়ীরা জানান, চাহিদা কম থাকায় এ বার নতুন করে ফ্লেক্স কিংবা হোর্ডিংয়ের ফ্রেম অন্যান্য বারের তুলনায় কম তৈরি হয়েছে। আগের নির্বাচনগুলিতে ব্যবহৃত ফ্রেম দিয়েই এ বার কাজ চালানো হচ্ছে। এক ব্যবসায়ীর রসিকতা, ‘‘কোনও ছুতমার্গ নেই। গত বারে যেখানে তৃণমূল ছিল এ বার সেখানে সিপিএম। গত বার যেখানে যেটির উপরে বিজেপি ছিল এ বার সেই ফ্রেমে কংগ্রেস রয়েছে।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
মিঠুন ঘাটি নামে এক কারিগর জানান, যে কোনও অনুষ্ঠানে অর্ডার পাওয়ার পরেই ওই সব ফ্লেক্স কোথায় লাগানো হচ্ছে তা খেয়াল রাখা হয়। অনুষ্ঠান বা রাজনৈতিক কর্মসূচি শেষে সেই সব ফ্লেক্স কিংবা হোর্ডিং আবর্জনায় ফেলে দেওয়ার আগেই সেগুলি যতটা সম্ভব সংগ্রহ করে নেওয়া হয়। মিঠুন বলেন, ‘‘ওই সব কাঠামো দিয়েই এ বারে ভোটের কাজ হচ্ছে।’’ ফ্লেক্স তৈরির কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে পুরনো লোহার ফ্রেমও। তাঁরা জানান, কাঠের ফ্রেম নতুন করে তৈরি ব্যয়সাপেক্ষ। ফলে সেগুলি যতটা সম্ভব বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা হয়।
পুরনো কাঠের ফ্লেক্স কাঠামো পুনর্ব্যবহারকে স্বাগত জানিয়েছেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত বলেন,‘‘ব্যবসায়িক দিক দিয়ে বিচার করলে অবশ্যই পুনর্ব্যবহার বিষয়টি লাভজনক। তা ছাড়া নতুন করে
কাঠের কাঠামো তৈরি করতে গেলে গাছ কাটা প্রয়োজন। সে দিক থেকে দেখলে কাঠামোর পুনর্ব্যবহার পরিবেশবান্ধব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy